ঢাকা: চলমান রোহিঙ্গা সংকটে বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও স্থানীয় জনগণের মানবাধিকার রক্ষার স্বার্থে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গৃহীত ব্যবস্থা দৃশ্যমান নয় বলেও মনে করেন তিনি।
শনিবার (৬ অক্টোবর) জাতীয় মানবাধিকার কমিশন থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কাজী রিয়াজুল হক এসব কথা বলেন। একইসঙ্গে দ্রুততম সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য মিয়ানমারের ওপর জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মাধ্যমে অধিকতর চাপ সৃষ্টি করতেও আহ্বান জানান তিনি।
বিবৃতি রিয়াজুল হক বলেন, ‘মিয়ানমারে গণহত্যার শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মানবতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে প্রশংসিত করিয়েছেন। ১২ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে দীর্ঘ সময় লালন করা বাংলাদেশের পক্ষে কষ্টসাধ্য। এতে দেশের নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন ও কক্সবাজার অঞ্চলের স্থানীয় জনগণের ওপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি হয়েছে। আর তাই সম্প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের ফেরাতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতাসহ ৩ দফা প্রস্তাব দিয়েছেন।’
কাজী রিয়াজুল হক আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার সুরক্ষায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ অন্যরা যথাযথ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। তবে রোহিঙ্গাদের ফেরাতে মূল ভূমিকা পালন করতে হবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে। মিয়ানমার লোক দেখানো একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এখনো একজন রোহিঙ্গাও ফেরত নেয়নি দেশটি। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গৃহীত ব্যবস্থা দৃশ্যমান নয়।’
কাজী রিয়াজুল হক বলেন, ‘জাতিসংঘে প্রদত্ত প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এবং রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার ও নাগরিকত্বসহ নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনে মিয়ানমারের ওপর অর্থনৈতিক অবরোধসহ চাপ সৃষ্টিতে কূটনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধি, রোহিঙ্গাদের মানবিক বিপর্যয়ের বিষয়ে বিশ্ববাসীর মনোযোগ আকর্ষণে প্রয়োজনে একাত্তরের ন্যায় আন্তর্জাতিক কনসার্ট এবং আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনসহ অন্যান্য কর্মতৎপরতা চালিয়ে গেলে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান সম্ভব বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
আমরা রোহিঙ্গা সংকটের শুরু থেকে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘনের দায়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের দাবি জানিয়ে এসেছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, এই বিচার প্রক্রিয়া শুরু হলে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার দিয়ে নিজ দেশে ফিরিয়ে নেবে।’
পাঠকের মতামত: