ঢাকা,রোববার, ৫ মে ২০২৪

বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে মারধর-গোলাগুলি ৩৫ জনকে আসামি করে মামলা, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি

চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি ::

চকরিয়ার বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে নিয়ম না মেনে বন্ধের দিন ইজারাদার কর্তৃক দর্শনার্থী টিকিট বিক্রি, প্রবেশে বাধা দেওয়ার উস্কানি দিয়ে বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙচুর, পার্ক কর্মকর্তাকে মারধর ও গোলাগুলির ঘটনায় মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার পার্কের তত্ত্বাবধায়ক কে এম মোর্শেদুল আলম বাদী হয়ে উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা করেন। এতে প্রধান আসামি করা হয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীর ছোটভাই নাছির উদ্দিনকে।

মামলার আর্জিতে ৯জনকে আসামি করা হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে একনম্বর আসামি করা হয়েছে পার্কের গেইট ইজারাদার নাছির উদ্দিন। তিনি উপজেলার ফাসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীর ছোটভাই। অভিযুক্ত অন্যরা হলেন ইজারদার পক্ষের অংশিদার ফাসিয়াখালী ইউনিয়নের বাসিন্দা রফিক উদ্দিন মেম্বার, সহযোগি ডুলাহাজারা ইউনিয়নের উলুবনিয়া গ্রামের সজিব, আরাফাত, মনুর আলম, জসিম উদ্দিন, সাইফুল ইসলাম, মিনহাজ উদ্দিন মিনু ও জিয়াউল হক।

সাফারি পার্কে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় আদালতে মামলা রুজু করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার বাদি পক্ষের কৌশলী অ্যাডভোকেট মাঈন উদ্দিন। তিনি বলেন, আদালতের বিচারক বাদির নালিশী মামলার অভিযোগটি আমলে নিয়ে তাৎক্ষনিকভাবে অভিযুক্ত আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেছেন। একই সাথে আসামিদের গ্রেফতারের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য আদালত চকরিয়া থানা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার এজাহারে বাদি পার্কের রেঞ্জ কর্মকর্তা মোরশেদুল আলম জানান, বাংলাদেশ গেজেটমুলে সরকারি ভাবে সপ্তাহের প্রতি মঙ্গলবার সাফারি পার্ক বন্ধ রাখার নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু ঘটনার দিন মঙ্গলবার (১৯ জুন) দুপুরে পার্কের ইজারাদার নাছির উদ্দিন, রফিক উদ্দিন এবং সহযোগি সজিবসহ ১০-১২জনের একটি দল অতর্কিত পার্কের দুই গেইটের তালা ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে ব্যাপক তান্ডব চালায়। ঘটনার সময় তিনি (রেঞ্জ কর্মকর্তা) বাঁধা দিতে গেলে তাকে এবং পার্কের কর্মচারী খোরশেদ আলীকে মারধরে করে হামলাকারীরা। ঘটনার এক পর্যায়ে রেঞ্জ কর্মকর্তার পকেট থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা লুটে নেয়।

মামলার আর্জিতে বাদি আরও দাবি করেন, ঘটনার সময় হামলাকারীরা পার্কের দুইটি গেইটের তালা ভেঙ্গে দেয়ার পাশাপাশি বেশ কটি প্রাণীর মুরাল ভাংচুর। ওইসময় ভীতি ছড়াতে তাঁরা পার্কের বাইরে অন্তত ৮ থেকে ১০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে। ঘটনার এক পর্যায়ে পার্কের সরকারি সম্পদের সুরক্ষা ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরাপত্তার স্বার্থে সাফারি পার্কের কর্মীরা পাঁচ রাউন্ড পাল্টা গুলি ছুঁেড়ন। হামলার এ ঘটনায় পার্কের সরকারি সম্পদের ব্যাপক ক্ষতিসাধন, সরকারি বন্ধের দিনে পার্কের গেইট খোলার নামে অরাজকতা তৈরী ও পার্কের কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে জিন্মি করে সরকারি কর্তব্য পালনে বাঁধা দেয়া হয়েছে বলে মামলার আর্জিতে অভিযোগ তুলেন বাদি।

চকরিয়া থানার ওসি মো.বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, সাফারি পার্কের হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় আদালতে মামলা হয়েছে বলে শুনেছি। তবে গতকাল রাত আটটা পর্যন্ত আদালতের কোন কাগজপত্র থানায় পৌঁছেনি। তিনি বলেন, পরবর্তী সময়ে আদালতের আদেশ মতে কাগজপত্র পেলে পুলিশের পক্ষ থেকে এব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

 

 

পাঠকের মতামত: