ঢাকা,বুধবার, ১ মে ২০২৪

পেকুয়া সদরে বিএনপির তিন নেতাসহ স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনী প্রচারণায় ৬জন

পেকুয়া প্রতিনিধি ::  সারাদেশের ন্যায় আগামী ৩য় ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে পেকুয়া উপজেলার ৬ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন। তার মধ্যে সবার দৃষ্টি রয়েছে পেকুয়া সদর ইউনিয়ন। নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতিক না থাকায় স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে প্রচারণায় মাঠে রয়েছে বিএনপির তিন নেতাসহ ৬জন প্রার্থী।

তারা হলেন, বিএনপি সমর্থিত উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক বর্তমান চেয়ারম্যান এম বাহাদুর শাহ, উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ইউসুফ রুবেল, উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি মোঃ শাহ আলম, পেকুয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান বিএনপি থেকে আ’লীগে যোগদানকারী নেতা মাহাবুল করিম,
পেকুয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের তিন বারের চেয়ারম্যান বিশিষ্ট আইনজীবী জেলা আ’লীগের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য কামাল হোছাইনের সন্তান চট্টগ্রাম বঙ্গবন্ধু আওয়ামী পরিষদের সদস্য তরুণ আইনজীবী রাশেদুল কবির ও প্রবাসী আ’লীগ নেতা উপজেলা যুবলীগ নেতা পেকুয়া সদর আন্নর আলী মাতবর বাড়ির সন্তান ওমর রিয়াজ চৌধুরী।

ইতোমধ্যে যার যার মত বেশ উদ্দিপনায় নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রার্থীরা। তবে বিগত দুই বছর ধরে সামাজিক কমর্কান্ডে যোগদান করে রাশেদুল কবির ও ইউসুফ রুবেল তাদের প্রার্থীতা ঘোষণা দিলেও বিগত এক বছর ধরে পাড়া মহল্লায় উঠান বৈঠক করে ভোট প্রার্থনা করে যাচ্ছেন। ওমর রিয়াজ চৌধুরীও বিভিন্ন সময় সাধারণ জনগণকে সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। তরুণ এ প্রার্থীরা ইতোমধ্যে ভোটারদের আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছেন। এ ছাড়াও দুইবারের ইউপি সদস্য বর্তমান সদর প্যানেল চেয়ারম্যান মাহাবুল করিম নিজে স্বতন্ত্র প্রার্থী ঘোষণা দিয়ে ভোট প্রার্থনায় ভোটারদের ধারে ধারে যাচ্ছেন। বিএনপি নেতা মোঃ শাহ আলমের কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার হলেও প্রচারে এখন পর্যন্ত দেখা যায়নি।

অপর প্রার্থী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক বর্তমান সহ দুইবারের চেয়ারম্যান এম বাহাদুর শাহ আরো নির্বাচন করার ঘোষণা দিলেও এখন পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচারণায় চোখে পড়েনি। তবে দুই বারে নির্বাচিত চেয়ারম্যান হওয়ায় ও বিএনপির শীর্ষ নেতার পদবী থাকায় যতেষ্ট কর্মী সমর্থক থাকায় নির্বাচনী মাঠে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছে।

সূত্রে জানা গেছে, বিগত শেষ ৫ বছরে পেকুয়া সদরে ধানের শীষ মনোনীত প্রার্থী এম বাহাদুর শাহ নৌকার প্রার্থী এডভোকেট কামাল হোসেনকে হারিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়। নির্বাচনের পর ইউপির গ্রাম আদালত পরিচালনায় ইউপি সদস্যদের প্রতি নির্ভর হয়ে পড়েন। যার কারণে দিনের পর দিন বিচার প্রার্থীদের হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। এছাড়াও প্রতিটি পাড়া মহল্লার গ্রামীণ অবকাঠামো বেশ নাজুক অবস্থায় ছিল। বিগত ৫ বছর আগের সংস্কারবিহীন ১২ সড়ক অদ্যবধি সংস্কার কাজ হয়নি। এমনকি চেয়ারম্যানের গ্রাম শেখের কিল্লা ঘোনা সড়ক দীর্ঘ ১০বছরে সংস্কার না করায় ক্ষোভ রয়েছে গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দাদের।

এছাড়াও বিগত কয়েকবছর ধরে বন্যার পানিতে সদর ইউনিয়নের মানুষ চরম দূর্ভোগ পোহালেও কার্যকর বেড়িবাঁধ তৈরিতে উদ্যোগ গ্রহণ না করায় সাধারণ জনগণের রোষানলে পড়েন বাহাদুর শাহ। যার কারণে এবারে ভোটে দীর্ঘদিনে দখলে রাখা চেয়ারম্যান পদটি পরিবর্তন হবে এমন মন্তব্য করেছেন স্থানীয় বেশ কয়েকজন ভোটার। এছাড়াও বিগত সময়ে বিএনপির পুরো অংশের ভোট একক ভাবে আদায় করতে পারলেও এবারে বিএনপি থেকে শক্তিশালী প্রার্থী হিসাবে ভোটের ময়দানে রয়েছে ইউসুফ রুবেল। তিনি যেকোন মূল্যে ভোটের ময়দানে থাকবেন এমন নিশ্চিয়তা সাধারণ ভোটারদের আশ্বস্থ করছেন।

পেকুয়া সদরের স্থানীয় ভোটার জাকের হোসেন, এনাম, নুরুল হক, মনছুর আলম বলেন, বর্তমান সরকারের অহরহ উন্নয়নের মাঝেও সদর ইউনিয়ন উন্নয়ন বঞ্চিত ছিল। গ্রামীণ অবকাঠামো খুব লাজুক অবস্থায় ছিল। যার কারণে এবারে বাহাদুর শাহর জনপ্রিয়তা অনেক কমেছে। ভোটের মাঠে যার প্রভাব পড়তে পারে এমন ধারণা তাদের।

বিএনপি নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে ভোটের মাঠে থাকা ইউসুফ রুবেল বলেন, আমি সদর ইউনিয়নের বাসিন্দাদের সেবা করার মনস্থির করে ভোটের ময়দানে নেমেছি। বিগত কয়েক বছর ধরে এলাকাবাসীর সুখ দুঃখে পাশে থেকে নিজ উদ্যোগে উন্নয়ন বঞ্চিত এলাকায় উন্নয়ন করে যাচ্ছি। তাতে এলাকাবাসীর সাড়াও পাচ্ছি যতেষ্ট। এবারে সুষ্ঠুভোট হলে ইনশাল্লাহ আমার জয় নিশ্চিত।

অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী তরুণ আইনজীবী রাশেদুল কবির বলেন, আমার পিতা দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে এ এলাকার জনপ্রতিনিধি হিসাবে জনগণের সেবা করে জনপ্রিয়তার শীর্ষে ছিলেন। আমি তার সন্তান হয়ে মানুষের সেবা মনস্থির করেছি। দীর্ঘ দুই বছর ধরে এলাকাবাসীর সুখ দুঃখে সময় দিয়েছি। বিভিন্ন সময়ে সাধারণ জনগণকে ত্রাণ সহায়তা দিয়েছি। করোনা মহামারীর সময়ে সাধারণ জনগণের কষ্ট ভাগ করে নিতে তাদের সাথে সুখ দুঃখে ছিলাম। বর্তমানে উন্নয়ন বঞ্চিত এ এলাকাটিতে পরিবর্তন চায় এলাকাবাসী। সাধারণ জনগণ ব্যাপকভাবে আমার পক্ষে সাড়া দেয়ায় ভোট করার মনস্থির করেছি। ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করলে পেকুয়া সদরকে মডেল ইউনিয়ন করতে চাই।

অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী প্যালেন চেয়ারম্যান মাহাবুল করিম বলেন, দীর্ঘ ১০ বছর ধরে সদর ৫নং ওয়ার্ডে ইউপি সদস্যের দায়িত্ব পালন করেছি। ইউপি কার্যালয়ে প্যানেল চেয়ারম্যান হিসাবে পুরো ইউনিয়নের বাসিন্দাদের সুখ দুঃখে ছিলাম। জনগণের চাওয়ায় চেয়ারম্যান পদে ভোট করছি। আশা করি জনগণের রায়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে জনগণ সেবা থেকে বঞ্চিত হবেনা ইনশাল্লাহ।

পাঠকের মতামত: