ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪

কক্সবাজারে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে রূপালী ইলিশ

এম.এ আজিজ রাসেল ::  বঙ্গোপসাগরে মহাসমারোহে চলছে মাছ ধরা। দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর জেলেদের জালে ধরা পড়ছে কাঙ্খিত রূপালী ইলিশ। ফিশিং ট্রলারভর্তি ইলিশ নিয়ে কূলে ফিরছে জেলেরা। ইলিশের পাশাপাশি ধরা পড়ছে রূপচাঁদা, লইট্যাসহ নানা প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ। তবে এখনো দাম একটু বেশি। সাগরে প্রচুর পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়ায় ব্যবসায়ী ও জেলেদের মুখে হাসি ফুটেছে। আড়তগুলোতে ফিরে এসেছে কর্মচাঞ্চল্যতা।

বুধবার সকালে কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, উৎসবের আমেজ। টানা ৩ মাস পর কোলাহল না থাকা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে। বৈরি আবহাওয়া ও ৬৫ দিন নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগরে গেলেও ইলিশের দেখা পায়নি জেলেরা। এতে অনেকটায় হতাশা নিমজ্জিত ছিল জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা। কিন্তু গত ২দিনে পাল্টে গেছে এখানকার চিত্র। সাগর থেকে মন মন ইলিশ নিয়ে ঘাটে ফিরছে শত শত ফিশিং ট্রলার। ঘাট থেকে ডিঙি নৌকায় ঝুড়ি নিয়ে মোকামে তোলা হচ্ছে ছোট—বড় ইলিশ। ব্যবসায়ীদের হাক ডাক ও বেচাবিক্রিতে সরগরম হয়ে উঠে ফিশারি ঘাট নামে পরিচিত এই মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রটি। এখানে কারো যেন দম ফেলার ফুসরত নেই। কেউ বরফ ভাঙ্গছে, কেউবা ইলিশের সন্নিবেশ করতে ব্যস্ত। অনেক ব্যবসায়ী কাঙ্খিত দাম পেয়ে ট্রাকে ট্রাকে ঢাকা—চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায় পাঠাচ্ছে ইলিশের চালান।

ফিশারি ঘাটে কথা হয় ফিশিং ট্রলারের জেলে রমিজসহ কয়েকজনের সাথে। তারা বলেন, অনেক দিন মৎস্য শিকার বন্ধ থাকায় অনেক কষ্টে দিন গেছে। তার উপর করোনার দুর্যোগও ছিল। সবমিলিয়ে অনেক দুঃখ—কষ্টে পরিবার পরিজন নিয়ে দিন কাটাতে হয়েছে তাদের। এবার সাগরে প্রচুর পরিমাণ মাছ ধরা পড়ায় হয়তো সেই দুঃখ—কষ্ট ঘুচবে।

কক্সবাজার মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জানে আলম পুতু বলেন, বৈরি আবহাওয়া ও ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে হাজারো ফিশিং ট্রলার গত এক সপ্তাহ ধরে সাগরে মৎস্য আহরণে গেছে। প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণ ইলিশ নিয়ে ফিরছে ট্রলারগুলো। নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে যে ক্ষতি হয়েছে আশা করি তা পুষিয়ে নিয়ে লাভের মুখ দেখবে ব্যবসায়ীও ফিশিং ট্রলার মালিকেরা।

কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ম্যানেজার মো. এহসানুল হক বলেন, মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ট্রলারগুলো ফিরতে শুরু করায় মাছের পরিমান ও রাজস্ব উভয়ই বৃদ্ধি পাচ্ছে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম খালেকুজ্জামান চকরিয়া নিউজকে বলেন, গত বছর জেলায় ইলিশ আহরণ হয়েছিল ১৫ হাজার ২৫৬ মেট্রিক টন। এবার ইলিশ আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৭ হাজার মেট্রিক টন। গত ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন সাগরে মাছ আহরণ বন্ধ ছিল। এ কারণে ইলিশের প্রজনন ও আকৃতি বেড়েছে অনেকগুণ। দুর্যোগকাল কাটিয়ে জেলেরা সাগরে নামছেন ইলিশ ধরতে। তিনি আশা করছেন, এবার ইলিশ আহরণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করবেন জেলেরা।

 

পাঠকের মতামত: