আতিকুর রহমান মানিক :: উখিয়ার থাইংখালীতে নির্মিত হচ্ছে নতুন রোহিঙ্গা ক্যাম্প। আর এ জন্য উজাড় করা হয়েছে বিশাল বনভূমি। থাইংখালীর ১৯নং ক্যাম্প সংলগ্ন লন্ডাখালীর বনভূমির বিশাল এলাকা জুড়ে গড়ে তোলা হচ্ছে নতুন একাধিক রোহিঙ্গা ক্যাম্প।
স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের ভোগ দখলীয় বনভূমিতে সৃজিত বাগান উচ্ছেদ করে এসব ক্যাম্প করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এদিকে ঘটনা জানার পর বির্তকিত ওই ক্যাম্প নিমার্ণ কাজে বাঁধা দেয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এম. গফুর উদ্দিন চৌধুরী।
চেয়ারম্যান জানান, কতিপয় এনজিও সংস্থা নিজেদের আখের গোছাতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাধার সৃষ্টি করছে। তেমনি রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে যেতে অনাগ্রহ তৈরীতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বণ করছে । তাদের মূল উদ্দেশ্য রোহিঙ্গারা যেন মিয়ানমারে ফিরে না যায়। সাথে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশেও উৎসাহিত করছে তারা। আর রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে এসব এনজিও গুলো দীর্ঘ সময় দাতা সংস্থা প্রদত্ত অর্থকড়ি লুটপাট অব্যাহত রাখতে লন্ডাখালী এলাকায় নতুন করে ক্যাম্প নির্মাণের চেষ্টা চালায়। এতে স্থানীয় জনগণ নিয়ে বাধাঁ দেয়া হয়েছে বলেও জানান চেয়ারম্যান।
লন্ডাখালী এলাকার আবুল আজম (৪৫), সুরুত আলম (৩৫), সুজন (১৮) ও মাহবুবুল আলম (২৫)সহ অনেকে অভিযোগ করে জানান, এনজিও সংস্থা একতা ও মুসলিম হ্যান্ডস প্রভাব বিস্তার করে স্থানীয় শতাধিক পরিবারে যুগ যুগ ধরে ভোগ দখলীয় ফলজ, বনজ বাগান উচ্ছেদ করে সেখানে রোহিঙ্গাদের জন্য নতুন করে ক্যাম্প নির্মাণ করছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৪ শতাধিক ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। যেখানে রাতের বেলা আলোর জন্য সৌর লাইটও স্থাপন করা হয়েছে।
জানতে চাওয়া হলে ১৬, ১৭, ১৮ ও ১৯ নং ক্যাম্প ইনচার্জ ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু ওয়াহাব রাশেদ জানান, ক্যাম্পে যাতায়াত সুবিধার উন্নয়নের জন্য এডিবি সড়ক নির্মাণ করলে অসংখ্য বাড়ীঘর সরিয়ে নিতে হবে। তাদের পুর্ণবাসনের জন্য নতুন করে ঘর তৈরি করে রাখা হয়েছে।
স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের ভোগদখলীয় বাগানের ব্যাপারে ক্যাম্প ইনচার্জ বলেন, সেখানে আগের কোন প্রকার স্থাপনা বা বাগানের অস্থিত্ব ছিল না। পরিত্যক্ত বনভুমি পেয়েই এসব ঘর নিমার্ণ করা হয়েছে বলেও দাবী করেন তিনি।
উল্লেখ্য, এর আগে গত এপ্রিল মাসেও আরো রোহিঙ্গা ক্যাম্প স্হাপনের জন্য উখিয়ায় নতুন করে পাহাড় কাটা শুরু করেছিল এনজিও সংস্হা ব্র্যাক। রোহিঙ্গা তোষক হিসাবে পরিচিত ব্র্যাক কর্তৃক তখন সবুজ পাহাড় কেটে আরো একটি রোহিঙ্গা শিবির স্থাপনের কার্যক্রম নিয়ে স্থানীয় অধিবাসীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছিল। পালংখালী ইউনিয়নের চৌখালী বনাঞ্চলে ডজন খানেক বিভিন্ন আকৃতির শক্তিশালী বুলডোজার দিয়ে পাহাড়ের পর পাহাড় কেটে সাফ করা হয়েছিল তখন ।
পালংখালী ইউনিয়নের চৌখালী নামক পাহাড়ী এলাকার আগর বাগানটি ধ্বংস করে চলছে আরো একটি রোহিঙ্গা শিবির স্থাপনের এমন কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছিল। স্হানীয়রা জানান, নতুন করে রোহিঙ্গা শিবির স্থাপনের জন্য এনজিও সংস্থা ব্র্যাক ঠিকাদার নিয়োগের মাধ্যমে সেখানে বোল্ডডোজার দিয়ে বনভূমির পাহাড় কেটে মাঠ ও চলাচলের রাস্তা তৈরির কাজ চালিয়েছিল। এ বিষয়ে তখন বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় তথ্যবহুল সংবাদ প্রকাশিত হলে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে নতুন রোহিঙ্গা ক্যাম্প স্হাপন বন্ধ হয়ে যায়।
কিন্তু এখন আবারো বনভূমি উজাড় করে রোহিঙ্গা ক্যাম্প স্হাপন করায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।
পালংখালীর গ্রামবাসী বেদার বলেন, ‘বর্তমানে উখিয়া-টেকনাফে নতুন-পুরাতন মিলে ১২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা বসবাস করছে। এসব রোহিঙ্গাদের জায়গা দিতে বন বিভাগ প্রায় বিলুপ্তির পথে বসেছে। তারপরেও রোহিঙ্গাদের জন্য জমি দেওয়ার কাজ শেষ হচ্ছে না।
পালংখালীর সাধারন জনগন বলেন, শুরু থেকেই স্থানীয় লোকজন এসব রোহিঙ্গাদের বিভিন্নভাবে সাহায্য সহযোগিতা করে আসছে। কিন্তু রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয়রা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে ব্যাপারে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করে গেলেও কিছু অসাধূ সরকারি কর্তা-ব্যক্তি নিজের পকেট ভারী করার জন্য যত্রতত্র স্থাপনা নির্মাণ, রোহিঙ্গা ক্যাম্প স্থাপন করে স্থানীয় লোকজনের ক্ষতি সাধন করে চলছে বলেও তারা অভিযোগ করেন। এমনকি এ নিয়ে স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পায়নি বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন।
এলাকার লোকজনের দাবি এবার রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফিরিয়ে নেয়ার উদ্যোগে সবাইকে এক যুগে কাজ করার উপযুক্ত সময়। আর এমন সময়ে আরো নতুন করে শিবির স্থাপনের কাজটি নিয়ে এলাকাবাসীকে ক্ষুব্ধ করে তুলেছে। এলাকাবাসীর মনে সন্দেহ জেগেছে, মিয়ানমারের রাখাইন থেকে নতুন করে রোহিঙ্গা এনে আশ্রয় দিতেই আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো কৌশলে নতুন করে শিবির স্থাপন করছে।
তারা আরো বলেন, মিয়ানমার থেকে আরো রোহিঙ্গা নিয়ে আসার আগাম প্রস্তুতি হিসেবে কিছু এনজিও এবং আইএনজিও লন্ডাখালীতে ক্যাম্প তৈরি করেছে। কারণ তাদের ব্যবসা হচ্ছে রোহিঙ্গা। রোহিঙ্গা যদি এ দেশ থেকে চলে যায় তাহলে তাদের কোনো কাজ নেই। এ জন্যে লোকজনের বসতভিটা ও বনভূমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করে চলছে এই সব আইএনজিওরা।
সচেতন এলাকাবাসী বলেন, রোহিঙ্গা বসতি স্হাপন করতে পারলে বিশাল বাণিজ্য হয় রোহিঙ্গা তোষক এনজিও গুলোর। বাঁশ ও পলিথিন দিয়ে নির্মিত ১৫ ফিট বাই ২০ ফিটের একটি রোহিঙ্গা বাসার জন্য ১০ /১৫ হাজার টাকা খরচ করে বিদেশী দাতা সংস্হা থেকে একলাখ টাকা পর্যন্ত বিল এনজিওগুলো। এছাড়াও টয়লেট, নলকূপ, রাস্তা ও ড্রেন নির্মানের ক্ষেত্রেও এভাবে বাণিজ্য করে আসছে তারা। তাই সবুজ পাহাড় কেটে ফের নতুন করে রোহিঙ্গা বসতি স্হাপনে মরিয়া হয়ে উঠেছে বিতর্কিত এনজিও ও এদের দোসরগন।
কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম বলেন, রোহিঙ্গারা প্রত্যাবাসনের অপেক্ষায় আছে। কিন্তু ঘোর বর্ষার সম্ভাব্য প্রাকৃতিক দূর্যোগে পড়া রোহিঙ্গাদের সরিয়ে নিতে নতুন ঘরগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে। এছাড়াও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাতায়ত পথ উন্নত করতে এডিবি ও ওয়ার্ল্ড ব্যাংক উন্নয়ন কাজ শুরু করলে কিছু রোহিঙ্গার বাসা সরানো প্রয়োজন পড়বে।
প্রত্যাবসন কমিশনার আরো বলেন, দেশে নতুন করে আর কোন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সুযোগ নেই।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ক্যাম্পের কার্যক্রম দেখভাল করেন ক্যাম্প ইনচার্জগণ। তাই ক্যাম্প এলাকায় এনজিওরা নতুন কি করছে তা দৃষ্টির বাইরে থেকেছে। স্থানীয়দের বাগান দখল করে ঘর নির্মাণ করে থাকলে তা দু:খজনক। এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে বিহিত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও উল্লেখ করেন ইউএনও।
- চকরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন জনপ্রিয়তার তুঙ্গে সাঈদী
- রামুতে পাহাড়ি ছড়ায় গোসল করতে গিয়ে ২ শিশুর মৃত্যু
- চকরিয়ায় ধান ক্ষেত থেকে লম্বা অজগর সাপ উদ্ধার, পরে অবমুক্ত
- পেকুয়ায় চেয়ারম্যান পদে চমক দেখাতে পারে নারী প্রার্থী রুমানা আক্তার, গণসংযোগে গণজোয়ার
- চকরিয়ায় শাখাখালের তীর থেকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার
- চকরিয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে ১১৪ টি ভোট কেন্দ্রে মোট ৩ লক্ষ ৬১ হাজার ১০৩ জন ভোটা
- রামুতে গাড়িযোগে পাচারকালে ২০ হাজার ইয়াবাসহ ২ যুবক আটক
- চকরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন: লড়াই চলছে শেয়ানে শেয়ানে
- চকরিয়া-পেকুয়ায় দুই লবণ চাষী নিহত, উড়ে গেছে বসতঘর
- চকরিয়ায় চেয়ারম্যান ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৩ জন প্রার্থীর মাঝে প্রতীক বরাদ্দ
- চকরিয়ায় প্রভাবশালীর কাছে জিম্মি অসহায় পরিবার
- পেকুয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কে কোন প্রতীক বরাদ্দ পেলেন
- চকরিয়ায় প্রভাবশালীর কাছে জিম্মি অসহায় পরিবার
- চকরিয়ায় চেয়ারম্যান ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৩ জন প্রার্থীর মাঝে প্রতীক বরাদ্দ
- ব্যাপক উৎসাহ—উদ্দীপনায় সাংবাদিক সংসদের এক যুগপূর্তি উৎসব সম্পন্ন
- চকরিয়া-পেকুয়ায় দুই লবণ চাষী নিহত, উড়ে গেছে বসতঘর
- চকরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন: লড়াই চলছে শেয়ানে শেয়ানে
- পেকুয়ায় চেয়ারম্যান পদে চমক দেখাতে পারে নারী প্রার্থী রুমানা আক্তার, গণসংযোগে গণজোয়ার
- চকরিয়ায় শাখাখালের তীর থেকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার
- রামুতে গাড়িযোগে পাচারকালে ২০ হাজার ইয়াবাসহ ২ যুবক আটক
- চকরিয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে ১১৪ টি ভোট কেন্দ্রে মোট ৩ লক্ষ ৬১ হাজার ১০৩ জন ভোটা
- চকরিয়ায় ধান ক্ষেত থেকে লম্বা অজগর সাপ উদ্ধার, পরে অবমুক্ত
পাঠকের মতামত: