মৃত্যু’র চার দিন পর অবশেষে শিক্ষক ও সহকারী প্রক্টরসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেছে দিয়াজের পরিবার। মামলায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেন, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আলমগীর টিপুসহ ১০জনকে আসামি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শিবলু কুমার দের আদালতে দিয়াজের মা জাহেদা আমিন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ৩০২, ২০১ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
গতকাল বুধবার (২৩ নভেম্বর) দিয়াজ আত্মহত্যা করেছে বলে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, দিয়াজ আত্মহত্যা করেছেন। তবে দিয়াজের পরিবার এই ময়নাতদন্তে’র রিপোর্ট প্রতিবেদন প্রত্যাখান করেছে।
গত রোববার (২০ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে নিজ বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ঝোলানো অবস্থায় দিয়াজের মরদেহ দেখা যায়। পরে রাত সাড়ে ১২টায় মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। এসময় দিয়াজের পরিবার থানায় মামলা করতে গেলেও পুলিশ মামলা নেয়নি।
আদালত সূত্র জানা যায়, মামলায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেন, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আলমগীর টিপুসহ ১০জনকে আসামি করা হয়েছে। এজাহারে আরো বলা হয়েছে, দিয়াজকে আসামিরা পরস্পরের যোগসাজসে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। মামলায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি আবুল মনসুর জামশেদ, বর্তমান প্রচার সম্পাদক রাশেদুল আলম জিসান, ছাত্রলীগ কর্মী আবু তোরোব পরশ, মনসুর আলম, আবদুল মালেক, মিজানুর রহমান, আরিফুল হক অপু ও মোহাম্মদ আরমানসহ অজ্ঞাতনামা বেশ কয়েকজনকে আসামি করা হয়।
দিয়াজ পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ এনে দিয়াজের বড় বোন অ্যাডভোকেট জুবাঈদা ছরওয়ার চৌধুরী নিপা জানান, বুধবার হাটহাজারী থানায় মামলা করতে গেলে থানার ওসি মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। এ অবস্থায় আদালতে মামলা করা হয়েছে। আদালত সরাসরি মামলা গ্রহণ করে তদন্তের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে ৩০ দিনের মধ্যে সিআইডিকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ৩০২, ২০১ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
তিনি বলেন, যারা আমাদের বাসায় হামলা চালিয়েছিল, ভাঙচুর করেছিল তাদের সবাইকে মামলার আসামি করা হয়েছে। সহকারী প্রক্টর আনোয়ার এবং আলমগীর টিপুকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সবার মুখোশ খুলে যাবে। হত্যাকান্ডের সাথে কারা জড়িত তাদেরও চিহ্নিত করা হবে।
এসময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দিয়াজের বাসার আশপাশে ভিড় জমায়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতিতে দিয়াজ ইরফান চট্টগ্রামের মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী ছিলেন।
দিয়াজ ইরফান চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সম্পাদকের দায়িত্ব রয়েছেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতিতে দিয়াজ ইরফান চট্টগ্রামের মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী ছিলেন। মেয়রের অনুসারি সভাপতি আলমগীর টিপুর সঙ্গে দিয়াজের বিরোধ ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটি কোটি টাকার টেন্ডার এর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দিয়াজের বিশ্ববিদ্যালয়ের ২নং গেইট এলাকার বাসায় হামলা চালায় টিপুর অনুসারিরা।
পাঠকের মতামত: