ঢাকা,শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

কমছে পেঁয়াজের দাম, কাটতি কম, নেই ঘাটতিও

নিজস্ব প্রতিবেদক
ছয় মাস আগে দামের দিক থেকে হঠাৎ করে অভিজাত খাবারের তালিকায় উঠে আসে পেঁয়াজ। দাম বাড়তে বাড়তে সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যায় রসুই ঘরের অত্যাবশ্যকীয় এ পণ্যটি। দুই দফায় ডাবল সেঞ্চুরি ছাড়িয়ে যায়। গত তিন মাস ধরে শতকের আশপাশেই ঘুরপাক খাচ্ছিল দাম। তবে বর্তমান করোনাকালে সবগুলো নিত্যপণ্যের দাম বাড়লেও ব্যতিক্রম কেবল পেঁয়াজ। দুই সপ্তাহ ধরে কমছে এর ঝাঁজ। এই সময়ে দাম কমেছে কেজিতে অন্তত ১০ টাকা।

খাতুনগঞ্জের আড়তদাররা জানান, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার ছুটি ঘোষণা করেছে। বাইরে খুব বেশি মানুষ নেই। বেশ ক’দিন ধরেই বেচাবিক্রিতে ভাটা পড়েছে। ক্রেতা নেই বললেই চলে। পেঁয়াজের দোকানিরা এক প্রকার অলস সময়ই কাটাচ্ছেন।

খাতুনগঞ্জের পাইকারি দোকানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে মানভেদে প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৩৭ টাকায়। এছাড়া মিয়ানমারের পেঁয়াজ ৩৫ থেকে ৩৭ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৮ থেকে ৩০ টাকায়।

সরেজমিনে গতকাল দেখা যায়, সারাবছর লোকে গিজ গিজ করা খাতুনগঞ্জ যেন এখন অচেনা এক জনপদ। স্বাভাবিক দিনগুলোর তুলনায় সড়কে মানুষের সংখ্যা একেবারেই হাতেগোনা। নেই শ্রমিকদের পরিচিত হাঁকডাক। পেঁয়াজের আড়তগুলোতে নেই চিরচেনা সেই ব্যস্ততা।

বাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর আগেই ব্যবসায়ীরা প্রচুর পরিমাণে পেঁয়াজ আমদানি করেছে। প্রত্যেকটি দোকান-গুদামে যথেষ্ট পেঁয়াজের মজুদ রয়েছে। যদিও বর্তমান করোনা পরিস্থিতির কারণে ভারত ২১ দিনের জন্য লকডাউন হয়ে গেছে। মিয়ানমার থেকেও পেঁয়াজ আসছে না। আমদানি বন্ধ থাকলেও কাটতি না থাকায় বাজারে পেঁয়াজের ঘাটতি নেই।

জানতে চাইলে খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, করোনার কারণে এখন সাধারণ ছুটি চলছে। খাতুনগঞ্জের পেঁয়াজের দাম একেবারে পড়ে গেছে বলা যায়। দোকান-গুদাম পেঁয়াজে ভর্তি, কোনো ধরনের সংকট নেই। তিনি বলেন, খাতুনগঞ্জে গত ক’দিন যাবত পেঁয়াজের ক্রেতা নেই। এখন হোটেল রেস্টুরেন্টও প্রায় সব বন্ধ। মানুষের যা পেঁয়াজ তা তারা আগেই কিনে ফেলেছে। ফলে গত দুই সপ্তাহে প্রত্যেক ক্যাটাগরির পেঁয়াজ কেজিতে অন্তত ১০ টাকা করে কমেছে।
কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, পেঁয়াজের দাম কমছে এটি অবশ্য একটি ভালো খবর। তবে এটি কতদিন এরকম স্থিতিশীল থাকবে সেটিই বড় প্রশ্ন। সুযোগ বুঝেই ব্যবসায়ীরা সরবরাহ ঘাটতির অজুহাত দেখিয়ে দাম বৃদ্ধি করে থাকে।

এছাড়া ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ থেকে যা মুনাফা করার তা এরইমধ্যে করে ফেলেছে। আমরা বারবার বলি, পেঁয়াজসহ সব নিত্যপণ্য নিয়মিত মনিটরিং করার জন্য। অনেক সময় আমরা সেটি দেখি না। যখন পত্রপত্রিকায় লেখালেখি হয়, তখন প্রশাসন তৎপরতা বাড়ায়, কিছুদিন না যেতেই তারা ঝিমিয়ে পড়ে। ফলে এই সুযোগটা ব্যবসায়ীরা গ্রহণ করে থাকে। তাই পেঁয়াজসহ সব নিত্যপণ্যের বাজার নিয়মিত মনিটরিং না করলে ভোক্তারা সুফল পাবে না।

পাঠকের মতামত: