ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪

চকরিয়ায় স্লুইচ গেইট দিয়ে ঢুকছে লবণ পানি, চাষাবাদ অনিশ্চিত

zzzzChakaria Pic 26-07-2017এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :
চকরিয়া উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের চোয়ারফাড়ি খালের উপর নির্মিত স্লুইচ গেইট পরিচালনায় সরকারি নীতিমালা লঙ্ঘনের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় প্রশাসনের অগোচরে গত ১৫দিন ধরে স্লুইচ গেইটটি খোলা রাখার কারনে সামুদ্রিক জোয়ারের লবণ পানি অনায়সে লোকালয়ে ঢুকে পড়ার কারনে উপজেলার সাহারবিল, ঢেমুশিয়া, পশ্চিমবড় ভেওলা ও কোনাখালী ও বিএমচর ইউনিয়নের কৃষকদের মাঝে চাষাবাদ নিয়ে অনিশ্চিয়তা সৃষ্টি হয়েছে।

ভুক্তভোগী জনসাধারণ ও ক্ষুদ্ধ কৃষকরা অবিলম্বে চোয়ারফাড়ি স্লইটটি বন্ধ করতে এবং এটি পরিচালনায় একটি সমন্বিত কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন উপজেলা প্রশাসনের কাছে।

চোয়ারফাঁিড় এলাকার ব্যবসায়ী সাইকুল ইসলাম ও কৃষক জামাল হোসেন বলেন, বিগত সময়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্লইচ গেইটটি স্থাপন করা হয়েছে উপজেলার উপকুলীয় অঞ্চলের জনগনের এবং কৃষকদের সুবিধার্থে। বিশেষ করে শুস্ক মৌসুমে স্লইচ গেইটটি আটকিয়ে ভেতরের অংশে থাকা মিঠাপানির সেচ সুবিধা নিয়ে চাষাবাদ করে আসছে কৃষকরা। অপরদিকে বর্ষাকালে বানের পানি আসলে গেইটটি খুলে দিয়ে তা লোকালয় থেকে অপসারণ করা হয়। মুলত স্থাপনের পর থেকে স্লুইচ গেইটটি জোয়ার-ভাটার নিয়ন্ত্রক হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

পুর্ববড় ভেওলা ইউনিয়নের কৃষক বাহাদুর আলম বলেন, স্লুইচ গেইটটি পরিচালনার ক্ষেত্রে বর্তমানে সরকারি কোন ধরণের নীতিমালা মানা হচ্ছেনা। এ অবস্থার কারনে গত ১৫দিন ধরে গেইট খোলা রয়েছে। এতে জোয়ারের সময় সামুদ্রিক জোয়ারের লবণ পানি উল্টো উজানে দিকে লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। বর্তমানে বিভিন্ন ইউনিয়নে লবণ পানিতে সয়লাভ হয়ে পড়ার কারনে আমনের বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে কৃষকরা চরম ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। একই ইউনিয়নের বাসিন্দা কফিল উদ্দিন বলেন, স্লুইচ গেইটটি খোলা থাকার কারনে বর্তমানে উপজেলার অন্তত ছয়টি ইউনিয়নের শাখা খাল হয়ে সামুদ্রিক লবণ পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। এতে বেশির ভাগ জমি লোনা পানিতে তলিয়ে গেছে।

স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করেছেন, ওই এলাকার কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি মাছ আহরণের জন্য পরিকল্পিতভাবে স্লুইচ গেইটটি খোলা রেখেছে। স্লুইচ গেইট খোলা থাকলে তাঁরা সেখানে জাল বসিয়ে নিরাপদে মাছ ধরতে পারে। এভাবে কিছু ব্যক্তি লাভবান হলেও অপরদিকে কৃষকদের সর্বনাশ হচ্ছে।

স্থানীয় লোকজন ও ভুক্তভোগী কৃষকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বুধবার সকালে ঘটনাস্থলে গেলে স্লুইচ গেইটটি খোলার থাকার বিষয়টির সত্যতা মেলে। স্লইচ গেইটের সব পাটাতন খোলা থাকায় লোকালয়ের দিকে অনায়সে ঢুকে পড়ছে সামুদ্রিক জোয়ারের লবণ পানি।

উপজেলার উপকুলীয় অঞ্চলের জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, চিরিঙ্গা-বদরখালী সড়কের সাহারবিল ইউনিয়নের চোয়াঁরফাড়ি স্লুইচ গেইটটি খোলা থাকার কারনে গত কয়েকদিন ধরে সামুদ্রিক জোয়ারের লবণ পানি লোকালয়ে ঢুকে তলিয়ে গেছে বেশির ভাগ এলাকা। বিষয়টি ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাহেদুল ইসলাম বলেন, বন্যার কারনে একদিন আগে স্লুইচ গেইটটি খুলে দেয়া হয়। এখন লোকালয়ে সামুদ্রিক জোয়ারের পানি ঢুকে থাকলে অবশ্যই বন্ধ করে দেয়া হবে। তিনি বলেন, স্লুইচ গেইটটি রক্ষনাবেক্ষনে উপজেলা পরিষদের সভার সিদ্বান্তের আলোকে অতি সহসা একটি কমিঠি গঠন করে দেয়া হবে।

 

পাঠকের মতামত: