ঢাকা,শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

পেকুয়ায় সরকারি জলমহালের শ্রেণি পরিবর্তন করে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের মৎস্যঘের!

বার্তা পরিবেশকপে :: কুয়া উপজেলার উজানটিয়া সুতাচুরা এলাকায় সরকারি বদ্ধ জলমহালের একাংশে (খাল) অবৈধভাবে বাঁধ দিয়ে ১ একর দখল করে ব্যক্তিগত হ্যাচারী মৎস্যঘের তৈরীর অভিযোগ উঠেছে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। পেকুয়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চিঠি দিয়ে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানকে জলমহালের জায়গা ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলা হলেও তিনি কর্ণপাত করেনি। চিঠি দিয়ে দায় সেরে গত তিনবছর ধরে নিরব রয়েছে পেকুয়া উপজেলা প্রশাসন!

স্থানীয়রা জানান, পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নে অবস্থিত ১নং খাস খতিয়ানের প্রায় ২০ একর আয়তনের উর্ধে উজানটিয়া-সুতাচূরা জলমহালটি (খাল) কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে তিন বছর পরপর স্থানীয় প্রকৃত মৎস্যজীবি সমিতিকে ইজারা দিয়ে রাজস্ব আদায় করে। পাঁচবছর পূর্বে উজানটিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান থাককালীন সময়ে এটিএম শহিদুল ইসলাম চৌধুরী কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে জলমহালটি তিন বছরের জন্য ইজারা নিয়ে ইজারার শর্ত লংঘন করে জলমহালের একাংশে মাটির বাঁধ দিয়ে মৎস্যঘের তৈরী করেছেন। ২০ একর আয়তনের জলমহালের প্রায় ১একর জায়গা জবর দখলে নিয়েছে উজানটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এটিএম শহিদুল ইসলাম চৌধুরী।
স্থানীয় বাসিন্দা মিজু মিয়া বলেন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম চৌধুরী জলমহালের শ্রেণি পরিবর্তন করে ব্যক্তিগত মৎস্যঘের তৈরী করলেও প্রশাসন এখনো পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেয়নি। খালটি দখলমুক্ত ও পূর্বের রূপ ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান স্থানীয় এই বাসিন্দা।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সুত্রে জানা গেছে, বিগত ২০১৮ সালে ২০ একর আয়তনের জলমহালটি নামমাত্র ৯০ হাজার টাকা মূল্যে তিন বছরের জন্য ইজারা নেন উজানটিয়ার সাবেক চেয়ারম্যান এটিএম শহিদুল ইসলাম। কিন্তু কিছুদিন সময় যেতে না যেতেই দখলের মাধ্যমে জলমহলের শ্রেণি পরিবর্তন করে সরকারি বদ্ধ জলমহালের একাংশে বাঁধ দিয়ে জবর দখল করে নেয়। পরে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে স্থনীয়রা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই সময় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল পেকুয়া উপজেলা প্রশাসন। উক্ত তদন্ত কমিটি গত ২০১৯ সালের ১৭জুন ঘটনাস্থলে পরির্দশন করে অভিযোগের সত্যতা পায়। পেকুয়া উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মাহাবুবউল করিম অবৈধ নির্মিত বাঁধ কেটে জলমহালটি পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে ২০১৯ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে একটি লিখিত আদেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রায় ৫বছর পার হতে চললেও উপজেলা প্রশাসনের সে নির্দেশনা মানেননি শহিদুল ইসলাম চৌধুরী।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এটিএম শহিদুল ইসলাম চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এক সময় উজানটিয়া-সুতাচুরা জলমহালটি আমি ইজারা নিয়েছিলাম। সে সময় মৎস্য চাষের সুবিধার্থে একটি বাঁধ দিয়েছিলাম। আর সেখানে আমার কিছু খতিয়ানী জায়গা রয়েছে। সরকারি জলমহালে নিজের নামে খতিয়ানী জায়গা কিভাবে থাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি আর কোন মন্তব্য করেননি।
স্থানীয় বাসিন্দা মোশরফ হোছাইন জানান, রহস্যজনকভাবে পেকুয়া উপজেলা প্রশাসন নিরব থাকায় নিজের সুবিধামতো উল্টো দখলের পরিধি বাড়িয়েছেন সাবেক চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার চাই থোয়াইহালা চৌধুরী বলেন, বিষয়টা যেহেতু এখন জেনেছি, খতিয়ে দেখে সরকারি জলমহাল জবর দখলের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পাঠকের মতামত: