ঢাকা,মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪

ঘূর্নিঝড় মোরা: এতো মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়া হলো কিভাবে?

বিবিসি::
বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড় মোরা’র বিপদসংকেত পেয়ে, প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে নেয়া হয়। ফলে, প্রাণহানির সংখ্যা সর্বনিন্ম পর্যায়ে রাখা গেছে।
সর্বশেষ পাওয়া খবরে মৃতের সংখ্যা ৭, যদিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার ঘড়বাড়ি।
উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষদের আশ্রয় কেন্দ্রে নিতে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবকেরা। ঝড়ের সংকেত পেয়ে পুরো অঞ্চলের মানুষকে সতর্ক করেছে তারা। মহা বিপদসংকেত আসার পর হাজার-হাজার মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়ার কাজও তারা করেছে।
কিন্তু কিভাবে নেয়া হলো এতো মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে – এমন প্রশ্নের জবাবে রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির মহাসচিব মাজহারুল হক বিবিসিকে বলেন ৬৪ জেলা ও ২ সিটি কর্পোরেশন সহ মোট ৬৮ ইউনিটে স্বেচ্ছাসেবকরা রয়েছে যাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয় যারা এ কাজটি করবে।
তাছাড়া সাইক্লোন প্রস্তুতকরণ কর্মসূচির আওতায় আরও ৫৫হাজার স্বেচ্ছাসেবী আছে যারা সংকেত পাওয়ার পর দ্রুততম সময়ে আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়ার কাজ করে।
কিন্তু কিভাবে কাজ করে, আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়ার প্রক্রিয়া কি? জবাবে মিস্টার হক বলেন প্রথমে সংকেত বা বার্তাটি ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয় যেনো মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়।
“এরা প্রশিক্ষিত। কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে বার্তা যাওয়ার পরপরই নেমে পড়ে মেগাফোন নিয়ে সংঘবদ্ধ ভাবে”।
কিন্তু মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে না চাইলে কি করে তারা ? জবাবে তিনি বলেন এটি আসলে নিয়মিত মহড়ার মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করা হয়।ঝড়ের পর আশ্রয় কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরছে মানুষ

ঘরবাড়ি রেখে মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে উদ্বুদ্ধ করার কাজটা কতখানি কঠিন? জবাবে মিস্টার হক বলেন স্বেচ্ছাসেবকরা সেই মোটিভেশন করতে পারে। আর সে কারণেই এবারো প্রাণহানি সর্বনিন্ম পর্যায়ে রাখা গেছে।
তবে এর আগে ঘূর্ণিঝড় মোরা যখন উপকুলের দিকে ধেয়ে আসছিলো সোমবার সন্ধ্যায় কক্সবাজারে লোকজনকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়ার কাজ করছিলেন মোহাম্মদ হোসেন।
কি করছেন তারা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমরা দিনভর মাইকিং করেছি। আর সন্ধ্যায় পর মহা বিপদসংকেত পাওয়ার পরপরই ঝুঁকিতে থাকা বাড়িঘর থেকে লোকজনকে জেলা প্রশাসনের গাড়ি ও নিজেদের সাথে থাকা টমটমে করে শত শত মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে নিয়ে গেছি”।
এবার ঘূর্ণিঝড় মোরাকে সামনে রেখে প্রায় চার লাখ মানুষকে মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এভাবেই আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে গেছে উপকূলীয় অঞ্চল বিশেষ করে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবকরা।
তবে রেড ক্রিসেন্ট মহাসচিব মনে করেন শুধু রেড ক্রিসেন্ট বা সরকার নয়, উপকূলীয় অঞ্চলে অনেক এনজিও কাজ করছে, এ ধরণের বড় দুর্যোগের সময় সবার মধ্যে সমন্বয় আনা গেলে শুধু প্রাণহানি ঠেকানোই নয়, দুর্যোগ পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতিও কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।
তার মতে অনেক সময় মানুষ দুর্যোগের পর তার ঘরবাড়ি কিংবা সহায়সম্পদের কথা চিন্তা করে বাড়ি ছেড়ে আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে চায়না, যদিও এমন মানুষের সংখ্যা এখন অনেক কমেছে।

পাঠকের মতামত: