ঢাকা,শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

‘জঙ্গিরা জুমার নামাজ পড়েই সিএমপির পুলিশ বক্সে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল’ গ্রেপ্তার তিন জঙ্গির স্বীকারোক্তি

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি ::  চট্টগ্রাম ষোলশহর দুই নম্বর গেইটের সিএমপির ট্রাফিক পুলিশ বক্সে বোমা হামলার ঘটনায় নব্য জেএমবির তিন জঙ্গি সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।

তাদের কাছ থেকে ৩টি মোবাইল, জিআই পাইপের কাটা অংশ, সকেট, বারুদ, ৯ ভোল্ট পাওয়ার ব্যাটারি, রিমোট কন্ট্রোল ডিভাইসসহ বেশকিছু বিস্ফোরক সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।

রোববার বিকেলে বাকলিয়া ডিসি রোডের গণি কলোনীর মুখের লতিফের চারতলা ভবনের তিনতলার একটি বাসা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার পলাশ কান্তি নাথ।

গ্রেপ্তাররা হলেন-মো. সাইফুল্লাহ (২৪), মো. এমরান (২৫) ও আবু ছালেহ (২৫)। তাদের মধ্যে এমরান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অষ্টম সেমিস্টার এবং আবু ছালেহ একটি বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের টেক্সটাইল অনুষদের ৭ম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের পরিদর্শক মো. আফতাব হোসেন জানান, গ্রেপ্তার তিনজনের বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায়। সাইফুল্লাহ সাতকানিয়ার দক্ষিণ ঢেমশা হাদুর পাড়ার ইছহাক মিয়ার ছেলে, মো. এমরান সাতকানিয়ার দক্ষিণ মরফলা আদম উল্লাহর বাড়ি মহির আহমদের ছেলে ও আবু ছালেহ সাতকানিয়ার উত্তর ঢেমশা মাইজপাড়া আলী বকসুর বাড়ির মহরম আলীর ছেলে।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার পলাশ কান্তি নাথ বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাইফুল্লাহ ও এমরান জানায়, পলাতক সেলিম উদ্দিন, জহির ও আকিবের মাধ্যমে তারা নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবিতে যুক্ত হয়েছে। গ্রেপ্তার আবু ছালেহ জানায়, সাইফুল্লাহ তাকে নব্য জেএমবিতে যুক্ত করে।

তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সেলিম, সাদেকসহ আরও তিনজন আইইডি (বিস্ফোরক) নিয়ে এমরানের বাসায় যায়। জুমার নামাজের পর কয়েক জায়গায় ঘোরাঘুরি করে তারা বিস্ফোরণের জন্য ষোলশহর দুই নম্বর গেইটের ট্রাফিক পুলিশ বক্সটি নির্ধারণ করে। সেলিম আইইডি রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে কিভাবে বিস্ফোরণ ঘটাতে হবে সেটি এমরানকে প্রশিক্ষণ দেয় এবং রিমোট কন্ট্রোলার প্রদান করে।

অতিরিক্ত উপ-কমিশনার পলাশ কান্তি নাথ আরও বলেন, সেলিমের নির্দেশে পলাতক আবু সাদেক আইইডিটি সবার অগোচরে ট্রাফিক পুলিশ বক্সের ভেতর টেবিলের নিচে রেখে এমরানকে ফোনে জানায়। এমরান আইইডিটি বিস্ফোরণ না ঘটিয়ে রিমোট কন্ট্রোলারটি খুলশীর নিজের বাসার সামনে ডাস্টবিনে ফেলে দেয়। পরে এমরানের সহায়তায় সাইফুল রিমোট কন্ট্রোলারটি ডাস্টবিন থেকে সংগ্রহ করে ট্রাফিক পুলিশ বক্সের দক্ষিণের যাত্রীর ছাউনির পাশে দাঁড়িয়ে বিস্ফোরণ ঘটায়।

এর আগে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রাতে নগরীর পাঁচলাইশ ধানাধীন ষোলশহর দুই নম্বর গেইটের ট্রাফিক পুলিশ বক্সে বোমা বিস্ফোরনের পর তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, পুলিশ বক্সে রেখে যাওয়া বিস্ফোরকে দূর নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছিল। এ ঘটনায় সার্জেন্ট আরাফাত হোসেন ভুঁইয়া, এএসআই আতা উদ্দিনসহ কয়েকজন পথচারী আহত হয়

পাঠকের মতামত: