ঢাকা,মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪

অবশেষে কোর্টবাজার তরকারী মার্কেট গুড়িয়ে দিয়ে দখলে নিয়েছে প্রভাবশালীরা ঃ ব্যবসায়ীদের মানবন্ধন

Pic Ukhiya 03-07-2017স্টাফ রির্পোটার, উখিয়া ॥

উখিয়ার কোর্টবাজার কাঁচা তরকারী বাজার প্রশাসনের সহযোগীতায় দখল করে নিয়েছে একটি প্রভাবশালী মহল। গতকাল সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এক টানা ৫ ঘন্টা অভিযান চালিয়েছে প্রশাসন কাঁচা তরকারী শেডটি উচ্ছেদ করে দেয়। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ প্রশাসনের সহযোগিতায় প্রভাবশালী মহল উচ্ছেদের নামে ৩০টি দোকান গুড়িয়ে দিয়ে ব্যাপক লুটপাট ও ভাংচুর করে। এদিকে বহিরাগত সন্ত্রাসী দিয়ে দোকান ভাংচুর, লুটপাট ও দখলের প্রতিবাদে তাৎক্ষনিক মানববন্ধন করে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।

একই দিন দুপুর ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত কোটবাজার ষ্টেশনচত্তরে শত শত ব্যবসায়ীরা সড়কে দাড়িয়ে মানববন্ধন করে। এসময় উখিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা, এসি ল্যান্ড, ওসি, হলদিয়া পালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, জালিয়া পালং ইউপি চেয়ারম্যান ও রতœাপালং ইউনিয়ের চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় নিরহ ব্যবসায়ীদের দোকান পাট ভাংচুর ও উচ্ছেদ করায় তীব্র নিন্দা জানানো হয়। পরে অন্যায় ভাবে কাঁচা তরকারী বাজার শেডটি গুড়িয়ে দিয়ে উচ্ছেদ করার প্রতিবাদে অর্নিদিষ্টকালের জন্য মাছ ও কাঁচা বাজার বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে কোটবাজার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যরা।

কোটবাজার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতি লিমিটেড সভাপতি মোহাম্মদ শাহজাহান ও সাধারণ সম্পাদক হারুন-অর-রশিদ মানববন্ধনোত্তর সভায় বলেন, কাঁচা বাজারের শেডটি ইউএনও, এসি ল্যান্ড, ওসি, হলদিয়া, জালিয়া ও রতœাপালং এর চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে শতাধিক ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী দখল করে জৈনক ফরিদ আলম কে বূঝিয়ে দেওয়ার কারনে ২ শতাধিক পরিবার মানবেতর জীবনযাপন সহ লক্ষ লক্ষ টাকা আর্থিক ক্ষতিগ্রস্থ হবে।

স্থানীয় নাগরিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ১৪/১৫ বছর ধরে কোটবাজার স্টেশনের দক্ষিণ পার্শ্বে কাঁচা বাজারটি পরিচালিত হয়ে আসছে। আনুমানিক শতাধিক দোকানে প্রতিদিন কাঁচা তরিতরকারী ক্রয় বিক্রি করে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা জীবিকা নির্বাহ করছে। অনেক ব্যবসায়ীরা জানান, সরকারী ইজারাদার কে সরকারী নিয়ম মোতাবেক টোল আদায় করে বৈধ ভাবে কাঁচা তরিতরকারী ক্রয় বিক্রি করে আসছিল।

কোটবাজার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লি: সদস্যরা অভিযোগ করে বলেন, ক্ষমতাধর ব্যক্তিরা কাঁচা বাজারের জায়গাটি গ্রাস করার জন্য প্রশাসনকে ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে উচ্ছেদের পায়তারা করে আসছিল। তার ধারাহিকতায় গতকাল সোমবার প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদেরকে সহযোগিতায় পুলিশ দিয়ে একে একে ৩০টি দোকান ভাংচুর করে মালামাল লুটপাট চালিয়ে দখল করে নেন।

ব্যবসায়ীক নেতা কাদির হোসেন, মোহাম্মদ কাশেম, কামাল উদ্দিন, মোহাম্মদ জয়নাল জানান, দোকান ঘর ভাংচুর ও উচ্ছেদ পায়তারার থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ইতিপূর্বে তরকারী বাজারের ব্যবসায়ীরা বাদী হয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সহ ৮ জনকে বিবাদী করে কক্সবাজার যুগ্ম জেলা জজ আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। যার নং- অপর ২১৭/২০১৭ইং তারিখ। এছাড়াও আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। যার নং- এসটিসি মামলা নং- ২১/২০১৭ইং। অথচ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে সম্পূর্ণ বেআইনী ভাবে আমাদের দোকান ভাংচুর করে উচ্ছেদ করা হয়।

ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আব্দুল সালাম ও আবুল কালাম অসহায় অবস্থায় বলেন, গতকাল সোমবার সকাল ৭ থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত প্রায় ৫ ঘন্টা ব্যাপী প্রশাসনের নেতৃত্বে কাঁচা তরকারী বাজারে তান্ডব চালিয়ে আমাদেরকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। এসময় ব্যবসায়ীরা প্রতিবাদ করলে তাদেরকে গ্রেফতারের হুমকি দিয়ে কয়েক ঘন্টা আটকিয়ে রাখে। শুধু তাই নয় উক্ত উচ্ছেদেরে পূর্বে আমাদেরকে কোন ধরনের নোটিশ প্রদান করা হয়নি। ফলে ব্যবসায়ীরা মালামাল সরিয়ে নিতে সুযোগ না পাওয়ায় লক্ষ লক্ষ টাকার আর্থিক কয়ক্ষতি হয়েছে।

এ ব্যাপারে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মাঈন উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিকদের বলেন, ফরিদ আলম নামের এক ব্যক্তির লীজ নেওয়া জায়গার উপর গড়ে উঠা তরকারী বাজার শেডটি উচ্ছেদ করা হয়েছে। তবে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদেরকে পূর্ণবাসন করা হবে।

রতœাপালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খাইরুল আলম চৌধুরী এ প্রসঙ্গে জানান, ব্যবসায়ীদেরকে সরকারী ভাবে নোটিশ দেওয়া না হলেও আমি মৌখিক ভাবে একাধিকবার দোকান থেকে মালামাল সরিয়ে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি। তাতে ব্যবসায়ীরা রাজি না হওয়ায় আজকে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

পাঠকের মতামত: