ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

লামায় দাবানলে বাড়িঘরসহ ৩০০ একর রাবার বাগান পুড়ে ছাই

নিজস্ব প্রতিবেদক ::  বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নে ভয়াবহ দাবানলে পুড়ে গেছে কয়েক কিলোমিটার পাহাড় ও ৩ শত একর সৃজনশীল রাবার বাগান। ভয়াবহ এই দাবানলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কয়েক কোটি টাকা বলে দাবি করেছে রাবার বাগান মালিকরা।

গত শনিবার (২৮ মার্চ) থেকে সৃষ্ট এই দাবানল এখনো অব্যাহত রয়েছে। ইউনিয়নের দোছড়ি এলাকা থেকে শুরু হওয়া এই দাবানলে একে একে কালিরঝিরি, বনপুর ও নাছির রোডের দু’পাশের বিস্তৃর্ণ এলাকা পুড়ে যায়। আজ বৃহস্পতিবার (২ এপ্রিল) বিকেল নাগাদ এই দাবানল ফাঁসিয়াখালীর নাছির রোডের দু’পাশ বদরুলের বাগান এলাকায় জ্বলছিল বলে জানায় স্থানীয়রা।

লামা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার সাখাওয়াত হোসেন চকরিয়া নিউজকে বলেন, দাবানলটি কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত রয়েছে। বুধবার বিকেল ৪টা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত লামা ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। দাবানলটি এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আমরা অনেক চেষ্টা করে বনপুর বিজিবি বিওপি ক্যাম্পটি আগুনে পুড়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করেছি।

এদিকে গত রবিবার (২৯ মার্চ) একই ইউনিয়নের মিরিঞ্জা এলাকায় কয়েক কিলোমিটার পাহাড়ি জায়গা ভিন্ন একটি দাবানলে পুড়ে গেছে। তখন আমরা অনেক চেষ্টা করে মিরিঞ্জা গ্রামটি আগুনে পুড়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করি। দাবানলে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বনপুর বাজারের আশপাশের মোহাম্মদিয়া ট্রি প্লান্টেশনের ৩ শত একর রাবার বাগান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

মোহাম্মদিয়া ট্রি প্লান্টেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিসুর রহমান চকরিয়া নিউজকে জানান; মোহাম্মদিয়া গ্রুপের মইনুল ইসলামের রাবার বাগান, রাণী রাবার বাগান, এরশাদের রাবার বাগান, মঞ্জুর মৌলভির রাবার বাগানসহ প্রায় তিনশত একর রাবার বাগান পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আমরা জানতে পেরেছি দোছড়ি এলাকার জনৈক বাগান মালিক নিজের বাগানে আগুন লাগালে এই দাবানলের সূত্রপাত হয়। আমরা আমাদের ক্ষয়ক্ষতি উল্লেখ করে লামা থানায় অভিযোগ করব।

বনপুর এলাকার স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, স্থানীয় লোকজন এগিয়ে না এলে বেশ কয়েকটি গ্রাম দাবানলে পুড়ে যেত। আমরা প্রাণপণ চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করি। গত দুই বছর আগে এইরকম পাহাড়ি দাবানলে মিরিঞ্জা গ্রামের ১২টি বসতবাড়ি পুড়ে গিয়েছিল।

স্থানীয়দের পাশাপাশি আগুন নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখেন ইয়াংছা আর্মি ক্যাম্পের সেনা সদস্যরা, ত্রিশডেবা বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা, কুমারি পুলিশ ক্যাম্পের সদস্যরা। বনপুর বিজিবি ক্যাম্পটি বর্তমানে সম্পূর্ণ নিরাপদ। ফায়ার সার্ভিস চলে গেলেও এলাকার লোকজন আগুন নেভানোর কাজে ব্যস্ত আছে।

ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান জাকের হোসেন মজুমদার চকরিয়া নিউজকে বলেন, প্রতিবছরই শুষ্ক মৌসুমে এই ধরনের দাবানল লাগে। জনগণের বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়। যারা নিজেদের বাগানের চারপাশে ফায়ার রোড না করে পাহাড়ে আগুন দেয় তাদের আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন।

পাঠকের মতামত: