ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

সাতকানিয়ার ১৮ বিদ্রোহী প্রার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার

সাতকানিয়া সংবাদদাতা ::  চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার ১৬টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অনুরোধ-হুঁশিয়ারির পরও বশে আনা যায়নি আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের। চারটি ইউনিয়নে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেলেও উপজেলার বাজালিয়া ও চরতী ইউনিয়নে দলীয় প্রার্থীদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় বিদ্রোহী প্রার্থী। বশ না মানায় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাদের দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ। একইসঙ্গে তাদের প্রচার-প্রচারণায় যারা অংশ নেবেন তাদের বিরুদ্ধেও দলীয় ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে। এছাড়া বিদ্রোহী স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সুপারিশ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।

বুধবার (২৬ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় সভায় সভাপতিত্ব করেন সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ এমপি।

বহিষ্কার হওয়া বিদ্রোহী প্রার্থীরা হলেন, চরতীতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মাঈনুদ্দিন চৌধুরী, নলুয়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সহ-মহিলা বিষয়ক সম্পাদক তসলিমা আবছার, উপজেলা কৃষকলীগের সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান, কাঞ্চনায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য মোহাম্মদ ছালাম, আমিলাইশে বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এইচ এম হানিফ, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি এস এম হারুন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সদস্য মোজাম্মেল হক চৌধুরী, ঢেমশায় সাতকানিয়া উপজেলা কৃষক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ, পশ্চিম ঢেমশায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সদস্য আব্দুল মাবুদ সেন্টু ও মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রিদোয়ানুল ইসলাম সুমন, কালিয়াইশে যুবলীগ নেতা ফেরদৌস চৌধুরী সোহেল ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সদস্য এডভোকেট আতাউর রহমান, ধর্মপুরে বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াস চৌধুরী, বাজালিয়ায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ চৌধুরী, ছদাহায় কক্সবাজার পৌরসভা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ছদাহা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রফিক মাহমুদ, সোনাকানিয়ায় উপজেলা যুবলীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সেলিম উদ্দিন চৌধুরী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মাষ্টার আবু তাহের।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দীন চৌধুরী বলেন, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন পর্যন্ত দলের পক্ষ থেকে আমরা বিদ্রোহীদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলাম। অনুরোধ করেছি যাতে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়ে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করে। কিন্তু কেউ কথা রেখেছেন, কেউ রাখেন নি। তাদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় ঘোষণা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তে তাদের সাময়িক বহিষ্কার করে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রে সুপারিশ পাঠানো হচ্ছে। এছাড়াও নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে যে সকল নেতা কাজ করছেন বা প্রচার-প্রচারনায় অংশগ্রহণ করছেন তাদের বিরুদ্ধেও সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এরআগে গত ২২ জানুয়ারি বিকেল ৫টার মধ্যে বিদ্রোহী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়ে গত ১৬ জানুয়ারি উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে চিঠি দেন সভাপতি এম এ মোতালেব সিআইপি ও সাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দীন চৌধুরী। নইলে তাদের দলীয় পদ বাতিলসহ দলের প্রাথমিক সদস্যপদ স্থগিত করারও হুঁশিয়ারি দেন তারা। এরপর ১৮ জানুয়ারি রাতে নিজের ফেসবুক ওয়ালে একটি প্রেসবিজ্ঞপ্তি জুড়ে একই হুঁশিয়ারি দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দীন চৌধুরী।

প্রসঙ্গত সপ্তম ধাপে ৭ ফেব্রুয়ারি সাতকানিয়ার এওচিয়া ইউনিয়ন বাদে ১৬টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

পাঠকের মতামত: