ঢাকা,বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

উত্তাল চচ্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, নিহত ছাত্রলীগ নেতার শরীরে আঘাতের চিহ্ন

image_170073_0চবি প্রতিনিধি :::
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নিহত দিয়াজ ইরফান চৌধুরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।

লাশ উদ্ধারের পর দিয়াজের শরীরের তিন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আফসানা বিলকিস।
তিনি বলেন, “দিয়াজের গলার উভয় পাশে আঁচড়ের চিহ্ন আছে। তবে বাঁ পাশে আঁচড়ের পরিমাণ বেশি। এ ছাড়া তার হাতের কবজি ও পায়ে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ভিসেরা রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।” এর আগে রোববার রাত ১২টায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় ছাত্রলীগ নেতার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সোমবার সকালে তার মহদেহ নিতে এসে পরিবারের সদস্যরা এটিকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে অভিযোগ করেন।

দিয়াজের মামা রাশেদ আমিন চৌধুরী ও বোনের স্বামী সরওয়ার আলম বলেন, কিছুদিন আগে দিয়াজের বাসায় যারা হামলা চালিয়েছিল, তারাই পরিকল্পিতভাবে তাকে খুন করে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে লাশ ঝুলিয়ে দিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মো. মামুন বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে সামান্য একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে কয়েকদিন আগে দিয়াজসহ আমাদের চারজনের বাসায় হামলা হয়েছে। এর পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সহকারী প্রক্টরসহ ছাত্রলীগ সভাপতি টিপু ও তার গ্রুপের নেতা-কর্মীদের হুমকি পেয়ে আসছি।”
এটি একটি হত্যাকাণ্ড বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। এদিকে দিয়াজকে হত্যা করা হয়েছে এমন অভিযোগ এনে এ ঘটনার বিচার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়গামী সব ট্রেন ও সড়ক অবরোধ করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

সোমবার সকাল ৮টায় ক্যাম্পাসগামী প্রথম ট্রেনটি ফতেয়াবাদ এলাকায় পৌঁছালে তারা আটকে দেয়। এর পরবর্তী ট্রেনও একই স্থানে পৌঁছালে তারা আটকে দেন। এর ফলে কোনো ট্রেনই ক্যাম্পাসে পৌঁছাতে পারেনি।
একই ঘটনায় হাটহাজারী সড়কের বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক এলাকায়ও অবরোধ করেন তারা। এ ছাড়া চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়কের নন্দীরহাটে অবরোধ করেছেন বিক্ষুব্ধ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা।
এ সময় তারা দিয়াজ ইরফান চৌধুরীকে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে বিক্ষোভ মিছিল করতে থাকেন। অবরোধের ফলে চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

এদিকে দিয়াজের মৃত্যুর খবরে শোক প্রকাশ করেছে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদ। সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন জানান, “আমরা শোকাহত। দিয়াজের মত একটি ছেলে এমন কাজ করেছে বলে বিশ্বাস হচ্ছে না।”
এটি হত্যাকাণ্ড কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ফরেনসিক রিপোর্ট পাওয়ার পরে কোনো ধরনের অসঙ্গতি পাওয়া গেলে আমরা ব্যবস্থা নেব।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু হলের সম্প্রসারণ ও নতুন কলা অনুষদ ভবনের সম্প্রসারণের ৯৫ কোটি টাকা টেন্ডার নিয়ে চবি ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। এর জের ধরে গত ৩০ অক্টোবর দিয়াজের বাসায় ভাঙচুর ও লুটপাট হয়। ওই ঘটনার পর থানায় মামলা করতে গিয়ে হেনস্তার শিকার হন দিয়াজের মা।

পাঠকের মতামত: