৫৮টি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে ‘সম্মিলিত জাতীয় জোট’ নামের বিশাল একটি জোট গঠন করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। রবিবার সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে এ জোটের ঘোষণা দেন এরশাদ।
২টি নিবন্ধিত দল ও ২টি জোটসহ মোট ৪টি শরীক দল নিয়ে এ জোট গঠন করা হয়েছে। সম্মিলিত জোটের শরীক দলগুলো হলো- জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, জাতীয় ইসলামী মহাজোট এবং বাংলাদেশ জাতীয় জোট (বিএনএ)। এদের মধ্যে ইসলামী মহাজোটে আছে ৩৪টি ইসলামী দল এবং বিএনএতে আছে ২২টি দল। সব মিলিয়ে এরশাদের নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত জাতীয় জোটে দল ৫৮টি।
জোট গঠনের নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে, আল্লাহর প্রতি সর্বোচ্চ বিশ্বাস, আস্থা রেখে দেশ ও জাতীর স্বার্থে জোট গঠন করা হয়েছে।
জোটের লক্ষ্য ও উদ্দেশে বলা হয়েছে, জোটগতভাবে জাতীয় নির্বাচনসহ সকল পর্যায়ের নির্বাচনে অংশগ্রহণ এবং জোটগতভাবে সরকার গঠন করে দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা, সমাজে ন্যায় বিচার ও সু-শাসন নিশ্চিত করা এবং উন্নয়নের ধারা প্রবর্তন করে সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা।
জোটের মৌলিক আদর্শে বলা হয়েছে, ইসলামী মূল্যবোধ তথা সকল ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রতি সমান চেতনা প্রদর্শন, স্বাধীনতার চেতনা এবং বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক জীবনবোধ নিশ্চিত করা।
সংবাদ সম্মেলনে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ বলেন, ‘রাজনৈতিক নীতি ও অদর্শের দিক থেকে আমরা সবাই স্বাধীনতার চেতনা, ইসলামী মূল্যবেধ তথা সব ধর্মের প্রতি সম্মান দেখানো, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ আদর্শের অনুসারী এবং ধারক ও বাহক। এই জোটে কোনও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির জায়গা হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘সম্মিলিত জাতীয় জোটের সব দল ও শরীক জোট সমান মর্যাদা নিয়ে অবস্থান করবে। শরীকদল বা শরীক জোটের চেয়ারম্যানগণ নতুন এ জোটের শীর্ষনেতা হিসেবে সম্মানিত হবেন। জোটের চেয়ারম্যান শরীক দল ও শরীক জোটের শীর্ষ নেতাদের পরামর্শে সিদ্ধান্ত নেবেন।’
এরশাদ বলেন, ‘প্রথম পর্যায়ে জোট গঠনের পর অন্য কোনও দল এই জোটে অন্তর্ভুক্ত হতে আগ্রহ প্রকাশ করলে, সেক্ষেত্রে জোটের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। দল ও জোটের প্রধানগণ সম্মিলিত জাতীয় জোটের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য থাকবেন। জোটের চেয়ারম্যান সভা আহ্বান করে জোটের সিদ্ধান্তগুলো স্টিয়ারিং কমিটিকে অবহিত করবেন। েএছাড়া জোটের একটি লিয়াজো কমিটি থাকবে।’
জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার জোটের প্রধান মূখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বলেও জানান এরশাদ।
জোট নির্বাচনি ফলাফল মেনে নেবে উল্লেখ করে এরশাদ বলেন, ‘ফলাফল যাই হোক না কেন- জোট নির্বাচনি ফলাফল মেনে নেবে এবং জোট বহাল থাকবে। জোটের স্থায়ীত্বের জন্য রাজনৈতিক বিপদ-আপদে, সুদিন-দুর্দিনে শরীকরা একে অপরের পাশে থাকবে। আমাদের অঙ্গীকার থাকবে নীতিমালা লঙ্ঘন করে বা স্বার্থের বশবর্তী হয়ে কেউ জোট ছাড়বো না।’
পাঠকের মতামত: