ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ দেশে গরিবের কোনো বিচার নাই : তনুর বাবা

রেরররররররররররসি এন ডেস্ক:
ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনুর হত্যার একমাস হয়ে গেলেও, কোনো অপরাধী গ্রেপ্তার হয়নি। তবে তদন্তের এক পর্যায়ে সিআইডি জানায় যে, তনুকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয় এবং হত্যাকা-ে একাধিক ব্যক্তি অংশ নেয়।
গত ২০শে মার্চ রাতে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট এলকায় তনুর লাশ পাওয়া যায়। তনুর লাশ কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টের ভিতরের জঙ্গলে পাওয়া গেলেও, সেখানে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন করা হয়নি। প্রথমে লাশ কুমিল্লা সিএমএইচ-এ নেয়া হয়, তারপর লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়। প্রথম দফা ময়নাতদন্তে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না হওয়ায়, লাশ তুলে দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত করা হয়। দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন এখনো দেয়া হয়নি। আর প্রথম দফায় তো হত্যাকা-ের কারণই নির্ধারণ করা যায়নি।
সিআইডি মামলার তদন্তে এ পর্যন্ত কয়েকজন সেনা সদস্য এবং এক সেনা কর্মকর্তার ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে ময়নাতন্তকারী চিকিৎসকদের। এছাড়া তনুর বাবাসহ পরিবারের সদস্য এবং ঘনিষ্ঠ কয়েকজন বন্ধুকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
একমাসের মাথায় তদন্তকারী সংস্থা কুমিল্লা সিআইডি-র বিশেষ পুলিশ সুপার নাজমুল করিম জানান, ‘‘আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে, তনুকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকা-ে অন্তত তিন-চারজন অংশ নিয়েছিল।’’ তবে তাদের ব্যাপারে বিস্তারিত আর কোনো তথ্য প্রকাশ করতে রাজি হননি সিআইডি-র এই কর্মকর্তা।
বলা বাহুল্য, তনুর বাবা ইয়ার হোসেন এই তদন্ত নিয়ে চরম হতাশ। তিনি বলেন, ‘‘ধর্ষিত তনুর লাশ পাওয়া গেছে ক্যান্টনমেন্টর ভিতরে। যা ঘটেছে ওখানেই ঘটেছে। আমি আমার সন্দেহের কথা সুনির্দিষ্টভাবে সিাআইডি-কে জানিয়েছি। অথচ তারপরও কেন অপরাধীদের আটক করা হচ্ছে না, তা আল্লাহ-ই জানেন।’’
ক্ষোভের সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘এ দেশে গরিবের কোনো বিচার নাই। ময়নাতদন্ত রিপোর্টের খবর নাই। একমাস হয়ে গেল আসামি গ্রেপ্তারের খবরও নাই। এখন আমি আর কী করতে পারি? বিচার তাই আল্লাহ-র হাতে ছেড়ে দিয়েছি।’’
তনুর বাবা আরও বলেন, ‘‘আমি জানি না বিচার পাব কিনা। আপনারাই বা লিখে কী করবেন! তনুর বাবা ইয়ার হোসেন কুমিল্লা ক্যান্টনমেটে সিভিল চাকরি করেন। ঘটনার রাতে তনু তাঁদের ক্যান্টনমেন্টের বাসা থেকে ক্যান্টনমেন্টের ভেতরেই আরেকটি বাসায় ছাত্র পড়াতে গিয়েছিলেন। সেই রাতেই ক্যান্টমনেন্টের ভিতরে তাঁর লাশ পাওয়া যায়।
তনু হত্যাকা-ের পর বিচারের দাবিতে সারাদেশে ব্যাপক প্রতিবাদ-বিক্ষোভ হলেও, এখন আর কিছু নেই বললেই চলে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে অনলাইন ব্যবহারকারীদেরও তনু হত্যার বিচার দাবিতে এখন আর তেমন সক্রিয় দেখা যায় না। আশঙ্কা, হয়ত এভাবেই তনু হত্যার ঘটনাটাও ধামাচাপা পড়ে যাবে।-ডিডাব্লিউ।

পাঠকের মতামত: