অনলাইন ডেস্ক :; মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বিভিন্ন বন্দিশিবির ও পাড়ায় থাকা রোহিঙ্গাদের ওপর নাৎসি কায়দায় নির্যাতন চালানো হচ্ছে। রোহিঙ্গা গণহত্যার তদন্তে নিয়োজিত জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের এক সদস্য এ অভিযোগ করেছেন।
তিনি বলেছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন ইউরোপের বিভিন্ন বন্দিশিবির ও পাড়ায় ইহুদিদের ওপর হিটলারের নাৎসি বাহিনী যেভাবে নির্যাতন চালিয়েছিল, ঠিক একইভাবে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে মিয়ানমার সরকার।
গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লন্ডন ইউনিভার্সিটি কলেজে বৃহস্পতিবার রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আয়োজিত এক সম্মেলনে ক্রিস্টোফার সিদোতি বলেন, নির্যাতনের কারণে বাড়ি ছাড়া ১ লাখ ২৮ হাজার রোহিঙ্গা এখনও রাখাইনের বিভিন্ন বন্দিশিবির ও পাড়ায় রয়েছে। তারা অন্য কোথাও যেতে পারে না। এমনকি বিয়ে বা সন্তান নেয়ার অধিকারও তাদের নেই।
তিনি বলেন, সিত্তে শহরতলীর তিন জায়গায় রোহিঙ্গারা রয়েছে, যাদের অবস্থা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন নাৎসিদের হাতে বন্দি ইহুদিদের মতো। রাখাইনে রোহিঙ্গা বিতাড়ন ও গুলি চালানো বন্ধে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ও সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। সিদোতি বলেন, সামরিক বাহিনী তাদের উদ্দেশ্য হাসিল করেছে, রাখাইন রাজ্য উলটপালট করে দিয়েছে। কিন্তু সংকট এখনও শেষ হয়নি।
তিনি বলেন, মিয়ানমারে মাত্র ৪-৫ লাখ রোহিঙ্গা রয়েছে। ২০১২ সালেও এ সংখ্যা ছিল ২০-৩০ লাখ। গত দুই বছরে সেখানে ব্যাপক গণহত্যা চালানো হয়েছে। কয়েক লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়ার পরও রাখাইনে অনেকে রয়ে গেছেন। সেখানকার রোহিঙ্গারা অনুমতি ছাড়া গ্রামের বাইরে যেতে পারে না। জেলেরা মাছ ধরতে ও শিশুরা স্কুলে যেতে পারে না।
এলাকার বাইরে যেতে, বিয়ে বা সন্তান নিতে হলে প্রশাসনের লিখিত অনুমতি নিতে হয়। হাসপাতালে যেতে হলে ছয়টি প্রশাসনিক বিভাগের কাছ থেকে আলাদাভাবে অনুমতি নিতে হয়। রোহিঙ্গাদের নিশ্চিহ্ন করতেই পরিকল্পিতভাবে এসব করা হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের বিষয়ে কয়েক মাসের মধ্যে আরেকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে বলে জানান সিদোতি।
পাঠকের মতামত: