ঢাকা,বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

টেকনাফের নাফনদী ইয়াবা পাচারকারী ও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের দখলে

maiগিয়াস উদ্দিন ভুলু , টেকনাফ :::

প্রাকৃতিক দৃশ্যে ঘেরা টেকনাফের বিখ্যাত নাফনদী এখন বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডের রাজ সাক্ষী এবং সাধারণ মানুষের আতংকের নদী হিসাবে পরিচিত হচ্ছে। কারন এই নদীটির পুর্ব দিকে রয়েছে সীমান্তবর্তী মাদক উৎপাদিত দেশ মিয়ানমার রাখাইন রাজ্য। সেই দেশের চলমান সহিংসতা, রোহিঙ্গা মুসলিমদের উপর লাগাতার নির্যাতন, মানুষ হত্যা, নারী ধর্ষণ তার পাশাপাশি এই নদী পাড়ি দিয়ে প্রতিনিয়ত পাচার হয়ে আসছে কোটি কোটি টাকার ইয়াবা ও বিভিন্ন প্রকার মাদক। মাঝে মাঝে এই নাফনদীতে ভাসতে দেখা যায় রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশুদের গলিত লাশ। এই সমস্ত বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডে জর্জরিত হয়ে বিপাকে পড়ছে টেকনাফ উপজেলার প্রায় ১০ হাজার জেলে পরিবার। নাফনদীর সীমান্ত এলাকায় কোন অপরাধ কর্মকান্ড সৃষ্টি হলে মাছ শিকারে বাধাগ্রস্ত ও বিভিন্ন প্রকার দুর্ভোগের শিকার হতে হয় এই সমস্ত জেলে পরিবারের সদস্য গুলোকে।

টেকনাফ সীমান্ত এলাকায় জেলে পরিবার গুলোতে খবর নিয়ে আরো জানা যায়, ইদানিং মিয়ানমারের আরকান প্রদেশে চলমান সহিংসতার পর থেকে নাফনদীতে মৎস্য আহরণ ঝুকিপুর্ন হয়ে উঠেছে। নাফনদীর কেন্দ্রীক জেলেরা অনেকেই মাছ ধরা বন্ধ করে দিয়েছে। নাফনদীতে মাছ শিকার করতে গিয়ে প্রায় সময় মিয়ানমারের বিজিপি সদস্যরা বিনা অপরাধে মাছ শিকার করা অবস্থায় ধরে নিয়ে যায় জেলেদেরকে। তাদের হাতে ধরা পড়ে টেকনাফ উপজেলার প্রায় অর্ধশতাধিক জেলে মিয়ানমারে কারাভোগ করছে। নাফনদীতে মাছ শিকার করা কয়েকজন জেলেদের সাথে কথা বলে আরো জানা যায়, এই নদীতে একদিন মাছ শিকার করতে না পারলে জেলে পরিবার গুলোর সদস্যদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তারা দু:খ প্রকাশ করে আরো বলেন, টেকনাফ উপজেলায় বসবাসরত বেশ কিছু রোহিঙ্গা যুবক মাছ শিকারের নামে নাফনদীতে নেমে ইয়াবা পাচার ও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের কাজে ব্যবহার হচ্ছে। আর তাদেরকে সহযোগীতা করছে স্থানীয় রোহিঙ্গা পাচারকারী দালালরা। সেই অবৈধ ইয়াবা পাচার ও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করার দায়ভার আসছে আমাদের উপর। তাই আমাদের দাবি এই সমস্ত রোহিঙ্গা জেলেদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওয়াতায় নিয়ে আসলে নাফনদী থেকে অনেক অপরাধ কমে আসবে। বন্ধ হবে ইয়াবা পাচার, কমে আসবে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ, আর আমরা মনের সুখে নাফনদীতে মাছ শিকার করতে পারব।

এব্যাপারে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: শফিউল আলম জানান, মিয়ানমারের লাগাতার সহিংসতার কারনে টেকনাফ সীমান্ত এলাকায় রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বৃদ্ধি পায়। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশী জেলেদের নৌকা ব্যবহার করে মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা অনুপ্রবেশের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। তার পাশাপাশি বাংলাদেশের বেশ কয়েকজন জেলে নাফনদীতে মাছ শিকার করতে গিয়ে জলসীমা অতিক্রম করার অপরাধে বেশ কয়েকজন জেলে মিয়ানমারের বিজিপি সদস্যদের হাতে আটক হয়েছে। সীমান্ত এলাকায় আইনশৃংখলা পরিস্থিতি ও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নাফনদীতে মাছ শিকার বন্ধ করা হয়েছে। তবে সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি ভাল হলে পুনরায় জেলেদের মাছ শিকারের অনুমতি প্রধান করা হবে।

পাঠকের মতামত: