বান্দরবান প্রতিনিধি :::
পার্বত্য জেলা বান্দরবানে স্থানীয় সরকার বিভাগ (এলজিইডি) প্রায় দুইশ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ থমকে গেছে। নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন চাকমা’র অপসারণের দাবীতে স্থানীয় ঠিকাদারেরা চলমান উন্নয়ন কাজগুলো বন্ধ করে দেয়ায় যথা সময়ে কাজ সম্পন্ন হওয়া নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।
উল্লেখ্যযোগ্য কাজ গুলোর মধ্যে রয়েছে- ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে লামা উপজেলায় বাইন্নাছড়া-গজালিয়া সড়ক, ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে কালাঘাটা-তারাছা সড়ক, ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি-তুমব্রু সড়ক, প্রায় ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে রুমা উপজেলার পলিকা সড়কের ২টি সেতু নির্মাণ, ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে গোয়ালি খোলা সাঙ্গু সেতু নির্মানসহ প্রায় ২শ কোটি টাকার কাজ।
স্থানীয় বাসিন্দা সাথোয়াত প্রু এ প্রতিবেদককে জানান- সদর উপজেলার গোয়ালিখোলা সেতু নির্মাণের কাজ এমনিতেই ধীরগতিতে হচ্ছে। তারমধ্যে প্রকৌশলী সঙ্গে বিরোধের কারণে হঠাৎ করে কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এমনভাবে চলতে থাকলে আগামী দশ বছরেও সেতুটি নির্মিত হবেনা।
স্থানীয় ঠিকাদার সমিতির উপদেষ্টা মশিউর রহমান মিঠুন অভিযোগ করে বলেন, নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন চাকমা কোনো কারণ ছাড়াই ঠিকাদার রফিক আহমদ’কে মারধর করেছে। উন্নয়ন কাজের আরো অনেক ঠিকাদারকে ফোন করে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে এবং এলজিইডি বিভাগে কিভাবে কাজ করবে দেখিয়ে নেয়ার হুমকি ধমকি দিচ্ছে। নির্বাহী প্রকৌশলী চাচ্ছেনা চলমান উন্নয়ন কাজগুলো দ্রুত সম্পন্ন হোক। বাধ্য হয়েই নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম-তুমব্রু সীমান্ত সড়ক বিভিন্ন উন্নয়ন কাজগুলো বন্ধ রেখেছি। প্রকৌশলীকে অপসারণ না হওয়ায় কাজ বন্ধ থাকবে।
উন্নয়ন কাজের ঠিকাদার সৌরভ দাশ শেখর বলেন, আমার বাইন্নাছড়া-গজালিয়া সড়ক নির্মাণ চলমান ১৫ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। শুধু আমি নয়, প্রায় দুইশ কোটি টাকা চলমান উন্নয়ন কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন ঠিকাদাররা। নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়া পর্যন্ত সবধরণের উন্নয়ন কাজ বন্ধ রাখার নিদ্ধান্ত নিয়েছে ঠিকাদাররা।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে এলজিইডি’র লামা উপজেলা প্রকৌশলী মোবারক হোসেন বলেন, জেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে বিরোধের জের ধরে বাইন্নাছড়া-গজালিয়া সড়ক’সহ চলমান অনেক উন্নয়ন কাজই বন্ধ করে দিয়েছেন ঠিকাদারেরা।
জেলা এলজিইডি বিভাগের সিনিয়র প্রকৌশলী জিল্লুর রহমান বলেন, উন্নয়ন কাজ চলমান আছে। গতকালও নাইক্ষ্যংছড়িতে একটি ব্রীজের ঢালায় হয়েছে। উন্নয়ন কাজের বন্ধের কোনো খবর আমাদের কাছে নেই। ব্যক্তি স্বার্থে কেউ কাজ বন্ধ রাখলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রসঙ্গত: গত’মঙ্গলবার দুপুরে মেসার্স আকতার ট্রেডাসের লাইসেন্সের বই সংগ্রহ করতে লামা উপজেলার বাসিন্দার ঠিকাদার রফিক আহমেদ’কে জেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন চাকমা অফিস সহকারীর কম্পিউটার রুমে অযথা ঘুষি এবং চর-থাপ্পর মারেন। এ ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করে উন্নয়ন কাজ বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন ঠিকাদার সমিতি। এছাড়াও নির্বাহী প্রকৌশলীর অপসারণের দাবীতে এলজিইডি প্রধান প্রকৌশলী, পার্বত্য প্রতিমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেন ঠিকাদাররা।
পাঠকের মতামত: