মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি ঃ
লামায় আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পালিত হয়েছে। জনসংহতি সমিতি (জে.এস.এস) লামা উপজেলার শাখার উদ্যোগে লামা কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহার মাঠে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভার পূর্বে একটি র্যালি লামা পালিটোল থেকে বের হয়ে লামা বাজারের পৌর শহর প্রদক্ষিণ শেষে বৌদ্ধ বিহারে এসে সবাই মিলিত হয়। এবার দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে “আদিবাসীদের শিক্ষা, ভূমি ও জীবনের অধিকার”।
আর্ন্তজাতিক আদিবাসী দিবস উদযাপন কমিটির লামা শাখার আহবায়ক ও জেএসএস লামা উপজেলা শাখার সভাপতি অংগ্য মং মার্মার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন, আদিবাসি নেতা লামা মাতামুহুরী ডিগ্রী কলেজের সহকারী অধ্যাপক অংথিং। অতিথি হিসাবে আরো উপস্থিত ছিলেন, জেএসএস লামা উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার আসাম, সহ-সম্পাদক চংপাত ¤্রাে, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ লামা শাখার সাধারণ সম্পাদক উথোয়াইছা মার্মা, পিসিপি মাতামুহুরী ডিগ্রী কলেজ শাখার সদস্য মংচিং মার্মা সহ প্রমূখ।
স্বাগত বক্তব্যে পিসিপি’র মাতামুহুরী ডিগ্রী কলেজ শাখার সদস্য মংচিং মার্মা বলেন, পার্বত্য এলাকায় সেনা ক্যাম্প বসিয়ে সরকার আদিবাসিদের নির্যাতন করছে। সেনাবাহিনীর কারণে পার্বত্য এলাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠা হতে পারছেনা। শান্তিচুক্তির শর্ত মতে দ্রুত পার্বত্য এলাকা থেকে সকল সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহার করার জোর আবেদন করছি।
আর্ন্তজাতিক আদিবাসী দিবসে বক্তারা আরো বলেন, সরকার আমাদেরকে ক্ষুদ্র গোষ্ঠি বানিয়ে অপমান করে চলেছে। আমরা আদিবাসী স্বীকৃতি চাই। আমরাও মানুষ! আমাদেরকে অবহেলা করবেন না। সরকারের দৃষ্টি ভঙ্গির দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে এলাকার কতিপয় কিছু ভূমিদস্যুরা আমাদের আদিবাসীদের জায়গা জমি জবর দখল করে নিয়ে যাচ্ছে। ভূমি জবর দখলের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কাছে লিখিত কিংবা মৌখিক বিচার নিয়ে গেলেও আমরা বিচার পাইনা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাতামুহুরী ডিগ্রী কলেজের সহকারী অধ্যাপক অংথিং বলেন, শিক্ষা ছাড়া অধিকার আদায় সম্ভব নয়। সুশিক্ষিত হয়ে অধিকার আদায়ে নামতে হবে। বাংলাদেশে ৪৫টি জাতিসত্তার প্রায় ৩০ লাখ আদিবাসী রয়েছে। আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছে পাহাড়ী ও সমতল অঞ্চলের বিভিন্ন আদিবাসী সংগঠন। আদিবাসীদের দাবি এখন পর্যন্ত এড়িয়ে চলেছে সরকার। জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র হওয়া সত্ত্বেও সরকার কখনও রাষ্ট্রীয়ভাবে আদিবাসী দিবস উদযাপন করেনি। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ২০০৭ সালে গৃহীত আদিবাসী অধিকার বিষয়ক ঘোষণাপত্র অনুসমর্থন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
স্বীকৃতি প্রদান করতে হবে আদিবাসীদের ঐতিহ্যগত ও প্রথাগত ভূমি অধিকারের। আদিবাসী অঞ্চলে সরকারী ও বেসরকারী কোন উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের পূর্বে আদিবাসীদের স্বাধীন মতামত গ্রহণ এবং প্রকল্পে আদিবাসীদের অর্থবহ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
পাঠকের মতামত: