ঢাকা,শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪

সড়ক দুর্ঘটনায় আহতদের ৫ লক্ষ ও নিহত পরিবারকে ২০ লক্ষ টাকা দেয়ার দাবী যাত্রী কল্যাণ সমিতির

নিজস্ব প্রতিবেদক ::
সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ অনুযায়ী সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তার জন্য জরুরী ভিত্তিতে “আর্থিক সহায়তা তহবিল” গঠন, সড়ক দুর্ঘটনায় আহতদের ৫ লক্ষ টাকা এবং নিহত ব্যক্তির উত্তোরাধিকারীকে ২০ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সহায়তা প্রদানের দাবী জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

আজ ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২১ সোমবার সকালে নগরীর সেগুনবাগিচাস্থ বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ দাবী জানান।

দ্রুত যাত্রীবান্ধব সড়ক পরিবহন বিধিমালা প্রণয়নের দাবী জানিয়ে তিনি বলেন, গণপরিবহনে বিশৃঙ্খলা, অরাজকতা, ভাড়া নৈরাজ্য ও যাত্রী হয়রানী বন্ধে এই সেক্টরের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর অযোগ্যতা, অবহেলা, দুর্নীতি ও দ্বায়িত্ব পালনে গাফেলতির কারণে নানাভাবে চেষ্টা করেও সরকার বার বার ব্যর্থ হচ্ছে। পুরোনো সড়ক আইন ও বিধিমালায় পরিবহন পরিচালনার বিভিন্ন কমিটিসমূহে মালিক-শ্রমিকদের একচ্ছত্র আধিপত্যের কারনে সরকার বার বার অসহায়ত্ব প্রকাশ করায় প্রণয়নরত নতুন সড়ক পরিবহন বিধিমালায় আঞ্চলিক পরিবহন কমিটি, গণপরিবহন ভাড়া নির্ধারণ কমিটি, সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতদের আর্থিক সহায়তার ট্রাষ্টি বোর্ডসহ পরিবহনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের সকল ক্ষেত্রে মালিক-শ্রমিকদের পাশাপাশি যাত্রী প্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট কারিগড়ি লোকজন রাখার দাবী দীর্ঘদিনের। নতুন সড়ক পরিবহন আইন ২০১৯ সালের নভেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে, জেল-জরিমানা আদায় হচ্ছে, কিন্তু এই আইনে সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের বিষয়টি বলা হলেও দীর্ঘ ১৫ মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য ট্রাষ্টি বোর্ড গঠন না হওয়া সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থরা ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি।

সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থদের আর্থিক সহায়তা তহবিলের অর্থসংস্থানের জন্য নতুন সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর অধীনে বিভিন্ন মামলার যেমন হাইওয়ে পুলিশ, জেলা পুলিশ, মেট্রোপলিটন ট্রাফিক পুলিশ ও বিআরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালতের যাবতীয় জরিমানার অর্থ এই তহবিলে জমা করা যেতে পারে। দেশে বর্তমানে নিবন্ধিত যানবাহন প্রায় ৪৪ লাখ, বিআরটিএ ইস্যুকৃত ড্রাইভিং লাইসেন্স সংখ্যা প্রায় ২৫ লাখ। প্রতিটি যানবাহন নিবন্ধন, বছর বছর ফিটনেস নবায়ন ও ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যুকালে একটি নুন্যতম নির্দিষ্ট অংকের ফি আরোপ করে এই তহবিলে জমা করা যেতে পারে। সড়ক-সেতু নির্মাণ ও মেরামতকালে ঠিকাদারের অনুকূলে বিল পরিশোধকালে একটি নুন্যতম ফি আদায় করে এই তহবিলে জমা করা যেতে পারে। বর্তমানে বিদ্যমান সড়ক ও সেতুর টোল আদায়ের একটি নুন্যতম অংশ এ তহবিলে জমা দেয়া যেতে পারে। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মধ্য দিয়ে এই সব খাত থেকে ডিজিটাল ব্যবস্থাপনায় তহবিল সংগ্রহ করা হলে প্রতি বছর অনায়াসে হাজার কোটি টাকা তহবিল সংগ্রহ করা সম্ভব এবং সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ প্রত্যেক আহত ব্যক্তিকে ৫ লক্ষ টাকা ও নিহত পরিবারের বৈধ উত্তোরাধিকারীকে ২০ লক্ষ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করাও সম্ভব। তবে এই তহবিল পরিচালনার ক্ষেত্রে শুধু মালিক-শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের কর্তৃত্ব থাকলে দেশের সাধারণ যাত্রী ও পথচারী এই তহবিল থেকে বঞ্চিত হতে পারে। তাই এই তহবিলের ট্রাষ্টি বোর্ড পরিচালনায় সৎ, যোগ্য ও দক্ষ পেশাদার লোকজন রাখার জোর দাবী জানান তিনি।

এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হোসেন আহমেদ মজুমদার, যাত্রী কল্যাণ সমিতির যুগ্ম মহাসচিব এম. মনিরুল হক প্রমুখ।

পাঠকের মতামত: