ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪

উখিয়ার সীমান্তে ৩ শতাধিক ইয়াবা ব্যবসায়ী অধরা

নিউজ ডেস্ক ::
রমজানের শুরু থেকেই সারা দেশব্যাপী মাদকবিরোধী সাঁড়াশি অভিযান শুরু করেছে বিভিন্ন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা। এরই ধারাবাহিকতায় কক্সবাজারের বিভিন্ন উপজেলায় আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে এনকাউন্টারে এক ডজন মাদক ব্যবসায়ী নিহত, অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করা হয়েছে। মাদকের স্বর্গরাজ্য উখিয়ায় উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারেনি আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা। উখিয়া বাঁচাও আন্দোলনের নেতাদের দাবি, এ উপজেলায় ৩ শতাধিক মাদক ব্যবসায়ী রয়েছে। যারা ইয়াবা ও মাদক সেবন, বাজারজাতকরণ ও পাচারকাজে জড়িত। উখিয়া থানা পুলিশ বলছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ৩৫ জন ইয়াবা ও মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে মো. শফি নামের এক মাদক ব্যবসায়ীকে ২শ’ ইয়াবাসহ আটক করেছে পুলিশ। তার পরিবারের দাবি, শফি মাদক ব্যবসায়ী নয়, সে একজন শ্রমিক নেতা ও যানবাহন চালক। উখিয়ায় মাদকবিরোধী অভিযানের ১৮ দিনেও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে চিহ্নিত ইয়াবা পাচারকারীদের আটক বা ইয়াবা উদ্ধার করতে ব্যর্থ হওয়ায় বিষয়টিকে সচেতন মহল ভিন্ন চোখে দেখছেন। তারা বলছেন, মাদক ব্যবসায়ীদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, গাড়ি, বাড়ি, সহায়-সম্পত্তি বহাল তবিয়তে এবং এসব মাদক ব্যবসায়ীও নিজ নিজ অবস্থানে নিরাপদে অবস্থান করছেন। সরেজমিন পালংখালী ইউনিয়নের থাইংখালী, তাজনিমারখোলা, রহমতেরবিল, ধামনখালী, আঞ্জুমানপাড়া, বালুখালী পানবাজার, কুতুপালং, উখিয়া সদর, মৌলভীপাড়া, হাজিরপাড়া, কোটবাজার, সোনারপাড়া, মরিচ্যাসহ বেশ কয়েকটি ঝুঁকিপূর্ণ মাদক ব্যবসায়ী অধ্যুষিত জনপদ ঘুরে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে তাদের সম্পর্কে নানা তথ্য জানা গেছে। এসব ইয়াবা ব্যবসায়ীর কারণে আরও নতুন নতুন ইয়াবা ব্যবসায়ীর জন্ম হচ্ছে। উখিয়া বাঁচাও আন্দোলনের নেতা আবুল কাশেম স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে বলেন, কতিপয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজনের সঙ্গে ইয়াবা সিন্ডিকেটের আঁতাত ও সম্পৃক্ত থাকার কারণে মাদকবিরোধী অভিযানের ১৬ দিনেও উল্লেখযোগ্য কোনো ইয়াবা ব্যবসায়ী ধরা পড়েনি। তিনি বলেন, এসব ইয়াবা ব্যবসায়ীকে আইনের আওতায় আনা না হলে মাদকবিরোধী অভিযানে সফলতা আসবে না। কারণ এসব ইয়াবা ব্যবসায়ীর রয়েছে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি এবং তাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে দেশের বিভিন্ন স্থানের রাঘববোয়াল ইয়াবা সিন্ডিকেট। রাজাপালং ইউনিয়নের জাদিমুরা ঘুরে স্থানীয় কয়েক গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক সময়ের দরিদ্র কবির আহমদের বহুতল ভবনের নির্মাণকাজ করছেন শত শত শ্রমিক। মাত্র ১৫ দিনে ভবনের একটি বিশাল অংশের নির্মাণকাজ শেষ হয়ে গেছে। মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার আতঙ্কে কয়েক দিন আগে সে গা-ঢাকা দিয়েছে। বালুখালী গ্রামের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সিরাজুল হক, পেশাদার কৃষক নিয়ামত আলী, বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী গফুর উল্লাহ দাবি করেন, উখিয়ার আনাচে কানাচে গত ৫ বছরে যেসব বহুতল ভবন, আলিশান ইমারত ও বহুমুখী ডিজাইনের ঘরবাড়ি তৈরি হয়েছে, তাদের আইনের আওতায় আনা হলে ইয়াবা বিস্তারের আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে।

উখিয়া থানার ওসি আবুল খায়ের জানান, তার থানায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ৩৫ জন ইয়াবা ও মাদক ব্যবসায়ী রয়েছে। এদের মধ্যে মো. শফি নামের একজন শ্রমিক নেতাকে ২শ’ ইয়াবাসহ আটক করা হয়। একজন ডিএসবি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তাদের কাছে ১৩৫ জন ইয়াবা ব্যবসায়ীর তালিকা রয়েছে। যাদের আইনের আওতায় আনার জন্য তারা দিনরাত পরিশ্রম করছেন।

পাঠকের মতামত: