ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

চট্রগ্রাম-১৩, আনোয়ারা-কর্ণফুলী আসনে নৌকার মাঝি হতে চান জাবেদসহ চারজন

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্রগ্রাম :   চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা–কর্ণফুলী) হেভিওয়েট প্রার্থী থাকায় অনেকটাই নির্ভার আওয়ামী লীগ। সাংসদ ও ভূমিপ্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ছাড়াও এই আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চাইবেন আওয়ামী লীগেরসাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য আতাউর রহমান খান কায়সারের মেয়ে নারী সাংসদ ওয়াসিকা আয়েশা খান, বিশিষ্টব্যবসায়ী নুরুল কাইয়ুম খান ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহজাদা মহিউদ্দিন।
অন্যদিকে আসনটিতে প্রার্থী হতে চাইছেন ইসলামী ফ্রন্টের মহাসচিব এম এ মতিন ও জাতীয় পার্টির চট্টগ্রামমহানগরের সিনিয়র সহ সভাপতি তপন চক্রবর্তী। এলাকায় প্রভাব ও পারিবারিক ঐতিহ্য মনোনয়ন পাওয়ারক্ষেত্রে এগিয়ে রেখেছে আনোয়ারার বর্তমান সাংসদ জাবেদকে। আওয়ামী লীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রয়াতআখতারুজ্জামান চৌধুরীর বাবু’র জ্যেষ্ঠ পুত্র জাবেদ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে এলাকায় উন্নয়নকরেছেন। একই সঙ্গে দলের নেতাকর্মীদের উপরও অনেকটাই নিরঙ্কুশ নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছেন। তাই দলেরমনোনয়ন লাভের ক্ষেত্রে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন তিনি। এলাকার সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রেখে আগামীনির্বাচনের জন্য জোরেশোরে প্রস্তুতি নিচ্ছেন জাবেদ।
ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেন, জনগণের কাছে উন্নয়নের বার্তা নিয়ে তিনি ভোটচাইতে যাবেন। অনেক উন্নয়ন হয়েছে। কিছু চলমান আছে। এসব উন্নয়ন কাজ ত্বরান্বিত করতেই এখানে নৌকাপ্রতীকের বিজয় প্রয়োজন। আনোয়ারার জনগণের সাথে তাদের পরিবারের রক্তের সম্পর্ক উল্লেখ করে বলেন, তারপিতা যতদিন বেঁচেছিলেন ততদিন এলাকার মানুষের দুঃখ–কষ্টে পাশে ছিলেন। পিতার অবর্তমানে এখন তিনি সেইকাজটি করার চেষ্টা করছেন। এলাকায় ৬০০ থেকে ৭০০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করেছেন। পশ্চিম পটিয়াকেকর্ণফুলী নামে স্বতন্ত্র একটি উপজেলা করেছেন। এলাকার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে যখন যা চাওয়া হয়েছে তাই তিনিদিয়েছেন। তিনি আশাবাদী জনগণ এসব কাজের মূল্যায়ন করবেন। এবারও যদি প্রধানমন্ত্রী তার উপর আস্থারাখেন তাহলে দলকে তিনি বিজয় উপহার দিতে পারবেন।
নারী সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে এলাকায় যোগাযোগ বাড়ান ওয়াসিকা আয়েশা খান। এলাকায় নিজেরসমর্থকও রয়েছে তাঁর। এমপি হওয়ার পর কিছু উন্নয়ন প্রকল্পও গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগের সাবেকপ্রেসিডয়াম সদস্য আতাউর রহমান খান কায়সারের মেয়ে হিসেবে ওয়াসিকা দলেও বেশ পরিচিতি রয়েছে। তাই‘কোটা’র পরিবর্তে সরাসরি নির্বাচনে লড়ে জিততে চাইছেন তিনি। ওয়াসিকা আয়েশা জানান, আগামী নির্বাচনেপ্রার্থী হওয়ার জন্য দলের তৃণমূল থেকে তার ওপর চাপ রয়েছে। তাই তিনি দল থেকে মনোনয়ন চাওয়ার সিদ্ধান্তনিয়েছেন। তবে দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার বিজয়ে কাজ করার জন্য সক্রিয়ভাবে মাঠে থাকবেন তিনি।
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বিশিষ্ট ব্যবসায়ি নুরুল কাইয়ুম খান সিআইপি, গতবারের মতো এবারওমনোনয়ন চাইবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি চিটাগং চেম্বারের সহসভাপতি, স্টক একচেঞ্জ ও সোনালি ব্যাংকেরপরিচালক ছিলেন এবং এফবিসিসিআই নৌ পরিবহন সংক্রান্ত কমিটির কো–চেয়রম্যান ও প্রতিষ্ঠালগ্ন বিগডারসভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। এই প্রভাবশালী ব্যবসায়ী জানান, বয়স যা হওয়ার তো হয়ে গেছে। এখন ৬৫চলছে। এবারো মনোনয়ন চাইব। তবে দেয়া না দেয়া সবকিছু নেত্রীর উপর নির্ভর করছে। মনোনয়ন দিলেআসনটি উপহার দিতে পারবো। না দিলেও আওয়ামী লীগের জন্য কাজ করে যাব।
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহজাদা মহিউদ্দিন তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধি হিসেবে নিজেকে দেখতেচান। শাহজাদা মহিউদ্দিন জানিয়েছেন, এলাকার মানুষের ভালবাসার দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে তিনি মনোয়নেরপ্রস্তুতি নিচ্ছেন। কিন্তু দলীয় প্রধান যাকে মনোনয়ন দেবেন তার পক্ষেই মাঠে থাকবেন।
জাতীয় পার্টি নেতা তপন চক্রবর্তী গত সংসদ নির্বাচনে তিনি আনোয়ারা আসন থেকে নির্বাচন করে দ্বিতীয় স্থানেছিলেন। পার্টির চেয়ারম্যান এবারও তাকে মনোনয়নের বিষয়ে সবুজ সংকেত দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
ইসলামি ফ্রন্টের মহাসচিব মাওলানা এমএ মতিন বলেন, আনোয়ারার মাটি ঐতিহ্যগতভাবেই পীর আউলিয়াদেরপূণ্যভূমি। তাই এখানে প্রার্থী হতে চান তিনি। এলাকাবাসী তাদের কাছের মানুষ হিসেবে আগামী নির্বাচনে তাঁকেইমূল্যবান রায় প্রদান করবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

পাঠকের মতামত: