ঢাকা,মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪

কক্সবাজার সদর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা প্রহৃত, মামলা দায়ের

নিজস্ব প্রতিবেদক ::
কক্সবাজার সদর ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা জাহেদ হোছাইনকে মারধর ও শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করার অভিযোগ উঠেছে। সরকারি কাজে বাঁধা এবং সরকারী কর্মকর্তাকে লাঞ্চিত করার অভিযোগে মোহাজেরপাড়া এলাকার বাসিন্দা ও জেলা জজ আদালতের আইনজীবী ফরিদুল আলম ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে প্রশাসন।
জানা গেছে, গত ১৭ জুলাই কক্সবাজার শহরের মোহাজেরপাড়া সরকারী বালক উচ্চবিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকার একটি নামজারী ও জমাভাগ মামলা নং ১৬৭৪(২)/২০১৯ এর তদন্ত করতে যান সদর ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহেদ হোছাইন। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন সার্ভেয়ার জাহাঙ্গীর আলম ও চেইনম্যান চান্দু পাল। তারা ঘটনাস্থলে পৌছলে নামজারী আপত্তিকারী পক্ষের মৃত হাজী মফজল মিয়ার ছেলে অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম, সমশুল আলম কুতুবী ও মোর্শেদ আলম এবং সমশুল আলমের ছেলে নুরুল বশর জুয়েল তাদের বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় অ্যাড. ফরিদুল আলম ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা জাহেদ হোছাইনের কাছে কেন তদন্ত করতে গেছেন জানতে চেয়ে অশালিন ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। এক পর্যায়ে মারতে তেড়ে যান। এসময় তাদের উপর হামলা করার জন্য বাড়ির প্রধান গেইট বন্ধ করে দেন। পরে জাহেদের কাপড় ধরে টানাটানি করে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করেন। এসময় জাহেদকে বেঁধে রাখার চেষ্টা এবং এসিল্যান্ডসহ ভূমি অফিসের সবার চাকরি খাওয়াসহ নানা হুমকি-ধমকি দেন।
তাকে মারধর ও সরকারী কাজে বাঁধা দেওয়ার বিষয়টি পরে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (এসিল্যান্ড) অবগত করেন ভুক্তভোগী জাহেদ। পরে এসিল্যান্ড থানায় মামলা দায়েরের নির্দেশ দেন। এসিলান্ডের নির্দেশে ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা জাহেদ হোছাইন বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
ভুক্তভোগী কর্মকর্তা জাহেদ হোছাইন জানান, তিনি এসিল্যান্ড (সদর) ও কানুনগো’র নির্দেশে জমিটি সরেজমিন তদন্তে যান। কিন্তু কিছু বুঝে উঠার আগেই কেন তদন্ত করতে গেছি জানতে চেয়ে আশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এক পর্যায়ে শারীরিকভাবে মারধর করে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন। তাকে সেখানে বেঁধে রাখারও চেষ্টা করা হয়। পরে তার (জাহেদ) সঙ্গে থাকা অন্য দুইজন সহকর্মী তাকে কোন রকম উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।
তিনি আরও বলেন, ‘এই জমিতে আমার কোন ব্যক্তিগত স্বার্থ নেই। তার (অ্যাড. ফরিদ) আপত্তির প্রেক্ষিতেই এসিল্যান্ড স্যার আমাকে সরেজমিন তদন্তে পাঠিয়েছিলেন। ঘটনাস্থলে আমাকে অন্যায়ভাবে লাঞ্চিত করা হয়েছে। বাঁধা দেওয়ার কারণে সরকারী দায়িত্বও পালন করা সম্ভব হয়নি। এঘটনায় অ্যাড. ফরিদুল আলমসহ চারজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।’
এবিষয়ে জানতে চাইলে সদর এসিল্যান্ড মুহাম্মদ শাহরীয়ার মুক্তার বলেন, সরকারী কর্মকর্তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত ও সরকারী কাজে বাঁধা দেওয়ার ঘটনা অত্যন্ত নেক্কারজনক। এঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিগণের বিরুদ্ধে প্যানেল কোড (দন্ডবিধি) ১৮৬০, ধারা ১৮৬ মতে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) এজাহারের সাথে লিখিতভাবে চিঠি দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবী জানান তিনি।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ উদ্দীন খন্দকার বলেন, ‘বিষয়টি আমাকে জানানো হয়েছে। এঘটনায় এজাহারও দায়ের করা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে। জড়িতদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’

পাঠকের মতামত: