ঢাকা,শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

যে বিদ্যালয়ে ভর্তির আগে সাঁতার জানতে হয়

pic-25-09-16-3 মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি ঃ

বহুদুর পথ হেঁটে বিদ্যালয়ে যেতে হয় এমন কথা আমরা অনেক শুনেছি। কিন্তু আজ আপনাদের জানাব এমন এক বিদ্যালয়ের কথা যেখানে শিক্ষার্থীরা ভর্তি হওয়ার আগে সাঁতার জানতে হয়। স্কুলটি হল বান্দরবানের লামা উপজেলার সদর ইউনিয়নের এম. হোসেন পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। যেখানে ছোট ছোট শিশুরা প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হয়ে বিদ্যালয়ে যাওয়া আসা করে।

জানা গেছে, লামা উপজেলার এম হোসেন পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি সম্প্রতি জাতীয়করণ হয়েছে। স্কুলটি উপজেলার লামা সদর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের দূর্গম এলাকা পোপা মৌজায় অবস্থিত। তিন দিক থেকে পোপা খালটি বিদ্যালয়কে ঘিরে রেখেছে। বিদ্যালয়টি লামা সদর ইউনিয়নে হলেও পার্শ্ববর্তী রুপসীপাড়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ছিচাখইন পাড়া থেকে প্রায় অর্ধ শতাধিক শিক্ষার্থী স্কুলে আসে। ২৯৭নং পোপা মৌজা ও ২৯৪নং দরদরী মৌজার মাঝখানে ছোট একটি খাল দ্বারা বিভাজিত। পাহাড় থেকে নেমে আসা পানির কারণে পোপা খালটি প্রায় সময় ভরপুর থাকে। পাহাড়ি খাল হওয়ায় খালটিতে স্রোত অনেক বেশী। তাছাড়া বর্ষা মৌসুমে খালটিতে স্রোত আরো বেড়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাওয়া আসা প্রায় বন্দ হয়ে যায়। যার ফলে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কমে যায়।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এম. জিয়াবুল হক বলেন, খালের ওপারের মানুষের পারাপারের কোন মাধ্যম নেই। শেষ অবলম্বন হচ্ছে সাঁতার। সাঁতার না জানলে এপার থেকে ওপারে যাওয়া আসা বন্দ হয়ে যায়। স্কুলের শিক্ষার্থীরা গায়ের জামা খুলে সাঁতার দিয়ে খালটি পার হয়ে তারপর স্কুলের ইউনির্ফম পরে বিদ্যালয়ে আসে। তাই ছিচাখইন পাড়া বসবাসকারী মানুষের দুঃখ লাঘবের জন্য এবং শিক্ষার্থীদের জীবনের ঝুঁকি থেকে রেহাই দেয়ার লক্ষ্যে মানবিক কারণে পোপা খালের উপর একটি ছোট ব্রিজ নির্মাণ করা প্রয়োজন।

লামা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার সেন জানান, শিক্ষার্থীরা যাতে নির্ভয়ে বিদ্যালয়ে আসতে পারে এবং মান সম্মত প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পোপা খালের উপর জনস্বার্থে একটি ছোট ব্রিজ নির্মাণের বরাদ্দ দেওয়ার জন্য বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এলাকাবাসি।

লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার খালেদ মাহমুদ বলেন, বিষয়টি আসলে দুঃখজনক। পাহাড়ি এলাকা হিসেবে এমনিতে লামা উপজেলা শিক্ষায় পিছিয়ে আছে। তারপর এইরকম সমস্যা গুলো শতভাগ প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়নে প্রধান অন্তরায়। দ্রুত সমস্যাটি সমাধানে লক্ষে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করা হবে।

 

পাঠকের মতামত: