ঢাকা,মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪

লামায় ছাত্রকে শাসন করায় শিক্ষককে প্রকাশ্যে জুতাপেটা, সর্বত্র ক্ষোভ ও নিন্দা

lamaলামা প্রতিনিধি :::

বান্দরবানের লামায় ছাত্র শাসনের অপরাধে অভিভাবকের হাতে শিক্ষক হলেন জুতাপেটার শিকার। ন্যাক্কারজনক ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ফাইতং উচ্চ বিদ্যালয়ে। এঘটনার পর অপমানে ও অভিমানে নির্যাতিত শিক্ষক আর নিজ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।
জানা গেছে, গত ৭ জুন স্কুলের ৭ম শ্রেণীর ছাত্র আবু নায়েমকে নিয়মিত স্কুলে না আসার কারণে বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক মো. শহীদুল ইসলাম শাসন করেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এদিন শিক্ষার্থীর চাচা আনোয়ার হোসেন শিক্ষককে জুতাপেটা করে। এদিকে ভয়ে ও লোকলজ্জায় নিরবে এমন অপমান সহ্য করে যাচ্ছেন শিক্ষক মো. শহীদুল ইসলাম।
শিক্ষক মো. শহীদুল ইসলাম জানান, আমি একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী শিক্ষক। আমার একটি পা নেই। ৭ম শ্রেণীর ছাত্র আবু নায়েম নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসতনা। তার বাবা ডাক্তার শাকের অনুরোধে আমি নায়েমকে শাসন করি। ঘটনার দিন বেলা ১২টায় স্কুল পরিচালনা কমিটির অভিভাবক সদস্য আলী আকবর আমাকে স্কুল থেকে ডেকে পাশের মোকারমের দোকানে নিয়ে যায়। সেখানে ছাত্রের চাচা আনোয়ার হোসেন প্রকাশ জর্দ্দা আনোয়ার ছাত্রের বাবা ডাক্তার শাকেরের নির্দেশে আমাকে প্রকাশ্যে জুতা পেটা করে। এসময় ওয়ার্ড মেম্বার শহীদুল ইসলাম মিন্টু সামনে থাকলেও বাধা দেয়নি। ভয়ে ও লোকলজ্জায় বিষয়টি আমি কাউকে বলিনি।
এবিষয়ে জানতে ডাক্তার শাকের কে ফোন করলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিন বলেন, একজন শিক্ষককে জনসম্মুখে জুতা দিয়ে মারধর করা গুরুতর অন্যায়। বিষয়টি জানতে পেরে আমরা স্কুল ম্যানেজিং কমিটিকে জানিয়েছি।
স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শামসুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি প্রধান শিক্ষক আমাকে জানিয়েছেন। উভয় পক্ষকে নিয়ে বসার কথাবার্তা চলছে। ফাইতং ইউপি চেয়ারম্যান মো. জালাল উদ্দিন বলেন, শিক্ষকের গায়ে হাত তোলা অন্যায় হয়েছে। ছাত্রের অভিভাবকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার।
লামা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমাকে বিষয়টি কেউ জানায়নি। তবে শিক্ষকের গায়ে হাত তোলা ঠিক হয়নি। বিষয়টি আইনি প্রক্রিয়ায় সমাধান করা হবে।
অপরদিকে শিক্ষককে মারধর করার বিষয়টি জানাজানি হলে উপজেলার সকল মহলে নিন্দার ঝড় উঠেছে। এবিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির নেতারা লামার শীর্ষ মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

পাঠকের মতামত: