ঢাকা,শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

বান্দরবানে গুলিতে জনসংহতি সমিতির সংস্কার গ্রুপের ৬ সদস্য নিহত, আহত ৩

বান্দরবান সংবাদদাতা ::
বান্দরবানে একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপের হামলায় আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল জনসংহতি সমিতির সংস্কারপন্থী এমএন লারমা গ্রুপের জেলা সভাপতিসহ ৬ জন নিহত হয়েছে। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন আরো তিনজন।

নিহতরা হলেন- জনসংহতি সমিতি সংস্কারপন্থী গ্রুপের বান্দরবান জেলা শাখার সভাপতি রতন তঞ্চঙ্গ্য (৬৫) সাধারণ সম্পাদক প্রজিত চাকমা (৬২), ডেভিড মারমা (৫৫), জয় ত্রিপুরা (৪০), দীপেন ত্রিপুরা (৪২), মিলন চাকমা (৬০)। ঘটনার সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন নিরু চাকমা (৫০), বিদ্যুৎ ত্রিপুরা (৩৮) ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মেমানু মারমা (২৬)। আহতদের উদ্ধার করে বান্দরবান সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (৭ জুলাই) সকাল ৭ টার দিকে সদর উপজেলার রাজিবিলা ইউনিয়নের বাঘমারা বাজার পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর বাঘমারা বাজারের দোকানপাট বন্ধ হয়ে গেছে। আতঙ্কে স্থানীয়দের মধ্যে অনেকেই নিরাপদ জায়গায় চলে গেছে। থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে বাগমারা ও আশেপাশের এলাকায়। ঘটনার খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা সেখানে গিয়েছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য সেম্প্রু মারমা জানিয়েছেন, সকালে হঠাৎ করেই বাগমারা বাজার পাড়ার পশ্চিম দিক থেকে একটি সশস্ত্র গ্রুপ এলাকায় প্রবেশ করে সংস্কারপন্থী গ্রুপের সভাপতির বাসায় অতর্কিত হামলা চালায়। নিহতরা সবাই ওই ঘরেই অবস্থান করছিলেন। তবে হামলার পর বেশ কিছু সদস্য পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও তাদেরকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তবে নিহতদের মধ্যে রতন তংচঙ্গা ও তার সদস্য প্রজিত চাকমা ছাড়া অন্য কোন সদস্যদের কেউ চিনেন না বলে জানিয়েছেন।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রতন চাকমা বাসায় দেড় মাস আগে অন্যান্যরা অবস্থান নেয়। গত ১৩ জুন প্রথম সিঙ্গার বাসায় একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ হামলা চালিয়েছিল। এক মাসের মধ্যেই পুনরায় হামলার ঘটনায় সংস্কারপন্থীদের ৬ জন নিহত হয়। গত মার্চ মাসে রতন তংচংগ্যাকে সভাপতি করে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট বান্দরবানে জনসংহতি সমিতির সংস্কারপন্থী গ্রুপের কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটি গঠনের পর থেকেই জনসংহতি সমিতির সন্তু লারমা গ্রুপের সাথে তাদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব সাথেই আসছিল। পুলিশ ও স্থানীয়রা মনে করছেন এ দ্বন্দ্বের জের ধরেই এ হামলার ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম জানিয়েছেন, নিহতদের সবাই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বান্দরবানে জনসংহতি সমিতির সাথে মগ লিবারেশন পার্টির দীর্ঘদিন থেকে দ্বন্দ্ব চলে আসলেও এপ্রথম জনসংহতি সমিতির বিবদমান দু’গ্রুপের মধ্যে হামলার ঘটনা ঘটল।

পাঠকের মতামত: