লামা প্রতিনিধি :: প্রেমের স্বীকৃতি না পেয়ে বান্দরবানের লামা উপজেলায় আয়েশা আক্তার (১৮) নামে এক স্কুল ছাত্রী বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার সকালে উপজেলার রুপসীপাড়া ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি টিয়ারঝিরির মুখে এ ঘটনা ঘটে। আয়েশা আক্তার টিয়ারঝিরির মুখ এলাকার বাসিন্দা তরিকুল ইসলামের মেয়ে ও রুপসীপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় বিদ্যালয়ের ১০ শ্রেণীর ছাত্রী।
স্কুল ছাত্রী আয়েশা আক্তারের বাবা তরিকুল ইসলাম বলেন, গত ৬ বছর ধরে আগে জনৈক সেলিম পিসি’র ছেলে মিজানুর রহমানের সাথে আমার মেয়ে আয়েশা আক্তারের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এতদিন আমি প্রেমের বিষয়টি জানতাম না। কিছুদিন আগে একটি মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্কের কথা আমি জানতে পেরেছি। এর মধ্যে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে আমার মেয়ে আয়েশা আক্তারের জন্য ৫টি বিয়ের প্রস্তাব আসে। আয়েশা আক্তারকে অন্যত্র বিয়ে দিলে বিষ খাওয়ার হুমকিসহ বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যারা আসেন, তাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধমকি দিয়ে তাড়িয়ে দেন মিজানুর রহমান। এক পর্যায়ে গত মঙ্গলবার রাতে আয়েশা আক্তারকে বিয়ে করবেনা বলে মিজানুর রহমান অস্বীকৃতি জানায়। এতে আয়েশা আক্তার মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন এবং বিষয়টি সইতে না পেরে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পরিবারের সদস্যদের অজান্তে বিষপান করেন। পরে বিষপানের বিষয়টি টের পেয়ে আয়েশা আক্তারকে দ্রুত উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি। এদিকে মেয়ের মামা মো. সাহেদুল সাংবাদিকদের বলেন, মিজানুর রহমান দীর্ঘ ৬ বছর ধরে প্রেম করার পর এখন আমার ভাগ্নি আয়েশা আক্তারকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায়। শুধু তাই নয়, এর আগে আয়েশা আক্তারের নামে ফেইসবুকে আজে-বাজে কথা লিখে পোষ্ট করে মিজানুর রহমানের ফুফাত ভাই মো. ইমরান। এ নিয়ে গত বুধবার দিনগত রাত ৯টার দিকে টিয়ারঝিরির মুখের একটি দোকানে ইমরান ও আয়শা আক্তারের বাড়ির পাশের বাসিন্দা ফরিদের মধ্যে মারামারি হয়। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে আয়েশা আক্তারের অবস্থা আশংকাজনক। উন্নত চিকিৎসার জন্য দায়িত্বরত চিকিৎসক কক্সবাজার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যেতে বলেছে। কিন্তু আর্থিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় রিস্কবন্ড দিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেখেই আয়েশা আক্তারকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। জানতে চাইলে এ বিষয়ে সেলিম পি.সি জানান, আমার ছেলে মিজানের সাথে আয়েশা আক্তারের প্রেমের সম্পর্ক আছে বলে আগে জানতাম না। আয়েশা আক্তারের বিষপানের পর বিভিন্ন মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারলাম। এ বিষয়ে একাধিকবার চেষ্টা করেও অভিযুক্ত মিজানুর রহমানের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে দায়িত্বরত সহকারী মেডিকেল অফিসার বিবি ফাতেমা জানায়, আয়েশা আক্তারকে ওয়াস করে আন্ত:বিভাগে ভর্তি দেয়া হয়েছে। তবে বিষ খাওয়া রোগী ৭২ ঘন্টার আগে শংকা মুক্ত নন।
বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টার সত্যতা নিশ্চিত করে রূপসীপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ড সদস্য আবুল হোসেন বলেন, আয়েশা আক্তার ও মিজানুর রহমারের মধ্যে প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি আগে জানতাম না। মেয়েটি বিষপান করার পর লোকমুখে জানতে পারলাম তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। একে কেন্দ্র করে গত বুধবার রাতে মারামারির ঘটনা সমাধানে দুই পক্ষ নিয়ে শুক্রবার বিকালে বসার কথা ছিল। তার আগেই আয়েশা আক্তার বিষপান করে।
পাঠকের মতামত: