মাদকের ব্যবহার ক্রমশ উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। এ সমস্যা এখন আর শুধু শহরে সীমাবদ্ধ নেই, ধনী-দরিদ্র, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে তৃণমূল পর্যায়ে বিস্তৃত হয়েছে। ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, মানবসভ্যতার আদিকাল থেকেই মাদক-ব্যবহারের প্রচলন ছিল। কিন্তু সেটি ছিল সীমিত আকারে। এখন এর ব্যাপ্তি সমাজের সর্বস্তরে। আমাদের দেশে গাঁজা, ফেনসিডিল, হেরোইন, ইয়াবা, ঘুমের ও ব্যথানাশক ওষুধ (প্যাথেডিন ও মরফিন) এখন বহুল ব্যবহৃত মাদকদ্রব্য যা সহজলভ্য। কিন্তু নেশার এ রাজ্যে সম্প্রতি যোগ হয়েছে সাপের বিষ।
অনেকের কাছে বিষয়টি অবিশ্বাস্য হলেও একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের জরিপে নতুন এ মাদকের ভয়াবহতার খবর উঠে এসেছে। একটা সময় বিদেশি অনেক ছবিতে জিহ্বায় সাপের ছোবল দেয়ার দৃশ্য দেখা যেত। আর এটা এখন দেখা যাচ্ছে রাজধানীর বেশ কয়েকটি অভিজাত এলাকা ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে। প্রকৃতপক্ষে অন্যান্য মরণ নেশা এসব মাদকসেবীর শরীরে এখন আর শিহরণ জাগাতে পারে না। এককথায়, কোনোরকম প্রতিক্রিয়া হয় না তাদের শরীরে। নতুনত্বের অাশায় সাপের বিষ গ্রহণের দিকে ঝুঁকছে এসব শিক্ষার্থী। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যেসব সাপ কামড়ে ঝুঁকি কম অর্থাৎ কম বিষধর সেগুলোর দিকে ঝুঁকছে তারা। এমনকি, কেউ কেউ ব্যক্তিগতভাবে সাপ পোষাও শুরু করেছেন। এদের মধ্যে কেউ জিহ্বায় ছোবল নেন, কেউ বা আবার হাতের কব্জিতে।
সামাজিক ও পারিবারিক অবক্ষয়ের কারণে তরুণরা এ ভয়ঙ্কর মরণ খেলায় ঝুঁকে পড়েছে বলে জানিয়েছেন মনোবিজ্ঞানীরা। তাদের মতে, পারিবারিকভাবে এখনি রুখতে হবে নব্য এ মাদককে। অন্যথায়, সাপও হয়তো গৃহস্থালী প্রাণীতে পরিণত হতে পারে। আর মাদক হিসেবে সাপের বিষ খুবই ভয়ঙ্কর। বিষের মাত্রা কম হওয়া সত্ত্বেও কখনো কখনো সরাসরি মস্তিষ্কের নিউরনে আঘাত হানতে পারে এগুলো।
পাঠকের মতামত: