ঢাকা,বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

চবির সুবর্ণজয়ন্তী আজ

cu-1_1চবির সুবর্ণ জয়ন্তিতে ২৩ তম ব্যাচের ছাত্র কক্সবাজার নিউজ ডট কম (সিবিএন)’র সম্পাদক অধ্যাপক আকতার চৌধুরী। সাথে মেঝ মেয়ে আরিয়া চৌধুরী আরিশা ও ছোট মেয়ে আমাইরা চৌধুরী রূপ।

চবি সংবাদদাতা:

১৯৬৬ সালে আজকের এই দিনে চট্টগ্রাম শহর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে হাটহাজারী উপজেলার এক নির্জন পাহাড়ি ও সমতল এলাকায় প্রায় ১৭০০ একর জায়গা নিয়ে যাত্রা শুরু করে দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। সময়ের চাকা ঘুরে আজ ৫০ বছর পূর্ণ করলো দক্ষিণ অঞ্চলের এ সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ।

প্রকৃতির পাঠশালা হিসেবে খ্যাত এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য ছিলেন প্রফেসর ড. আজিজুর রহমান মল্লিক। প্রতিষ্ঠালগ্নে মাত্র চারটি বিভাগ, আটজন শিক্ষক ও ২২০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে ৪৩টি বিভাগ ও সাতটি ইনস্টিটিউটে ২৩ হাজার ৬৮৭ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। এই বিপুল পরিমাণ শিক্ষার্থীর মাঝে জ্ঞানের আলো ছড়াচ্ছেন ৬৮৭ জন নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক।

গৌরবের ৫০ বছর মহাসমারোহে আয়োজনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। এ উপলক্ষে আজ ও আগামীকাল দুই দিনব্যাপী উদযাপিত হবে সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব। সাবেক ও বর্তমানদের অংশগ্রহণে যে মহামিলনের সৃষ্টি হবে এর জন্য প্রস্তুত পুরো বিশ্ববিদ্যালয়।

প্রাণের এই উৎসবকে কেন্দ্র করে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় সেজেছে বর্ণিল সাজে। ১ হাজার ৭০০ একর এলাকাজুড়ে আজ উৎসবের আমেজ। কৃত্রিম আলোর ঝলকানিতে উদ্ভাসিত পুরো বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের রাস্তাজুড়ে শোভা পাচ্ছে নানা রঙের পতাকা।

এদিকে, সাবেক শিক্ষার্থীদের বরণ করে নিতে প্রস্তুত তাদের বিভাগগুলোও। বিভাগের বর্তমান শিক্ষার্থীরা নিজ উদ্যোগে নানা রঙে ফুটিয়ে তুলছে রঙিন আলপনা।

আজ ১৮ নভেম্বর বিকেল ৩টায় চট্টগ্রাম শহরের বাদশা মিয়া সড়কে অবস্থিত চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে সুবর্ণজয়ন্তী র‌্যালির মধ্যে দিয়েই শুরু হবে উৎসবের মূল আনুষ্ঠানিকতা। রঙ-বেরঙের বিভিন্ন ব্যানার-ফেস্টুন ও তিনটি প্রাণীর প্রতিকৃতি দিয়ে সজ্জিত থাকবে এ র‌্যালি। নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড় প্রদক্ষিণ করে র‌্যালিটি সি.আর.বি শিরীষ তলায় গিয়ে শেষ হবে।cu-2_1

সন্ধ্যায় সাবেক শিক্ষার্থীদের সম্মানে জিইসি কনভেনশনে অনুষ্ঠিত হবে ‘ওয়েলকাম নাইট’। যেখানে প্রখ্যাত সংগীত শিল্পী রুনা লায়লা সংগীত পরিবেশন করবেন। এছাড়া থাকছে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবান।

১৯ নভেম্বর (শনিবার) দ্বিতীয় দিনের আয়োজন অনুষ্ঠিত হবে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে। এ দিন বেলা সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবের শুভ উদ্বোধন করবেন। এছাড়া প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।

সুবর্ণজয়ন্তীর বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রফেসর ড. আনিসুজ্জামান। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ জন মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদের পরিবারের হাতে তুলে দেয়া হবে স্মারক সম্মাননা। দিনভর সাবেকদের স্মৃতিচারণের পাশাপাশি বিকেলে ক্যাম্পাস মাতাতে মঞ্চে উঠবে দেশসেরা তিন ব্যান্ডদল আর্টসেল, ওয়ারফেজ ও লালন।

৩৫ হাজার মানুষের এ আয়োজনে সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এ দিন পাঁচ শতাধিকের অধিক পুলিশ মোতায়েন থাকবে ক্যাম্পাসে। থাকবে র‌্যাবের টহল দল। অনুষ্ঠান স্থলের চারপাশ থাকবে নিরাপত্তার চাদরে মোড়া।

সুবর্ণ জয়ন্তীতে বর্ণিল সাজে চবি ক্যাম্পাস

এছাড়া সাদা পোশাকে নিয়োজিত থাকবে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সার্বক্ষণিক পুলিশ মোতায়েন থাকবে।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য ১৯ নভেম্বর বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাছাড়া শহরের জমায়তুল ফালাহ মসজিদের সামনে থেকে সকাল ৮টায় ৪৫টি বাস বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে।

অন্যদিকে, ক্যাম্পাসের খাবারের দোকানগুলো যাতে বাড়তি মূল্য আদায় করতে না পারে সেজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে মূল্য তালিকা টাঙানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। মূল্য তালিকার বাইরে বিক্রির অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থাও নেয়া হবে।

সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আলী আজগর চৌধুরী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের এ মহা আয়োজনকে সফল করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বদ্ধপরিকর।

১৯ নভেম্বর অনুষ্ঠান স্থলের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বজায় রাখতে ৩০ ফুট উঁচু একটি ‘ওয়াচ টাওয়ার’ স্থাপন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে সার্বক্ষণিক বাইনোকুলারের মাধ্যমে পুরো অনুষ্ঠানের নজরদারি করা হবে। এছাড়া অধিক নিরাপত্তার জন্য অনুষ্ঠান স্থলের চারপাশে ২০টি সিসি ক্যামেরাও স্থাপন করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, বিশাল এ আয়োজনের পর দিন ২০ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য তার ওপর অর্পিত ক্ষমতাবলে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছেন।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য অনুষ্ঠানের পর দিন সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে পরিচ্ছন্ন টিম পাঠানো হবে।

চবির সুবর্ণ জয়ন্তীতে যাওয়ার পথে স্বপরিবারে সিবিএন সম্পাদক অধ্যাপক আকতার চৌধুরী।

পাঠকের মতামত: