ঢাকা,মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪

পেকুয়ায় উচ্ছেদ হচ্ছে দু’হাজার স্থাপনা, সওজের মাইকিং

pekua,,নাজিম উদ্দিন, পেকুয়া :::

পেকুয়ায় সড়ক সম্প্রাসারনের জন্য মাইকিং করেছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ। কোন ধরনের নোটিশ কিংবা অবহিতকরন পত্র প্রেরন করা হয়নি ব্যবসায়ী ও দোকান মালিকদের অনুকুলে। সওজ বিভাগ পেকুয়ায় সড়ক সম্প্রাসারনের কোন ধরনের ব্যবসায়ীদের পুর্ব প্রস্তুতি ছাড়া গতকাল ৪ ডিসেম্বর রবিবার সকাল ১১টার দিকে পেকুয়ায় এ মাইকিং ও প্রচারনা চালায়। মাইকিংয়ে জানানো হয়েছে পেকুয়া-মগনামা বরইতলী সড়ক সম্প্রাসারন কাজ চলবে। সড়ক সম্প্রসারনের জন্য আগামী শনিবারের মধ্যে সড়কের দু’পাশে অধিগ্রহণকৃত স্থান থেকে স্থাপনা ও ব্যবসা প্রতিষ্টান অপসারন করতে হবে। এদিকে সড়ক ও জনপথ বিভাগ বরইতলী পেকুয়া-মগনামা সড়কের সম্প্রসারনের উদ্যেগ গ্রহন করেছে। সড়ক প্রশ্বস্থকরনের জন্য কর্তৃপক্ষ প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মসূচীর উদ্যেগ নিয়েছেন। তবে পেকুয়া-মগনামা-বরইতলী সড়কের পেকুয়া কবির আহমদ চৌধুরী বাজারের (পেকুয়াবাজার) দু’পাশে সড়ক প্রশ^স্থকরন কাজ বাস্তবায়ন করার ঘোষনা দিয়েছেন। জানাগেছে, সম্প্রতি সড়ক ও জনপথ বিভাগ ওই সড়ক সংস্কার করতে কিছুদিন আগে পেকুয়ায় সমীক্ষা শেষ করেছে। গতকাল রবিবার সওজ বিভাগ তাদের অধিগ্রহনকৃত জায়গা থেকে স্থাপনা ও ব্যবসায়ীক কার্যক্রম গুঠিয়ে নিতে মাইকিং করেছে। কবির আহমদ চৌধুরীর বাজার(পেকুয়াবাজার) এ সড়কের নিকটতম স্থানে প্রতিষ্টিত। বাজারের মুল আয়তন হবে প্রায় এক কিলোমিটার। এর মধ্যে ডা.মুজিববুর রহমানের মালিকানাধীন নুর ক্লিনিক থেকে ভোলাইয়াঘোনা পুর্বগোয়াখালী সড়ক পর্যন্ত এক কিলোমিটারে প্রায় দুই হাজারেরও অধিক স্থাপনা ও ব্যবসা প্রতিষ্টান রয়েছে। এগুলো সব ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গার উপর গড়ে উঠেছে। সওজ বিভাগ মাইকিং করলেও এর পুর্বে কোন ধরনের নোটিশ কিংবা পরিপত্র জমি ও স্থাপনার মালিকদের অনুকুলে প্রেরন করেনি। এদিকে আকর্ষিক সওজের মাইকিংয়ে পেকুয়ায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ ও আতংক ছড়িয়ে পড়ে। সরকার সড়ক সম্প্রসারন করলে অধিগ্রহনকৃত জমির মালিক ও স্থাপনার মালিকরা ক্ষতি পুরন পেয়ে থাকেন। সংশ্লিষ্ট বিভাগ ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা প্রস্তুত করে। প্রকল্প বাস্তবায়নের পূর্বে ক্ষতিপুরন নিতে সংশ্লিষ্ট নোটিশের মাধ্যমে অবহিত করনের নিয়ম আছে। কিন্তু পেকুয়ায় মাইকিং করলেও সওজ বিভাগ এ সম্পর্কে কোন ধরনের নোটিশ প্রেরন করেননি বলে ব্যবসায়ী ও স্থাপনার মালিকরা জানিয়েছেন। হঠাৎ মাইকিং করায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করে। গতকাল মাইকিংয়ের পর গতকাল পেকুয়ায় ব্যবসায়ীরা এক জরুরী বৈঠক আহব্বান করেছে। এসময় পেকুয়াবাজারের প্রায় দুই হাজারেরও বেশি ব্যবসায়ী বৈঠকে মিলিত হয়ে সম্ভাব্য ক্ষতির আশংকায় তারা বিচলিত হয়েছেন। পেকুয়াবাজারের হাজ¦ী আকতার প্লাজার মালিক আকতার আহমদ, এম.দেলোয়ার শপিং সেন্টারের মালিক শাখাওয়াত হোছাইন সূজন, সোহেল স্টোরের মালিক মো.শাকের, সুন্দরী ক্লথ স্টোরের মালিক মো.মোস্তাফিজ, শাহাদাত এন্টারপ্রাইজের মালিক মো.মঈনুদ্দিন, আছমা-শহিদ মার্কেটের মালিক মো. শহিদুল্লাহ, ইলাহী স্টোরের মালিক আবু ছালেক, মোশতাক আহমদসহ অনেক ব্যবসায়ী ও মালিকরা জানিয়েছেন, তারা সরকারের উন্নয়নের পক্ষে। কিন্তু তারা সরকারের কাছ থেকে নৈতিক সমাধান চান। জায়গা ও স্থাপনার ক্ষতিপুরন না পেয়ে তারা কোন ধরনের উচ্ছেদের পক্ষে নন। তারা আরো জানান, এমুহুর্তে ক্ষতিপুরন ছাড়া আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্টান গুড়িয়ে দিলে প্রায় দুই হাজার ব্যবসায়ী ও স্থাপনার মালিকদের পথে বসা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। উপযুক্ত সমাধান হচ্ছে ক্ষতিপুরন দিয়ে আমাদেরকে উচ্ছেদ করতে হবে। অন্যথায় আমাদের সাথে সরকার ও রাষ্ট্রের অবিচার হবে। সড়ক সম্প্রসারনের জন্য সওজ বিভাগ কি পরিমান জায়গা দু’ পাশে অধিগ্রহণ করেছে সে বিষয়ে আমরা এখনো স্পষ্ট নয়। নোটিশ না পাওয়ায় আমরা এবিষয়ে ওয়াকিবহাল না থাকায় প্রায় অন্ধকারেই থেকে গেছে পুরো বিষয়টি। স্পষ্ট উল্লেখ থাকলে আমরা কতটুকু জায়গা ছেড়ে দেবো সেবিষয়ে পুর্ব থেকে আমাদের মাঝে একটি প্রস্তুতি থাকতে পারে। কিন্তু এসব না করায় এখন কোন ধারনা পাচ্ছিনা আমরা। এদিকে সড়কের মাইকিংকে ঘিরে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে ব্যাপক আতংক ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ব্যবসায়ীরা এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরনের জন্য গতকাল তাৎক্ষনিক জড়ো হয়েছেন বাজারে। তারা ক্ষতিপুরন দাবিতে কর্মসুচীর দিকে যাওয়ার ঘোষনা দিয়েছেন। এব্যাপারে পেকুয়াবাজার ব্যবসায়ী কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিঃ এর সভাপতি হাজ¦ী আকতার আহমদ ও সাধারন সম্পাদক মিনহাজ উদ্দিন জানিয়েছেন, হঠাৎ মাইকিং করা হয়েছে। অথচ আগে কর্তৃপক্ষ কোন ধরনের নোটিশ জারি করেননি। নোটিশ না পেলে আমরা কিভাবে জানব কতটুকু জায়গা অধিগ্রহণ করা হয়েছে। কি পরিমাণ জায়গা ছেড়ে দিতে হচ্ছে। বাজারের দু’পাশের জায়গা ব্যক্তি মালিকানাধীন। মাইকিং করলে এগুলো শেষ হয়ে যায় না। উচ্ছেদের পুর্বে নোটিশ দিতে হবে এবং উপযুক্ত ক্ষতিপুরন নিশ্চিত করতে হবে। এবিষয়ে জানতে সড়ক ও জনপথ বিভাগের (চকরিয়া-পেকুয়ার) উপ-সহকারি প্রকৌশলী মো.আলীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। তিনি ফোন ধরেননি। বাসায় ছোট্ট একজন শিশু ফোনটি রিসিভ করেন। তবে এবিষয়ে তার কোন মতামত পাওয়া যায়নি। কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রানা প্রিয় বড়ুয়া বলেন, আমরা যখন সড়কটি সংস্কার কাজ হয়েছে সে সময় এ সড়কের জায়গা অধিগ্রহণ করা হয়েছে। যারা বৈধভাবে আছেন তাদেরকে একটি আঁছড়ও দেওয়া হবেনা। যেসব অবৈধভাবে করা হয়েছে সেগুলো উচ্ছেদ হবে। আমরা প্রত্যেককে নোটিশ দিতে পারবনা তাই মাইকিং করে জানানো হয়েছে।

পাঠকের মতামত: