ঢাকা,শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪

চকরিয়া পৌরসভার তরছপাড়া চৌমুহনীতে বিট কমিউনিটি পুলিশিং সমাবেশ অনুষ্ঠিত 

কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ড তরছপাড়া এলাকায় নানাবিধ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে স্থানীয় সর্বস্থরের জনগণে অংশ গ্রহণে বিট কমিউনিটি পুলিশিং সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার (২০ এপ্রিল) বিকালে স্থানীয় তরছপাড়া চৌমুহনী স্টেশনে সম্মিলিত সামাজিক সংঘ আয়োজিত বিট কমিউনিটি পুলিশিং সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী।
চকরিয়া পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিট কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সভাপতি এম নুরুস শফির সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন সহকারী পুলিশ সুপার (চকরিয়া সার্কেল) মো. রাকিব উর রাজা।
সম্মিলিত সামাজিক সংঘের সদস্যসচিব ছাত্রলীগ নেতা তাজ উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিট কমিউনিটি পুলিশিং সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন চকরিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) মোহাম্মদ ইরফান উদ্দিন, চকরিয়া পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডেে কৃতিসন্তান চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) মোহাম্মদ রিদুয়ানুল ইসলাম, চকরিয়া থানার ওসি তদন্ত অরুণ কুমার চৌধুরী, চকরিয়া থানার অপারেশন অফিসার এসআই রাজীব চন্দ্র সরকার, চকরিয়া পৌরসভার নারী কাউন্সিলর রাশেদা বেগম, সমাজ সেবক মাস্টার গিয়াস উদ্দিন, মাস্টার আবু শোয়াইব, চকরিয়া পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড বিট কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাজিফুল মোস্তফা রাজিফ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম দুদু মেম্বার, মাস্টার নুরুল আলম, সম্মিলিত সামাজিক সংঘের আহবায়ক এডভোকেট মনোহর আলম, সাবেক ছাত্রনেতা দিদারুল ইসলাম দিদার, সাবেক যুবলীগের সভাপতি প্রবাসী আবদুল রহিম, প্রবাসী আইয়ুব আনছারী, প্রবাসি নুরুল ইসলাম প্রমুখ।
সমাবেশে সম্মিলিত সামাজিক সংঘের নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় এলাকাবাসী
বলেন, চকরিয়া পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় মাদকের রমরমা বাণিজ্য চলছে। বিশেষ করে তরছপাড়া এলাকায় মাতামুহুরী নদীর তীরের বালু পয়েন্ট ঘিরে নানাধরণের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বেড়ে চলছে। এই অবস্থায় এলাকায় নিত্যদিন মাদকসেবি বাড়ছে, পাশাপাশি মাদকের টাকা জোগাড় করতে গিয়ে এলাকায় চুরি ছিনতাই এবং দখলবেদল বেড়ে চলছে। উঠতি বয়সের কতিপয় যুবসমাজ এই অপরাধপ্রবণতার সঙ্গে জড়িয়ে এসব অপর্কম করে যাচ্ছে। এই অবস্থার কারণে এলাকার শান্ত পরিবেশ ঘোলাটে হচ্ছে। আমরা এই অবস্থা থেকে নিস্তার চাই। এই এলাকার  কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রম জোরদার চাই।
সমাবেশে সম্মিলিত সামাজিক সংঘের অভিযোগের জবাবে এএসপি রাকিব উর রাজা বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিতে কাজ করছে। আমরা রাস্ট্রের সামাজিক নিরাপত্তা ও জনগণের মাঝে সুরক্ষা সেবা জোরদার করতে বদ্ধপরিকর। তাই আজকের সমাবেশে কথা দিচ্ছি, আগামীকাল থেকে চকরিয়া পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডে সবধরনের অপরাধপ্রবণতা বন্ধ থাকবে। মাদক বাণিজ্য, সেবন, চুরি ছিনতাই দখলবেদখল কাজে যারাই জড়িত থাকুক তিনি যতবড় শক্তিশালী বা দাপটশালী হোক কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। মনে রাখবেন অপরাধী খারাপ মানুষকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।
তিনি বলেন, এলাকায় সর্বশ্রেণীর নাগরিকের কাছে আমাদের বক্তব্য হচ্ছে, আপনি সরাসরি আমাকে অথবা থানার ওসি, ওসি তদন্ত ও অপারেশন অফিসারের কাছে আপনার এলাকার খারাপ মানুষের তথ্য দিন। আপনার পরিচয় গোপন থাকবে। অপরাধীকে শায়েস্তা করার দায়িত্ব পুলিশের। এএসপি রাকিব আরও বলেন, আমি আগামীতে ঠিক একইস্থানে আরও একটি সমাবেশ করবো। সেইদিন আপনাদের ( জনগণের) মতামত নেব, পুলিশ কী আপনাদের এলাকার আইনশৃঙ্খলা উন্নয়নে দায়িত্ব পালন করেছেন কীনা। আশাকরি এলাকাবাসী সবাই থানা পুলিশের সেবার উপর আস্থা রাখতে পারবেন।
সমাবেশে প্রধান অতিথি চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী বলেন, এলাকাবাসী অভিভাবক মহল সবাইকে বলবো, আপনার সন্তানের খোজ-খবর রাখবেন। সে লেখাপড়া বাদ দিয়ে খারাপ কাজে জড়িত হচ্ছে বা কোন খারাপ মানুষের সঙ্গে চলাফেরা করছে কীনা দেখুন। অভিভাবকরা চাইলে সন্তানকে সুপথে ফেরাতে পারে। তবে আপনি ব্যর্থ হলে এলাকার সচেতন নাগরিক বা জনপ্রতিনিধির সহযোগিতা নিন। সম্ভব না হলে আইনের আশ্রয় নিন।
মেয়র আলমগীর চৌধুরী বলেন, আমরা এলাকার  অভিভাবক ও অপরাধে জড়িয়ে পড়া যুবসমাজকে বুঝানোর জন্য সমাবেশ করছি। শেষবারের মতো সুযোগ দিচ্ছি। তারপরও অবস্থার পরিবর্তন না হলে  আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা নিয়ে অপরাধপ্রবণতার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সেইদিন কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তাই অনুরোধ করবো, যারা এলাকায় নানাবিধ অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে আছো সময় থাকতে সুপথে ফিরে আসো। জীবনকে বদলে দাও। পাশাপাশি মাদক সেবন, মাদক বিক্রি, চুরি ছিনতাই দখলবেদখল থেকে এলাকাবাসীকে অভিশাপমুক্ত করো। এটাই আমাদের শেষ অনুরোধ। ##

পাঠকের মতামত: