কক্সবাজারে ২১ জাতিগোষ্ঠীর ব্যতিক্রমী উৎসব

কক্সবাজার প্রতিনিধি | রবিবার , ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ at ৮:০৪ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক :: কক্সবাজার সৈকতের লাবনী পয়েন্টের উন্মুক্ত মঞ্চে ২১ জাতিগোষ্ঠীর শিল্পীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে দুই দিনের উৎসব। ‘বহুভাষিক উৎসব–২০২৫’ শীর্ষক এই উৎসবের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সেল। গত শুক্র ও শনিবার অনুষ্ঠিত এই উৎসবে অংশ নিয়েছে চাকমা, মারমা, ম্রো, ত্রিপুরা, লুসাই, খুমি, বম, খেয়াং, চাক, পাংখোয়া, তঞ্চঙ্গ্যা, মণিপুরি, সাঁওতাল, মাহালী, গারো, হাজং, কোচ, রাখাইনসহ ২১টি সমপ্রদায়ের শিল্পীরা।

শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ্‌উদ্দিনের সভাপতিত্বে উৎসবের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ। এ সময় তিনি বলেন, আমরা এমন এক জাতি যারা মুক্তির জন্য বার বার লড়ে গেছে। বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে মায়ের ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে। একাত্তরে ৩০ লাখ শহিদ জীবন দিয়ে স্বাধীনতা এনেছে এবং ২৪–এ স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে গণতন্ত্রকে মুক্ত করেছে ছাত্র–জনতা।

তিনি বলেন, চলমান সময়টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশ একটি ক্রান্তিকালের মধ্যে যাচ্ছে। চারদিকে নানা ষড়যন্ত্র চলছে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে দেশকে গণতন্ত্রের পথে আনতে হবে। সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলার জন্য দেশের যে জাতি গোষ্ঠীগুলো রয়েছে, তাদের যে সংস্কৃতি তা তুলে ধরতেই এই আয়োজন। এতে প্রমাণিত হবে এ জাতি বহু জাতিগোষ্ঠীর ঐক্যবদ্ধ একটি জাতি। জেলা প্রশাসক বলেন, বিভিন্ন ধারার যে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র এই উৎসবের মাধ্যমেই তা বঙ্গোপসাগরের তীরে মিলিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে দুইদিনের এই ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর শিল্পীরা তদের মাতৃভাষায় গান ও নৃত্য পরিবেশন করেন। ১২টি ভিন্ন ভাষায় গাওয়া হয় একুশের কালজয়ী গান আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি।

বাংলা ভাষার মূল প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে বাংলা ভাষাসহ অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর মাতৃভাষাকেও শ্রদ্ধা জানাতে কঙবাজার সৈকতে প্রথমবারের মতো শিল্পকলা একাডেমি কর্তৃক এই উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে বসবাসরত বিভিন্ন ভাষাভাষীর ২১টি জাতিগোষ্ঠীর মাতৃভাষায় পরিবেশিত সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বৈচিত্র্যময় বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরা হবে। স্থানীয় ব্যক্তিদের পাশাপাশি সৈকত ভ্রমণে আসা পর্যটকরা উৎসব উপভোগ করেছেন।