ঢাকা,সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

পেকুয়ায় হেলে পড়েছে চারতলা ভবন ঝুঁকিতে পাশের তিন তলা ভবন!

মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া ::
কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের মিয়া পাড়া গ্রামে একটি চারতলা ভবন হেলে পড়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে পাশের তিনতলা ভবনের মালিক। হেলে পড়া ভবনটি ভেঙ্গে অপসারণ না করায় যে কোন মূহুর্তে পাশের তিন তলা ভবনের উপর হেলে পড়ে মারাত্মক দূর্ঘটনার আশংকা করছেন স্থানীয়রা। এ ঘটনায় হেলা পড়া চারতলা ভবনের মালিকের বিরুদ্ধে পেকুয়া উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সরকারী দফতরে তিনতলা ভবনের মালিক লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেনা। এদিকে চারতলা ভবন হেলে পড়ায় ভয়ে ও আতংকে তিন তলা ভবনে বসবাসরত ভাড়াটিয়ারা বাসা ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে। এর ফলে চরম আর্থিক ক্ষতিরমূখে পড়েছে তিনতলা ভবনের মালিক মো: ইউনুচ। গত ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ইংরেজী তারিখে তিন তলা ভবনের মালিক পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে হেলে পড়া ভবনের মালিক আজিজুল হকের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পেকুয়া ইউএনও অফিস থেকে সেটি ১৮ ডিসেম্বর পেকুয়া থানা পুলিশের কাছে পাঠানো হয়।

পেকুয়ার ইউএনওর কাছে দায়েরকৃত অভিযোগের সূত্রে জানা গেছে, পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড়ের মিয়া পাড়া গ্রামের নুরুল ইসলামের পুত্র মোহাম্মদ ইউনুচ তার নিজস্ব জমিতে বিগত ২০১৮সালে প্রকৌশলীর প্লান অনুসারে ১২ ফ্লাটের তিনতলা বিশিষ্ট একটি ভবন তৈরী করেন। ভবন তৈরীর সময় তিনি আল আরফা ইসলামী ব্যাংকের পেকুয়া শাখা থেকে ২০লাখ টাকা ও ডাচ-বাংলা ব্যাংক থেকে ৬ লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। যা তিনি এখনো পরিশোধ করতে পারেনি। এরই মধ্যে পাশের ব্যবসায়ী আজিজুল হকের মালিকানাধীন চারতলা ভবন তার তিনতলা ভবনের উপর হেলে পড়ে তিনি চরম বিপাকে পড়েছেন।
ভূক্তভোগী মোহাম্মদ ইউনুচ জানিয়েছেন, পেকুয়া মিয়া পাড়ায় আমার ভবনের এর সাথে লাগোয়া চার তলা বিশিষ্ট ভবন তৈরী করেছেন শিলখালী ইউনিয়নের পেঠান মাতবর পাড়া গ্রামের মোহাম্মদ সোবহানের ছেলে ও পেকুয়া বাজারের ব্যবসায়ী আজিজুল হক। ভবন তৈরী করার সময় মাটি দিয়ে গর্ত ভরাট করে পাইলিং করেনি এবং ফাউন্ডেশনে সিসি ঢালাই না করে তৈরীর কারণে আজিজুল হকের চারতলা ভবনটি ধেবে গিয়ে আমার তিনতলা ভবনের উপর গত দুই মাস পূর্বে হেলে পড়েছে। যে কোন মুহুর্তে আজিজুল হকের চারতলা ভবন আমার ভবনের উপর পতিত হয়ে মারাত্মক দূর্ঘটনা সংঘঠিত হতে পারে। একারণে আমার ভাড়াটিয়াগণ বাসা ছেড়ে দিয়ে চলে যাওয়ায় মাসিক ৫২হাজার টাকার ভাড়া প্রাপ্তি থেকে আমি বঞ্চিত হচ্ছি। আমার ভাড়াটিয়ারা চলে যাওয়াতে ব্যাংকের কিস্তি পরিশোধ করতে পারছি না। ফলে ব্যাংকের পক্ষ থেকে আমাকে প্রতিনিয়ত টাকার জন্য চাপ দিচ্ছে। আজিজুল হককে উক্ত ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের তাগাদা দিলে তিনি কর্ণপাত করছেনা। উল্টো আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে।

জানা যায়, ভবন হেলে পড়ার খবর পেয়ে পেকুয়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা মো: শফিউল আলম ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং হেলে পড়া ভবন থেকে লোকজনকে সরে যাওয়ার জন্য নির্দেশনা দেন।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা সরেজমিনে পেকুয়া মিয়া পাড়া গ্রামে হেলে পড়া চারতলা ভবন পরিদর্শন করি। ভবন হেলে পড়া সত্যতা পাওয়া গেছে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি ভেঙ্গে ফেলার জন্য সংশ্লিষ্ট মালিক আজিজুল হককে নির্দেশনা দিয়েছি। এরপরও কথা না শুনলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অভিযোগের ব্যাপারে হেলে পড়া ভবনের মালিক আজিজুল হকের বক্তব্য জানার জন্য যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার পাশের তিন তলা ভবনের মালিক ইউনুচ পেকুয়া ইউএনও অফিসে আমার বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি পেকুয়া থানা পুলিশ তদন্ত করছেন।

পাঠকের মতামত: