ঢাকা,মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪

সুন্দরবনের জন্যই দেশ টিকে আছে : প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক ::181906_0

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সুন্দরবন যে আমাদের একটা ঐতিহ্য, শুধু তা-ই নয়, এই সুন্দরবনের কারণেই কিন্তু বাংলাদেশ টিকে আছে। এই সুন্দরবন আরও যাতে বৃদ্ধি পায়, সে জন্য আমরা কৃত্রিম ম্যানগ্রোভ সৃষ্টির উদ্যোগ নিয়েছি এবং সমগ্র উপকূলীয় অঞ্চলে এর বিস্তৃতি ঘটানোর জন্য ইতিমধ্যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বিভিন্ন পদক্ষেপও আমরা নিয়েছি এবং বন অপরাধ দমনের জন্য স্মার্ট পেট্রোলিংয়ের ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে।

রোববার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান এবং পরিবেশ মেলা ও বৃক্ষমেলা ২০১৭ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুন্দরবনের যেন কোনো ক্ষতি না হয় সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিয়ে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন,  ১৯৯৭ সালে আমি যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলাম তখন সুন্দরবনের একটি এলাকাকে ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ এলাকা হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিলাম এবং সেটাকে সংরক্ষণ করে যাচ্ছি। এ বনের ওপর নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকার জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এতে বৃক্ষ নিধন কমবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আধুনিকায়নের যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে পরিবেশ যেন নষ্ট না করি, প্রতিবেশ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে দিকেও বিশেষভাবে নজরে রেখে উন্নয়নের পরিকল্পনা হাতে নিতে হবে। আর সেদিকে সরকার বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখছে।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, খাদ্য উৎপাদন করতে গিয়ে অতিরিক্ত মাত্রায় রাসায়নিক সার বা কীটনাশকের ব্যবহার ক্ষতিকর প্রমাণ হয়েছে। আবার নগরায়ন করতে গিয়ে অনেক সময় বনকে গ্রাস করা হচ্ছে। তবে গ্রামে যারা বাস করে তারাও যেন নাগরিক সুবিধা পাক-  সেটাও যেমন সরকার চায় তেমনি প্রাকৃতিক ভারসাম্য যেন বজায় থাকে সে দিকেও সরকার বিশেষভাবে দৃষ্টি দিচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেনশিল্প মালিকরা ইটিপি ব্যবহার করতে চায় না, যদি আমরা পরিদর্শনে পাঠাই তখন কেবল ব্যবহার হয়। এজন্য আমরা সেন্ট্রালি তৈরি করে সবাইকে বাধ্যতামূলক করে দিচ্ছি যেন এগুলো ব্যবহার করা হয়। ঢাকার চার নদী কীভাবে দূষণমুক্ত করা যায় সরকার সে পদক্ষেপ নিয়েছে। যে এলাকা বাসস্থান থেকে শিল্পায়ন হয়ে গড়ে উঠছে সেখানে বর্জ্য নিষ্কাষণ ব্যবস্থা যেন আধুনিক পদ্ধতিতে হয় তা নিয়ে আমরা যথাযথ নির্দেশনা দিচ্ছি এবং এটা যেন আরো ভালোভাবে কার্যকর হয় সে পদক্ষেপ আমরা নেব।

শেখ হাসিনা বলেন, শিল্পায়নের জন্য সরকার যে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছে। যেখানে সেখানে জমি কিনেই একটা শিল্প প্রতিষ্ঠা করবে আর আমাদের পরিবেশ নষ্ট হবে, সেটা যেন না হয় সে দিকে লক্ষ্য রেখে আমাদের পদক্ষেপ নিতে হয়।

তিনি আরো বলেন, আমাদের শিল্পায়ন হবে, কর্মসংস্থান হবে, উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে, অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী হবে, অর্থনীতি আরো সমৃদ্ধ হবে। আবার পরিবেশটাও যেন ঠিক থাকে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব ইশতিয়াক আহমেদ, পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক রইসুল আলম মণ্ডল এবং প্রধান বন সংরক্ষণ কর্মকর্তা সাইফুল আলম চৌধুরী প্রমুখ।

পাঠকের মতামত: