ঢাকা,রোববার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪

নভেম্বরে মিয়ানমার থেকে রেকর্ড পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি ::  মিয়ানমার থেকে টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি আগের তুলনায় বেড়েছে। এ বন্দর দিয়ে নভেম্বর মাসে ২১ হাজার ৫৬০ মেট্রিকটন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। আজ শনিবার মাসের শেষদিনে বন্দরে ৮৯২ মেট্রিকটন পেঁয়াজ খালাস হয়। তবে আগের তুলনায় পেঁয়াজ আমদানি বাড়লেও পেঁয়াজের বাজারে এখনো দাম কমেনি।

টেকনাফ স্থলবন্দর শুল্ক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, মিয়ানমার থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরে মিয়ানমার থেকে নভেম্বর মাসে ২১ হাজার ৫৬০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। এর আগে অক্টোবর মাসে পেঁয়াজ আমদানি হয়েছিল ২০ হাজার ৮৪৩ মেট্রিক টন। এ ছাড়া সেপ্টেম্বর ও আগস্ট মাসে যথাক্রমে ৩ হাজার ৫৭৩ মেট্রিক টন ও ৮৪ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছিল।

টেকনাফ স্থল বন্দর শুল্ক কর্মকর্তা আবছার উদ্দীন চকরিয়া নিউজকে জানান, মিয়ানমার থেকে নভেম্বর মাসে পেঁয়াজ আমদানি স্বাভাবিক ছিল। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ব্যবসায়ীরা মূলত অক্টোবরের শুরু থেকে পুরোদমে মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু করে। এই দুই মাসে ৪২ হাজার ৪০৩ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। তবে দেশে পেঁয়াজের চাহিদা থাকায় আগামীতে আমদানি আরো বাড়তে পারে।

টেকনাফ স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষ ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্ট এর ব্যবস্থাপক মো. জসিম উদ্দীন চৌধুরী  চকরিয়া নিউজকে বলেন, মিয়ানমার থেকে আমদানিকৃত পেঁয়াজ দ্রুত খালাসে আমরা রাত-দিন কাজ করে যাচ্ছি। দ্রুত সময়ে পেঁয়াজ খালাসে পর্যাপ্ত শ্রমিকও রয়েছে। আমদানিকারকরা এ বন্দরে কোনো বাঁধা-প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই তাদের আমদানিকৃত পণ্য সহজে খালাস করতে পারছেন।

পেঁয়াজ আমদানিকারক এম এ হাশেম  চকরিয়া নিউজকে বলেন, ব্যবসায়ীরা মিয়ানমার থেকে আগের তুলনায় নভেম্বর মাসে বেশি পরিমাণে পেঁয়াজ আমদানির চেষ্টা করেছে। এদেশে পেঁয়াজের সংকট শুরু হওয়ার পর থেকে মিয়ানমারের ব্যবসায়ীরাও পেঁয়াজের দাম কিছুটা বাড়িয়ে দেওয়ায় এবং দেশে চাহিদা বেশি থাকায় পেঁয়াজের দাম কমছেনা বলে মনে করি। তবে আমরা সব আমদানিকারক নিজেদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি পেঁয়াজের দাম স্থিতিশীল রাখতে।

অভিযোগ রয়েছে, মিয়ানমার থেকে গত দুই মাসে রেকর্ড পরিমাণে পেঁয়াজ আমদানি হলেও দেশের অন্যান্য স্থানের মতোই কক্সবাজারের স্থানীয় বাজারেও পেঁয়াজের দাম দিনদিন বেড়েই চলছে। মিয়ানমার থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরে রেকর্ড পরিমাণে পেঁয়াজ আমদানি হলেও বন্দর থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরত্বে পৌরবাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ২০০ থেকে ২১০ টাকায়। এ ছাড়া জেলার অন্যান্য উপজেলাতে পেঁয়াজের দাম আরো চড়া রয়েছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, মিয়ানমার থেকে আমদানিকৃত পেঁয়াজগুলো টেকনাফ স্থল বন্দরে খালাস হওয়ার পর ট্রাকভর্তি করে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের আড়তে নিয়ে যায় পাইকারী ব্যবসায়ীরা। সেখান থেকে একাধিক হাত বদল হয়ে পেঁয়াজ সরবরাহ হচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এক্ষেত্রে মধ্যসত্ত্বভোগী ব্যবসায়ী ও আড়তদারদের হাত বদলের সময়ই পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি করা হয়ে থাকে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সাইফ  চকরিয়া নিউজকে বলেন, পেঁয়াজের দাম স্থিতিশীল রাখতে বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। তবে ব্যবসায়ীদের সাথে আলোচনা করে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি রোধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং আমদানিকারকদের আরো বেশি পরিমাণে পেঁয়াজ আমাদানিতে উদ্ধুদ্ধ করা হয়েছে।

সাধারণ ভোক্তাদের অভিযোগ, মিয়ানমার থেকে কম দামে প্রচুর পরিমাণে পেঁয়াজ আমদানি হলেও স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের দাম কিছুইতে কমছে না। মিয়ানমার থেকে যে পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে তাতে পেঁয়াজের দাম ১০০ টাকা অতিক্রম করার কথা নয়। অথচ সে পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে ২০০ টাকার বেশি দামে। এ ছাড়া কোনো কোনো খুচরা দোকানে পেঁয়াজই মিলছে না।

পাঠকের মতামত: