নিজস্ব প্রতিবেদক :: পতনের মধ্যেও গত সপ্তাহে হাজার কোটি টাকার ওপরে বাজার মূলধন বেড়েছে দেশের প্রধান শেয়ার বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই)। গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেনশেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়ায় চার লাখ ৬৬ হাজার ৯৫৫ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল চার লাখ ৬৫ হাজার ৬৫৮ কোটি টাকা। এক সপ্তাহে বেড়েছে এক হাজার ২৯৭ কোটি টাকা।
অপরদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সপ্তাহের শেষ দিন সিএসই এর বাজার মূলধন ছিল ৩৯২,৫০৬.৫৬ কোটি টাকা। গত বৃহস্পতিবার গত সপ্তাহের শেষ দিন বাজার মূলধন দাঁড়ায় ৩৯৩,০৪৫.১৮ কোটি টাকা। বাজার মূলধন বেড়েছে ৫৩৯ কোটি টাকা। তবে গত সপ্তাহে তিন দিন বন্ধ ছিল। বাজার খোলা ছিল চারদিন।
এদিকে, ডিএসই’তে আগের সপ্তাহে বাজার মূলধন কমে চার হাজার ৫২ কোটি টাকা। তার আগের চার সপ্তাহে কমে ৯ হাজার ৫৯৪ কোটি টাকা, চার হাজার ৭০৮ কোটি টাকা, আট হাজার ২৭৭ কোটি টাকা এবং ৯ হাজার ৪২০ কোটি টাকা। এ হিসাবে টানা পাঁচ সপ্তাহের পতনে ডিএসই ৩৬ হাজার ৫১ কোটি টাকা বাজার মূলধন হারানোর পর এক হাজার ২৯৭ কোটি টাকা বাড়ল।
বাজার মূলধন হাজার কোটি টাকার ওপরে বাড়লেও গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে কমেছে সবকটি মূল্য সূচক। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। গেল সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক কমেছে ১ শতাংশের ওপরে। আর লেনদেন কমেছে ৩৪ শতাংশের ওপরে। এদিকে গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৫৯ দশমিক ৬০ পয়েন্ট বা ১ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৯ দশমিক শূন্য ৩ পয়েন্ট বা দশমিক ১৬ শতাংশ। তার আগের চার সপ্তাহে কমে ১৬২ দশমিক ৬৫ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৮৮ শতাংশ, ৭৬ দশমিক ৬৯ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৩৪ শতাংশ, ১১১ দশমিক ৮২ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৯২ শতাংশ এবং ৭৩ দশমিক ১৩ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ২৪ শতাংশ। অর্থাৎ ছয় সপ্তাহের টানা পতনে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক কমেছে ৪৯৩ পয়েন্ট।
প্রধান মূল্য সূচকরে পাশাপাশি টানা ছয় সপ্তাহ পতন হয়েছে ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচকের। গত সপ্তাহজুড়ে সূচকটি কমেছে ৩৯ দশমিক ৭৮ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৮৯ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এই সূচকটি কমে ৫ দশমিক ১২ পয়েন্ট বা দশমিক ২৪ শতাংশ। তার আগের চার সপ্তাহে কমে ৬৩ দশমিক শূন্য ৪ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৯০ শতাংশ, ১৭ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট বা দশমিক ৮০ শতাংশ, ১৭ দশমিক ২৪ পয়েন্ট বা দশমিক ৭৮ শতাংশ এবং ২৮ দশমিক ৩৩ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ২৭ শতাংশ।
অপরদিকে ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ধসঢ়; সূচকও টানা চার সপ্তাহ পতনের পর গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে কিছুটা বেড়েছিল। কিন্তু গত সপ্তাহে এই সূচকটি আবার পতনের মধ্যে পড়ে। গেল সপ্তাহে সূচকটি কমেছে ১৬ দশমিক ৬১ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৩৪ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৬ দশমিক ১৬ পয়েন্ট বা দশমিক ৫০ শতাংশ। তার আগের চার সপ্তাহে ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত এই সূচকটি কমে ২৪ দশমিক ৯৭ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ, ১৯ দশমিক শূন্য ৯ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৪৯ শতাংশ, ১৪ দশমিক ২৫ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ১০ শতাংশ এবং ২৮ দশমিক ৮৬ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ১৮ শতাংশ।
সবকটি মূল্য সূচকের বড় পতন হলেও গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন অংশ নেয়া যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, কমেছে প্রায় তার সমান সংখ্যক।
সপ্তাহের শেষ দিবস গত বৃহস্পতিবার সিএসই’তে লেনদেন হয়েছে ২৫.৫৬ কোটি টাকা। মোট ৯,৮৬০টি লেনদেনের মাধ্যমে ৭৪.৭২ লা শেয়ার হাতবদল হয়েছে। প্রধান ইনডেক্স সিএসই সার্বিক শেয়ার মূল্যসূচক ৬০.০০ পয়েন্ট বেড়ে দাড়ায় ১৫৬৫০.৬০ পয়েন্টে। সিএসই-৫০ সূচক ২.৭৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১৯৪.৩৭ তে। এছাড়াও সিএসই শরিয়াহ ইনডেক্স ৬.৭৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৮৭.৮৫ তে। দিনশেষে সিএসই’র বাজার মূলধণের পরিমাণ দাড়িয়েছে ৩৯৩,০৪৫.১৮ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ দাড়ায় ৮০,৬৭৪.৯৬ কোটি টাকায়। সিএসই’তে ৩৪১ স্ক্রিপ্টের মধ্যে বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছে ২২০টির, এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৯৫টির, কমেছে ৬৪ টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৬১ টির।
পাঠকের মতামত: