বিশেষ প্রতিবেদক ::
কক্সবাজার জেলা কারাগারে লাগামহীন অনিয়ম দুর্নীতির ঘটনা ঘটে চলেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সাধারণতঃ দেশের প্রতিটি কারাগারে দুর্নীতি-অনিয়ম চলে আসলেও কক্সবাজার জেলা কারাগারের সাম্প্রতিক চিত্র ভিন্ন রকমের।
বন্দীদের সাথে কথা বলতে জনপ্রতি ১২০০ টাকা, ভাতের ক্যারিয়ার ঢুকাতে ২০০ টাকা দিতে হয়।
ভিতরে বন্দীদের জন্য যে সব প্রয়োজনীয় জিনিস ঢুকানোর দরকার সবগুলোই বাধ্যতামূলকভাবে কারাগারের ব্যক্তিগত দোকান থেকে কিনতে হয়। কারা দোকানের প্রত্যেক পণ্যের দাম কয়েকশ গুণ বেশি। সিস্টেমে পড়ে সেখান থেকে কিনতে বাধ্য স্বজনরা।
কারাগারে আটক বন্দিদের নিকট এক কেজি গরুর কাঁচা মাংস বিক্রি করা হচ্ছে ১ হাজার ৭০০ টাকায়।
সেই সঙ্গে কাঁচা মুরগির মাংস বিক্রি করা হচ্ছে কেজিপ্রতি ৬০০ টাকা করে।
কারাগার সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার পর্যন্ত কক্সবাজার জেলা কারাগারে বন্দি রয়েছে ৪ হাজার ২৬০ জন। এসব বন্দির মধ্যে শতকরা ৭০ জন অর্থাৎ তিন হাজারেরও বেশি রয়েছেন ইয়াবা কারবারি।
কারাকর্মীরা ইয়াবা কারবারিদের টার্গেট করে যেনতেনভাবে টাকা আদায় করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। আর এমন কাজের খেসারত দিতে হচ্ছে অন্যান্য বন্দিদের।
বিশেষ করে গত ১৬ ফেব্রয়ারি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপস্থিতিতে আত্মসমর্পণ করা ১০২ জন কোটিপতি ইয়াবা কারবারি কারাগারে অবস্থানের পর থেকেই কারা অভ্যন্তরের পরিস্থিতি বদলে গেছে।
আগে কারা অভ্যন্তরে সিট বেচাকেনার বিষয়টি অনেকটাই সহনশীল ছিল। কিন্তু ইয়াবা কারবারিদের কারণে এখন অন্যান্য মামলার বন্দিরা আর কোনো সিট কিনে থাকতে পারছেন না। কেননা কারবারিরা যে টাকা দিয়ে সিট কিনে কারাগারের ভেতর থাকতে পারছেন তা অন্যান্য বন্দিদের কোনোভাবেই সম্ভব হচ্ছে না।
কারাগারে পানির অভাব হওয়ায় আত্মসমর্পণ করা টেকনাফের হ্নীলা গ্রামের বাসিন্দা এক ইয়াবা কারবারি নিজেই ৭/৮ লাখ টাকা খরচ করে ২টি গভীর নলকূপও স্থাপন করে দিয়েছেন। বিনিমেয় ওই কারবারি কারাগারের ২০টি ওয়ার্ডের যেখানেই ইচ্ছা সেখানেই দিনরাত কাটাতে পারেন। নলকূপ স্থাপনকারী কারবারির কদরও কারাগারে এখন অন্যরকমের। তিনি কারারক্ষীদের নিকটও বিশেষ মর্যাদা পেয়ে আসছেন। কেননা নলকূপের পানি নিয়েও চলছে ভালো বাণিজ্য।
জেলা কারাগারের ভেতর ভিতর বর্তমানে ২০টি ওয়ার্ড রয়েছে। এসব ওয়ার্ড মিলে রয়েছে ৫টি ক্যান্টিন। তদুপরি ওয়ার্ডের বাইরে কারা ফটকেও রয়েছে আরো একটি ক্যান্টিন। ক্যান্টিনগুলোই মূলত কারাবন্দি মানুষগুলোকে জিন্মি করে টাকা উপার্জনের বড় ফন্দি হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) অন্তত ৪/৫ হাজার দর্শনার্থীর ভিড় ছিল। কারাগারে বন্দীর সংখ্যা ৪ হাজার ২৬৩ জন। সেখানে ইয়াবা কারবারির সংখ্যা কমপক্ষে ৩ হাজারের বেশি। এ কারণে দর্শনার্থীদের নিকট অসাধু কারারক্ষীদের চাহিদাও বেশি। তদুপরি সাম্প্রতিক নিয়োগ পাওয়া বেসরকারি এক কারা পরিদর্শকের বিরুদ্ধেও উঠেছে নানা অভিযোগ। ওই পরিদর্শকের বিরুদ্ধে বন্দীদের সাথে দীর্ঘক্ষণ আলাপের সুযোগ করিয়ে দেয়ার অভিযোগ আছে। আত্মসমর্পণকারীরা রয়েছে মাসিক চুক্তির বিনিময়ে বেশ আরামে।
কারাগার থেকে বের হওয়া এক আসামি নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে বলেন, আত্মসমর্পণকারী ইয়াবা ব্যবসায়ীরা রাজার হালতে আমদানিতে আছে। সেখানে বসানো হয়েছে এসি, এটাস্ট বাথরুম। কয়েকজনের হাতে রয়েছে মোবাইল।
তিনি বলেন, জেল কর্তৃপক্ষকে নগদ অার্থিক সুবিধা দিয়ে এসব করা হয়। তাতে কিছু রাজনৈতিক নেতাদের ইশারাও রয়েছে।
রেজাউর রহমান রেজা নামের এক স্বজন বলেন, কয়েদীরা একদিকে সাজাভোগ করতেছে, আরেকদিকে নির্যাতিত নিপীড়ীত। জুলুমের পর জুলুমের শিকার। তারাও আমাদের মত মানুষ।
কয়েদীদেরকে বিনাখরচে আত্নীয়স্বজনের সাক্ষাতের ব্যবস্থা করা হোক।
জেলা কারাগারে স্বজনদের দেখতে গিয়ে ভিক্তভোগি মোঃ সোহাগ মিয়া বলেন, গত জুমাবারে আমি নিজে শিকার হয়েছি। কারাগারে বাইরে প্রচুর অনিয়ম। ভেতরে আরো মারাত্মক বলে শুনেছি।
তিনি বলেন, জেল সুপার, জেলারের সামনে এসব হচ্ছে। অনিয়ম-দুর্নীতি ধরতে কারাগারের সব স্পটে সিসি টিভি বসানো এবং তা সঠিকভাবে মনিটরিং দরকার বলে এই দর্শণার্থী মন্তব্য করেন।
তবে, জেল সুপার মোঃ বজলুর রশীদ আখন্দ এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, ঈদের পরের দিন (বৃহস্পতিবার) কয়েক হাজার দর্শনার্থীর ভিড় ছিল। আমি সকালে একটু বাইরে গিয়ে ছিলাম। তাই এ সময়ে কিছু ঘটনা ঘটতে পারে। আমি তদন্ত করে দেখব।
প্রকাশ:
২০১৯-০৬-০৮ ০৯:৩৪:৫৪
আপডেট:২০১৯-০৬-০৮ ০৯:৩৪:৫৪
- চকরিয়ায় ধান ক্ষেত থেকে লম্বা অজগর সাপ উদ্ধার, পরে অবমুক্ত
- পেকুয়ায় চেয়ারম্যান পদে চমক দেখাতে পারে নারী প্রার্থী রুমানা আক্তার, গণসংযোগে গণজোয়ার
- চকরিয়ায় শাখাখালের তীর থেকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার
- চকরিয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে ১১৪ টি ভোট কেন্দ্রে মোট ৩ লক্ষ ৬১ হাজার ১০৩ জন ভোটা
- রামুতে গাড়িযোগে পাচারকালে ২০ হাজার ইয়াবাসহ ২ যুবক আটক
- চকরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন: লড়াই চলছে শেয়ানে শেয়ানে
- চকরিয়া-পেকুয়ায় দুই লবণ চাষী নিহত, উড়ে গেছে বসতঘর
- চকরিয়ায় চেয়ারম্যান ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৩ জন প্রার্থীর মাঝে প্রতীক বরাদ্দ
- চকরিয়ায় প্রভাবশালীর কাছে জিম্মি অসহায় পরিবার
- পেকুয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কে কোন প্রতীক বরাদ্দ পেলেন
- ব্যাপক উৎসাহ—উদ্দীপনায় সাংবাদিক সংসদের এক যুগপূর্তি উৎসব সম্পন্ন
- চকরিয়া ভরামুহুরীতে বাড়ি নির্মাণে বাঁধা হামলা: নারীসহ আহত ৩, রড সিমেন্ট ইট লুট
- সোহেল,জনি,রাজ্জাক ও দেলোয়ার চেয়ারম্যান নির্বাচিত: একটিতে ফলাফল নিয়ে ধোঁয়াশা…
- অবাঞ্চিত ঘোষণা নব-গঠিত মাতামুহুরী আওয়ামী লীগের
- চকরিয়ায় উপকুলের সাগর চ্যানেলের ট্রলার থেকে ৩৮ কোটি টাকা মূল্যের ১২ লাখ ৫০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার
- আজ ২৯ এপ্রিলের ভয়াবহতা এখনও ভুলেনি উপকূলবাসী
- চকরিয়া হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ
- পেকুয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কে কোন প্রতীক বরাদ্দ পেলেন
- চকরিয়ায় প্রভাবশালীর কাছে জিম্মি অসহায় পরিবার
- ব্যাপক উৎসাহ—উদ্দীপনায় সাংবাদিক সংসদের এক যুগপূর্তি উৎসব সম্পন্ন
- চকরিয়া-পেকুয়ায় দুই লবণ চাষী নিহত, উড়ে গেছে বসতঘর
- চকরিয়ায় চেয়ারম্যান ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৩ জন প্রার্থীর মাঝে প্রতীক বরাদ্দ
পাঠকের মতামত: