ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

চট্টগ্রামে ৩৩ লাখ টাকায় আফ্রিকার দুটি বাঘ আসছে

tigerচট্রগ্রাম প্রতিনিধি :::

৩৩ লাখ টাকা দিয়ে সুদূর দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দুটি বাঘ কিনেছে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। বাঘ দুটি আজকালের মধ্যে বাংলাদেশে এসে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। গত ৪ বছর ধরে বাঘহীন খাঁচা থাকায় দর্শনার্থীদের মনে এই নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার হয়।
অবশেষে কর্তৃপক্ষ দরপত্রের মাধ্যমে দুটি বাঘ কিনার বিষয় চূড়ান্ত করে। যার মধ্যে একটি পুরুষ বাঘ, অন্যটি বাঘিনী। এই উপলক্ষে নতুনভাবে সাজছে চট্টগ্রামের চিড়িয়াখানাটি। কর্তৃপক্ষ জানান, রয়েল বেঙ্গল টাইগার প্রজাতির বাঘ দুটি গতকালের মধ্যে ঢাকায় আসায় কথা রয়েছে। এরপর সেখান থেকে চট্টগ্রাম নিয়ে যাওয়া হয়। তবে বাংলাদেশে আসার আগে তারা কাতারে অবস্থান করছিল।
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর মঞ্জুর মোর্শেদ জানান, সর্বশেষ দর্শনার্থীদের জন্য ৩টি বাঘ আনা হয়েছিল। কিন্তু তার মধ্যে অসুখে ভুগে মাত্র ২৩ বছর বয়সে মারা যায় ভীম। এরপর ২০০৭ সালের ১১ই জুলাই ১০ বছর বয়সে মারা যায় ‘চন্দ্র’ নামের আরেকটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার। শেষমেশ ২০১২ সালের ৩০শে অক্টোবর পূর্ণিমার মৃত্যু হলে পুরোপুরি শূন্য হয়ে পড়ে বাঘের খাঁচা।
চিড়িয়াখানার একজন কর্মকর্তা জানান, বাঘশূন্য হয়ে পড়ে থাকায় চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা থেকে দর্শকদের অনেকেই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন বিগত সময়ে। সর্বশেষ চিড়িয়াখানার একমাত্র বাঘিনী ১৯ বছর বয়স্ক ‘পূর্ণিমা’ মারা যাওয়ার পর এই নিয়ে একাধিকবার বাঘ কেনার উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু সব উদ্যোগই ভেস্তে যায়।
এর আগে ঢাকা চিড়িয়াখানা থেকে ২০০৩ সালে ‘পূর্ণিমা’কে আনা হয়েছিল। পূর্ণিমার সঙ্গে থাকা বাঘ ‘চন্দ্র’ মারা যায় ২০০৭ সালে। ৩ বছর আগে পূর্ণিমার ক্যানসার ধরা পড়েছিল। পরে ধুঁকে-ধুঁকে নিজের খাঁচায় মারা যায় পূর্ণিমা।
চিড়িয়াখানার ভেটেরিনারি কর্মকর্তা ও কিউরেটর ডা. মো. মনজুর মোরশেদ বাঘিনীটি প্রত্যাশার চেয়েও বেশি দিন বেঁচে ছিল দাবি করে বলেন, আমরা পূর্ণিমাকে যত্ন ও চিকিৎসাসেবার ত্রুটি করিনি। তাই চিকিৎসকদের ধারণার চেয়েও বেশি দিন বেঁচে ছিল সে।  তিনি আরো বলেন, চিড়িয়াখানাকে পশু-পাখিতে সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে ঢাকা চিড়িয়াখানা ও ডুলাহাজারা সাফারিপার্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছি নিয়মিত। আশা করছি এবার নতুন বাঘ দুটি এলে দর্শনার্থীদের প্রচুর সমাগম ঘটবে।
১৯৮৯ সালে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা যাত্রা করলেও এখনো এর উন্নয়নে সরকারি কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়েনি। নগরীর পাহাড়ঘেরা ফয়’স লেকে ছয় একর জায়গা জুড়ে স্থাপিত হয়েছে চিড়িয়াখানাটি। বর্তমানে এখানে বাঘের মতো অন্য প্রাণীদেরও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে মৃত্যু ঘটছে বলে মন্তব্য একজন দর্শকের।

পাঠকের মতামত: