ঢাকা,শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪

চকরিয়ার ইউএনও ও শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মন্ত্রী পরিষদে আবেদন করলো নির্যাতিত প্রধান শিক্ষিকা

ovijog_1বার্তা পরিবেশক :

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্তকালীন মামলা ভিন্নখানে প্রবাহিত, উস্কানি ও হুমকি দেয়ার অভিযোগ এনে মন্ত্রী পরিষদের সচিব বরাবরে লিখিত আবেদন করেছে নির্যাতিত এক প্রধান শিক্ষিকা। শনিবার আবেদনটি প্রেরণ করেন চকরিয়া রিংভং দক্ষিণ পাহাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা হুমাইরা আজাদী। তিনি চকরিয়া মালুকঘাট এলাকার বাসিন্দা।

আবেদনের সূত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সাল থেকে রিংভং দক্ষিণ পাহাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষিকার দায়িত্ব পালন করে আসছেন হুমাইরা আজাদী। কিন্তু চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে স্কুল চলাকালীন একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি ও তার স্ত্রী গিয়ে মালেকা বেগম নামে এক মহিলাকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ ও যোগদানপত্র প্রদানের জন্য চাপ সৃষ্টি করে। এতে হুমাইরা অক্ষমতার কথা ব্যক্ত করেন। তাই ক্ষিপ্ত হয়ে ওই প্রভাবশালী ব্যক্তি ও তার স্ত্রী ছাত্রছাত্রীদের সামনে হুমাইরাকে মারধর, বিবস্ত্র ও লাঞ্ছিত করে। এ ঘটনায় ৩১ জানুয়ারি তিনজনের নাম উল্লেখ করে কক্সবাজার বিচারক (জেলা জজ) বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা (নং-১৭৮) দায়ের করেন। মামলাটি জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। বর্তমানে এ মামলাটি তদন্তনাধীন রয়েছে। এ অবস্থায় মামলাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করা, হয়রানি ও চাপ সৃষ্টি করাসহ হুমাইরাকে মানসিকভাবে দুর্বল করার জন্য চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাহেদুল ইসলাম ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা খোরশেদুল আলম চৌধুরী ক্ষমতার অপব্যবহার করে মামলা প্রত্যাহারের দাবি নিয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষকদের সমাবেশ করতে বাধ্য করেছেন বলে আবেদনে উল্লেখ রয়েছে।

এমনকি এই দুই কর্মকর্তা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষকদের গত ৩ ফেব্রুয়ারি চকরিয়া উপজেলা প্রশাসনিক ভবন চত্বরে মামলা প্রত্যাহার করতে চাপ সৃষ্টির জন্য সমাবেশ করতে বাধ্য করিয়েছে। ওই কথিত সমাবেশ চলাকালে সরকারি কর্মকর্তাদ্বয় কার্যালয়ে বসে থেকে এ সমাবেশ তত্ত্বাবধান করেছে বলে আবেদন সূত্রে জানা গেছে। এছাড়া হুমাইরার বিরুদ্ধে নিজেদের তৈরি করে দেয়া স্মারকলিপি আবার নিজেরাই গ্রহণ করেছেন। সমাবেশে একজন জেলা পরিষদের সদস্য, কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যান ও কয়েকজন সরকারি স্কুলের শিক্ষক হুমাইরা আজাদীকে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।

এই দুই সরকারি কর্মকর্তা করতালি দিয়ে সমাবেশে উৎসাহ দেয়া, বিচারাধীন মামলায় প্রভাব বিস্তার করা, মামলা প্রত্যাহারের হুমকি দিতে সমাবেশের আয়োজন করা, মামলা আপোষ করতে লোক পাঠানো, সরকারি কর্মকর্তাদের উষ্কানি প্রদানসহ সার্বিক বিষয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বলে আবেদনে উল্লেখ করেন এই প্রধান শিক্ষিকা।

বিষয়টি সরেজমিনে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিতে ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে শনিবার লিখিত এই আবেদন করেছে বলে জানান প্রধান শিক্ষিকা হুমাইরা আজাদী। পাশাপাশি আবেদনের অনুলিপি প্রেরণ করা হয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের সচিব ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার বরাবরে।

পাঠকের মতামত: