:: এম. আর. মাহমুদ ::
পাবলিক আমার নাম দিয়েছে গর্ভ খালাস সড়ক। এটি আমার আসল নাম নয় ছদ্ম নাম। তবে সরকারি দপ্তরে আমার প্রকৃত নাম শিকলঘাট কাকারা ইয়াংছা সড়ক। প্রতিদিন আমার উপর দিয়ে হাজার হাজার বনি আদম চলাচল করে। কিন্তু ভারী যানবাহন চলাচল অতি বর্ষন ও বন্যার কারনে আমার অবস্থা বড়ই করুন। বর্তমানে আমর উপর অসংখ্য গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। গর্তের পানিতে মৎস্য চাষ করা যাবে। বর্ষায় অতি বর্ষন হলে সড়কের উপর দিয়ে বর্তমান সরকারের দলীয় প্রতিক নৌকা চালাতে হবে। আমি আগেই বলে রাখছি বর্ষার আগে নৌকার ব্যবস্থা না করলে কাকারা, সুরাজপুর-মানিকপুর ও লক্ষ্যারচরের ৬০/৭০ হাজার মানুষ অচল হয়ে পড়বে। বর্তমানে আমার উপর দিয়ে আগের মতো শান্তিতে চলাচল করতে পারছে না। এমনকি বিপন্ন রোগীসহ গর্ভবর্তী মহিলারা বড়ই কষ্টে আছে। আমি জড় পদার্থ কাউকে কিছু বলতে পারি না। আমাকের সংস্কারের দায়িত্বে যারা আছে তারা কানে দিয়েছে তুলা, পিঠে দিয়েছে কুলা। সড়ক-জনপদ কর্তৃপক্ষ আমাকে সংস্কারের জন্য দরপত্র আহ্বান করেছে। কিন্তু ঠিকাদারেরা আমাকে সংস্কারের দায়িত্ব নিচ্ছে না আমি যেন এখন “জমেরও অরুচি”। আমার অনেক পুরানো পরিচিতি রয়েছে অবিভক্ত চকরিয়ার হাতে-গোনা কয়েকটি সড়কের মধ্যে আমি আলোচিত সড়ক। কালের পরিবর্তনে আমার এ দশা। এক সময় আমর উপর দিয়ে লামা ও আলীকদমের সিংহভাগ মানুষ যাতায়ত করত। হযরত শাহ ওমর (রা:) এর পূন্যভুমি কাকারায় প্রতিদিন বেশুমার মানুষ যিয়ারতের জন্য আসা-যাওয়া করে। তার পরও জন-প্রতিনিধিরা আমার প্রতি সু-বিচার করছে না কেন আমি জানিনা। বর্তমানে আমি ক্লান্ত, আর পারছি না কইতে, পারছি না সইতে। সাহিত্যের ভাষায় বলতে হয় “আমার অবস্থা বুক পাঠে তো মুখ পাঠে না অবস্থায়”। আমি যখন ডাব ছিলাম আমার পানি নড়ত না এখন আমি পাকা নারিকেল তাই আমার পানি নড়াছড়া করছে। গাড়িতে করে যাওয়ার সময় যাত্রীরা কষ্ট পাচ্ছে, তারা হায়-হুতাশ করছে কিন্তু করার কিছু নেই। এক সময়ের আলোচিত কাকারা, সুরাজপুর-মানিকপুর যোগাযোগ ব্যবস্থার কারনে এখন হতশ্রী। আমার অবস্থা দেখতে অনেকটা হুতুম পেছার মাথার মতো। আমি সৃষ্টির পর থেকে সড়কে ইট ছিল পরে কার্পেটিং হয়েছে এখন কিন্তু কার্পেটিং এর উপরে ইটের বসানো হয়েছে। এখনকি আমার প্রমোশন হয়েছে, নাকি ডিমোশন হয়েছে, আমিই বুঝতেই পারছিনা। ৬০-৭০ হাজার বনি আদমের স্বার্থে আমি জন-প্রতিনিধিদের কাছে বিনীত ভাবে নিবেদন করছি আমাকে সংস্কার করুন। ক’দিন পর বর্ষা শুরু হলে আমার রূপ পরিবর্তন হয়ে যাবে। তখন আর ঘষা-মাজা করে শেষ রক্ষা করা যাবে না। অতএব জন-প্রতিনিধিদের মহানুভবতায় সউজ কর্তৃপক্ষ সড়কটি সংস্কারে এগিয়ে আসলে আমি পুনরায় আগের মতো সেবা দিয়ে যেতে পারব।
পাঠকের মতামত: