ঢাকা,মঙ্গলবার, ৭ মে ২০২৪

নিষেধাজ্ঞার মাঝেও সড়কে বেড়েছে যানবাহন, কিছু স্থানে জটলা, সংক্রমণের ঝুঁকি

নগরীতে করোনোকালে গণপরিবহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও রাস্তায় বিভিন্ন যানবাহনের উপস্থিতি সম্প্রতি বেড়েছে। বিশেষ করে গার্মেন্টস ও মার্কেটগুলো খুলে দেওয়ার ঘোষণার পরপরই সীমিত আকারে সড়কে গণপরিবহনের পাশাপাশি ব্যক্তিগত যানবাহন ও অ্যাপভিত্তিক বিভিন্ন রাইড শেয়ার চলাচল শুরু করেছে। কিছু কিছু জায়গা রীতিমতো জটলা ছিল। এতে করে বেড়েছে সংক্রমণ ঝুঁকিও। গত কদিনে বিভিন্ন যানবাহনের বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য মামলা ও জরিমানাও হচ্ছে ট্রাফিক পুলিশে। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ কমিশনার (উত্তর ট্রাফিক বিভাগ) মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ  বলেন, লকডাউনের মধ্যে ইদানীং সড়কে বিভিন্ন যানবাহন নামছে। সরকারি নিষেধাজ্ঞার পরও এসব যানবাহনের অবৈধভাবে চলাচল, গাড়ির ফিটনেসসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় বিভিন্ন যানবাহন চালক ও মালিকদের মামলা ও জরিমানা করা হচ্ছে। বর্তমানে ট্রাফিক পুলিশের মামলা ও জরিমানা আদায়ের হার স্বাভাবিক সময়ের মতো হচ্ছে বলে জানান তিনি।
ট্রাফিক পুলিশের উত্তর বিভাগের টিআই মো. মহিউদ্দিন আজাদীকে বলেন, গার্মেন্টস ও মার্কেটগুলো খোলা রাখার ব্যাপারে সরকারি নির্দেশনার পরই সড়কে সীমিত আকারে যানবাহন চলাচল করছে। বিভিন্ন রাইড শেয়ারগুলোও রাস্তায় দেখা যাচ্ছে। এসব যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ কাজ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
পুলিশের তথ্যে, চলতি মাসের শুরুতে উল্লেখযোগ্য কোনো মামলা ও জরিমানা না থাকলেও গত শনিবার (৯ মে) শুধু উত্তর ট্রাফিক বিভাগে ১ লাখ ৩৭ হাজার টাকা জরিমানা, ৪৭টি মামলা ও ৭৪টি যানবাহন টোঁ করা হয়েছে। উত্তর ও বন্দর ট্রাফিকের দুই জোন মিলে ৬২টি মামলা ও ২ লাখ ৩ হাজার টাকা জরিমানার পাশাপাশি ১২৫টি যানবাহন টোঁ করা হয়েছে। ১০ মে ৫৩টি মামলা, ২ লাখ ৪৫ হাজার ৫’শ টাকা ও ১১০টি যানবাহন টোঁ করা হয়েছে।
গতকালও নগরীর প্রবর্তক মোড়, টাইগার পাস, ষোলশহর, জিইসি মোড়, আগ্রাবাদসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা বিভিন্ন যানবাহন আটক করে মামলা ও জরিমানা করতে দেখা গেছে। বিশেষ করে মোটরসাইকেল ও ব্যক্তিগত যানবাহনের চলাচল উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। এছাড়া গার্মেন্টস শ্রমিকদের আনা-নেয়ার কাজে নিয়োজিত বিভিন্ন বাস, মিনিবাসের পাশাপাশি টেম্পো বিভিন্ন গন্তব্যে যাত্রী টানছে। নগরীর ফ্লাইওভারগুলোতে এতদিন লকডাউনের কারণে যেখানে যানবাহন শূণ্য ছিল সেখানে গত কয়েকদিন ধরে যানবাহন চলাচলের পুরোনো রূপে ফিরেছে। এতে করে বেড়েছে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি।
সিএমপির ট্রাফিক বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে নগরীতে ট্রাফিক পুলিশের নির্ধারিত জনবলের মধ্যে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ যানজটসহ ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত রয়েছে।
ডিসি শহীদুল্লাহ বলেন, করোনো পরিস্থিতিতে যানবাহনের স্বাভাবিক চলাচল বন্ধ থাকায় কিছু কিছু পয়েন্টে জনবল কমানো হয়েছে। তবে নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে স্বাভাবিক সময়ের মতো ট্রাফিক পুলিশের জনবল নিয়োজিত রয়েছে।
বৃহত্তর চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব উজ্জল বিশ্বাস বলেন, পরিবহন শ্রমিকদের অনেকেই যারা নগরীর ভোটার নয়, তারা ত্রাণ কিংবা আর্থিক সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন থাকলেও তাদের পক্ষ থেকে তেমন সহায়তা আসছে না। ফেডারেশনসহ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনগুলোর কল্যাণ তহবিল থেকেও শ্রমিকেরা সহায়তা পাচ্ছে না। শ্রমিকেরা আর কতদিন ঘরে বসে থাকবে। বেঁচে থাকার তাগিদে তাই তারা বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমেছে।
জানা গেছে, গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনো আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার পর বিভিন্ন স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দেয়ার পাশাপাশি ২৬ মার্চ থেকে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। পরবর্তীতে আরও কয়েক দফা সময় বাড়িয়ে আগামী ১৬ মে পর্যন্ত গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়। তবে এ নিষেধাজ্ঞার বাইরে রাখা হয়েছে জরুরি সেবায় নিয়োজিত বিভিন্ন যানবাহন।

পাঠকের মতামত: