ঢাকা,মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪

১২৮ এমপি থেকে বাদ দেওয়ার তালিকা করছে আ.লীগ

aligঅনলাইন ডেস্ক :::

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন ১৫১ জন সংসদ সদস্য (এমপি)। এরমধ্যে ১২৮ জনই ছিলেন আওয়ামী লীগের। বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতরা নিজেদের ভাগ্যবান মনে করলেও এবার তাদের কপাল পোড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই তালিকা থেকেই বেশির ভাগ এমপিকেই বাদ দেওয়ার চিন্তা করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটির শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক নেতা এমন আভাস দিয়েছেন।
সূত্রমতে, ২০১৪ সালে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক না হওয়ায় এমপি হলেও নির্বাচনের অভিজ্ঞতা তাদের হয়নি। ফলে তাদের ক্ষেত্রে এবার বিকল্প চিন্তা করছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হসিনা।

তিনি মনে করেন, আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে। প্রার্থীই হবেন এই নির্বাচনের মূল বিষয়। তাই নির্বাচনী কৌশল জানেন, নির্বাচন করার অতীত অভিজ্ঞতা রয়েছে, তারাই প্রাধান্য পাবেন দলীয় মনোনয়নে। তবে নির্বাচন করার অভিজ্ঞতা থাকলেও এমপি হয়ে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে বারবার যাদের নাম এসেছে, তারাও মনোয়ন পাবেন না। বিশেষ করে নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করা এমপিদের এবার একেবারেই ছাড় দেবেন না শেখ হাসিনা। বাদের তালিকায় থাকবেন তারাও।

এদিকে, বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েও যারা রাজনীতিতে ভাল করেছেন, জনসেবায় নিবেদিত ছিলেন, এমপি হিসেবে এলাকায় জনপ্রিয়; তারা আবারও মনোনয়ন পাবেন বলে দলটির নীতি-নির্ধারণী সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে।

সূত্রগুলো জানিয়েছে, অতীতে নির্বাচন করার অভিজ্ঞতা যাদের নেই, তাদের আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়ার ব্যাপারে নেতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। যারা ২০০৮ সালের নির্বাচনে মনোনয়ন পেয়েছেন এবং এর আগের নির্বাচনগুলোতেও মনোনয়ন পেয়েছেন, রাজনীতির সঙ্গে জড়িত আছেন ও শারীরিকভাবে সুস্থ্যও আছেন, তাদের মনোনয়ন দেওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব রয়েছে তার।

উল্লেখ্য, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ১৫১ এমপির মধ্যে ১২৮ জনই ছিল আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থী। আওয়ামী লীগের দুই সভাপতিমণ্ডলী ও দুই সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, সর্বশেষ দলের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা দুই ধরণের নেতাদের মনোনয়ন না দেওয়ার ব্যাপারে তার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। এরমধ্যে এক ধরণের রয়েছেন, যারা এমপি হওয়ার পরে নেতা-কর্মী বেষ্টিত না থেকে নেতা-কর্মী বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছেন। দ্বিতীয়ত, যারা ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি নির্বাচিত হয়েছেন তারা। নির্বাচন করে এমপি না হওয়ার ফলে নির্বাচনের কৌশল তাদের জানা নেই। তবে এদের মধ্য থেকে যারা অবিশ্বাস্য রকম ভাল করেছেন, নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেছেন, এলাকার উন্নয়নে নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী খোঁজ-খবর রেখেছেন, তাদের ক্ষেত্রে ইতিবাচক চিন্তা রয়েছে আওয়ামী লীগ সভাপতির।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রত্যেক নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পরিবর্তন ঘটে। এবারও কেউ বাদ যাবেন, কেউ নতুন আসবেন। এটাই নিয়ম।

তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটা বড় দল এখানে অনেকেই যোগ্য রয়েছেন। তাই প্রার্থী বদল করে দেওয়া হয়। তবে মনোনয়ন কাকে দেওয়া হবে না হবে, সেটার পুরো এখতিয়ার আওয়ামী লীগ মনোনয়ন বোর্ডের। এ বিষয়ে চূড়ান্ত করে এখন কিছু বলা যাবে না।’

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য কাজী জাফরউল্যাহ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নে বড় ধরনের রদবদল আসবে। বেশ কিছু ‘ক্যাটাগরি’ নির্ধারণ করে এবার মনোনয়ন দেওয়া হবে।’

পাঠকের মতামত: