কুতুবদিয়া মৎস্য অফিসে বার্ষিক বরাদ্দকৃত টাকা ব্যয় না করে আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। চলতি ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে বিভিন্ন খাতে বরাদ্দকৃত লক্ষাধিক টাকা আত্মসাৎ করেছে মৎস্য কর্মকর্তা ও একজন অফিস সহকারি। ভূয়া বিল ভাউচারে দু‘জনেরই স্বাক্ষর রয়েছে। “কুতুবদিয়া মৎস্য অফিসে ভূয়া বিলের মাধ্যমে লাখ টাকা আত্মসাৎ” শিরোনামে গত ১৪ মার্চ (মঙ্গলবার) পর্যটন নগরী কক্সবাজার থেকে প্রকাশিত পত্রিকাসহ কয়েকটি দৈনিকে সংবাদটি প্রকাশিত হলে এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হলে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
সূত্রে প্রকাশ, বিগত ১৪ আগষ্ট ২০১৬ ইং তারিখে বাংলাদেশ মৎস্য অধিদপ্তর প্রেরিত পত্র নং ৩৩.০২.০০০০.১১৭.২৪.০০৩.১৫.৫২৫(৪৮৫) কক্সবাজার জেলার (সংশ্লিষ্ট দপ্তর কোড ৪০৩) কুতুবদিয়া উপজেলায় (কোড ৪০৭) (গ) অনুন্নয়ন “৩-৪৪৩৫-০০০০-৪৮১৭-টেলেক্স/ফ্যাক্স/ইন্টারনেট” (ঘ) অনুন্নয়ন “৩-৪৪৩৫-০০০০-৪৮২১-বিদ্যৎ” (ঙ) অনুন্নয়ন “৩-৪৪৩৫-০০০০-৪৮২৩-পেট্রোল ও লুব্রিক্যান্ট” (চ) অনুন্নয়ন “৩-৪৪৩৫-০০০০-৪৮২৮-ষ্টেশনারী, সীল ও স্ট্যাম্প” (ছ) অনুন্নয়ন “৩-৪৪৩৫-০০০০-৪৮৫১-শ্রমিক মজুরি” (জ) অনুন্নয়ন “৩-৪৪৩৫-০০০০-৪৮৮৮-কম্পিউটার সামগ্রী” (ট) অনুন্নয়ন “৩-৪৪৩৫-০০০০-৪৯০১-মোটর যানবাহন” খাতে বরাদ্দকৃত প্রায় দুই লক্ষাধিক টাকা ক্রয় সরবরাহ ও সেবা বাবদ ব্যয়ের ভুয়া বিল ভাউচার বানিয়ে আত্মসাৎ করে বলে জানা গেছে। ওই ভূয়া ভাউচারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ ছাবেদুল হক ও অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর জিয়া উদ্দিনের সীলসহ স্বাক্ষর রয়েছে।
একটি ভাউচারে দেখা যায়, কপিল উদ্দিন নামের কাল্পনিক এক ব্যাক্তির নামে ভূয়া বিল তৈরি করে গত ২০১৬ সনের ২০ ডিসেম্বর ঝাড়–দার উল্লেখ করে ৬ হাজার ৩শ টাকা উত্তোলন করে। খোঁজ নিয়ে যানা যায় এ নামের কোন কর্মচারী অফিসে নেই। ঝাড়–দার না থাকায় প্রতিদিন নিরুপায় হয়ে অফিসের কর্মচারী (এমএলএসএস) এ.কে. খাঁন নিজেই অফিস কক্ষ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ও অন্যান্য কাজ করে থাকেন বলে সরেজমিনে প্রমান পাওয়া যায়।
আরেকটি ভাউচারে দেখা গেছে, উপজেলার মেডিকেল গেইটে অবস্থিত মেসার্স বিসমিল্লাহ লাইব্রেরী থেকে উপজেলায় নিবন্ধিত জেলেদের তালিকা ফটোকপি করেছে ৭৫০ কপি ২ টাকা মূল্যে ১৫শ টাকা। অথচ ঐ লাইব্রেরীর মালিক তোফাইল আহম্মদ বলেছে তার লাইব্রেরীতে কোন সময়ে ফটোকপি মেশিন ছিল না।
অনিয়মের বিষয় নিয়ে কক্সবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবদুল আলিমের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, কুতুবদিয়া মৎস্য অফিসে অনিয়মের বিষয় জানার পর তিন সদস্য বিশিষ্ট বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও কুতুবদিয়া কলেজের প্রতিষ্টাতা অধ্যাপক আব্দুছ ছাত্তার বলেন, অনিয়মের বিষয়টি যথাযথ ভাবে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবী জানাচ্ছি।
পাঠকের মতামত: