আফ্রিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন জায়গায় জিকা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় এসব অঞ্চলের দুইশো কোটিরও বেশি মানুষ এ ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। এর মধ্যে ভারত, ইন্দোনেশিয়া এবং নাইজেরিয়ার মানুষরা সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছে। তাছাড়া স্বাস্থ্যসুরক্ষামূলক উপকরণ সীমিত থাকার কারণে বাংলাদেশও ঝুঁকিমুক্ত নয় বলে জানানো হয়েছে। দ্য ল্যানসেট ইনফেকশাস ডিজিজেস সাময়িকীতে লেখা এক প্রতিবেদনে বিজ্ঞানীরা এমন আশঙ্কা জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত বছর ব্রাজিলে ব্যাপক হারে জিকা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। ক্রমেই ল্যাটিন আমেরিকার অন্য দেশগুলো এমনকি যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ আফ্রিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ছড়িয়েছে জিকা। এরইমধ্যে বিশ্বের ৬৫টিরও বেশি দেশে জিকা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জিকাকবলিত দেশ ভ্রমণ করে আসার পরই আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এমন প্রেক্ষাপটে, বিমান চলাচলের তথ্য বিশ্লেষণ করে জিকার ঝুঁকি নির্ধারণ করেছে লন্ডন স্কুল অব হাইজিন এন্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি এবং কানাডার টরন্টো ইউনিভার্সিটির গবেষক দল। দক্ষিণ আমেরিকার জিকা কবলিত এলাকা ভ্রমণের পর সেখান থেকে আফ্রিকা ও এশিয়ায় ফিরে আসা মানুষের সংখ্যা, জিকা ছড়াতে সক্ষমতা রয়েছে এমন মশার উপস্থিতির হার এবং জিকার প্রাদুর্ভাব হওয়ার মতো আবহাওয়া রয়েছে কিনা তা বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়।
গবেষকদের মতে স্বাস্থ্য সুরক্ষামূলক জিনিসপত্র সীমিত থাকার কারণে বাংলাদেশ, ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম এবং পাকিস্তানেও জিকা ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে।
তাদের মতে, জিকা ভাইরাস প্রতিরোধ করা ও শনাক্ত করা কিংবা মোকাবেলা করা কঠিন এমন পরিবেশে প্রচুর সংখ্যক মানুষ বসবাস করছে। অবশ্য কিছু জায়গায় জিকা মোকাবেলার প্রস্তুতি থাকায় সেখানে ঝুঁকির মাত্রা কমে এসেছে বলে স্বীকার করেছেন গবেষকরা।
এডিস প্রজাতির মশা থেকে জিকা ভাইরাস মানুষের দেহে ছড়িয়ে থাকে। জ্বর, জয়েন্ট পেইনসহ ছোটখাটো কিছু শারীরিক অসুস্থতা দেখা দেয় এ ভাইরাসের কারণে। আবার তা এক সপ্তাহের কম সময়ের মধ্যে সেরেও যায়। তবে বিপত্তি তৈরি হয় গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে।
গত বছর ব্রাজিলে মাইক্রোসেফালি বা অস্বাভাবিক আকৃতির মাথা নিয়ে শত শত শিশুর জন্ম হয়। মশাবাহিত ভাইরাস জিকাকে এ ধরণের শিশু জন্মানোর কারণ বলে সে সময়ই সন্দেহ করা হচ্ছিল। এ নিয়ে বিশেষজ্ঞরা নানা গবেষণা শুরু করেন। গত এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে,জিকা ভাইরাস থেকে যে মাইক্রোসেফালি হতে পারে সে ব্যাপারে তারা নিশ্চিত। এর আগে যৌন মিলনের মাধ্যমে জিকা ভাইরাস ছড়ানোর কথাও নিশ্চিত করেছিলেন তারা। সূত্র: বিবিসি
পাঠকের মতামত: