বিশেষ সংবাদদাতা :: কক্সবাজার জেলা পরিষদের শাহ্পরীরদ্বীপ জেটিঘাটের ইজারার টাকা গায়েব হয়ে যাচ্ছে। গত ৫ মাসে এই ঘাটে ইজারার ১২ লাখ টাকা আত্মসাৎ হয়েছে। ৬ দফা ইজারা দরপত্র আহবান করে বারবার দরপত্র দাখিলকারীদের হয়রানী করে কৌশলে ইজারা দেয়া হয়নি। জেলা পরিষদের রেজাউল করিম নামের এক কর্মকর্তা জেলা পরিষদের ইজারার টাকা গায়েবের মূলহোতা বলে অভিযোগ রয়েছে। তার সাথে রয়েছে টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতা ও সালাউদ্দিন নামের জেলা পরিষদের এক ব্যাক্তি।
বর্তমানে রেজাউল ও ওই আওয়ামী লীগ নেতা মিলে গত ৫ মাসে শাহ্পরীরীদ্বীপের জেঠি ঘাটের টাকা আত্মসাৎ অব্যাহত রয়েছে। বিষয়টি ইতিমধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদুকে অভিযোগ করা হয়েছে। দুদুকের পক্ষে জেলা পরিষদের রেজাউলের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
টেকনাফ স্থল বন্দরের কাস্টমর্স এর হিসেবে এই বছরের এপ্রিল মাসে ৩৯৫৬ টি গরু এবং ১৯৭৮ টি মহিষ, মে মাসে ৫৫৪২টি গরু এবং ২৯৮১টি মহিষ, জুন মাসে ৬৬২০টি গরু এবং ৩৫৫৭টি মহিষ ও ৬ টি ছাগল, জুলাই মাসে ৬৭৪৪টি গরু এবং ৩৩৫১টি মহিষ এবং আগস্ট মাসে ২০১২টি গরু ও ৬১৬টি মহিষ শাহ্পরীরদ্বীপ ঘাট দিয়ে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে এসেছে।
কাস্টমর্সের হিসেবে ১৪২৬ বাংলা সনের শাহ্পরীরদ্বীপ ঘাট দিয়ে ৩৭৩৫৭ টি গরু মহিষ মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে এসেছে। প্রতিটি গরু বা মহিষ থেকে ৫০ টাকা করে করে মোট ১৮,৬৭,৮৫৯ টাকা শাহ্পরীরদ্বীপ ঘাট থেকে আদায় করেছে সালাউদ্দিন নামের জেলা পরিষদের এক ব্যাক্তি ও আওয়ামী লীগেরর ওই নেতা । ১৮ লাখ টাকা আদায় হলেও কক্সবাজার জেলা পরিষদের সোনালী ব্যাংকের ৩৩০০৯১৬ নাম্বার একাউন্টে জমা হয়েছে মাত্র ৬ লাখ টাকা। বাকি ১২ লাখ টাকা জেলা পরিষদের কর্মচারী রেজাউল ও ওই আওয়ামী লীগ নেতা আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই টাকার ভাগ জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী হিল্লোল বিশ্বাস ও আরেক কর্মচারী আমানউল্লাহর হাতেও যায় বলে জানা গেছে।
অথচ শাহ্পরীরদ্বীপ জেটির ৬ দফা দরপত আহবান করে জেলা পরিষদ। প্রতিবার বিভিন্ন ইজারাদার দরপত্র দাখিল করলেও নানা অযুহাতে তাদের হয়রানি করা হয়। বাধ্যহয়ে দরপত্র আহবানকারীরা তাদের দরপত্র প্রত্যাহার করে নেয়।
জানাগেছে, জেলা পরিষদের নিম্মমান সহকারী হলেও তিনি এখন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সচিবের পদ ব্যবহার করে আসছেন।
গত দুই বছর ধরে জেলা পরিষদের সেন্টমার্টিনের ডাকবাংলা রেজাউল সিন্ডিকেটের দখল করে ভাড়া দিয়ে লাখ লাখ টাকা আদায় করছেন। এই ডাকবাংলা থেকে গত দুই বছরে জেলা পরিষদের ফান্ডে কোন টাকা জমা হয়নি।
গত ১০ বছরে জেলা পরিষদের টাকা আত্মসাৎ করে রেজাউল কক্সবাজারে বিশাল জুয়েলারী দোকান, কলাতলিতে হোটেল আর আদর্শগ্রামে আলিশান বাড়ির করেছেন।
জেলা পরিষদের কর্মচারী সালাউদ্দিন বলেন, চেয়ারম্যানের সচিব রেজাউলের নির্দেশে তিনি সাবরং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সোনা আলীকে ঘাটের ইজারার টাকা তুলতে সহযোগীতা করেন। এই টাকা কি হয় বা কোথায় যায় তা তিনি জানেন না।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রেজাউল বলেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের নির্দেশে তার বন্ধু সোনা আলী ও জেলা পরিষদের কর্মচারী সালাউদ্দিন শাহ্পরীরদ্বীপের ঘাটের টাকা তুলেন। এই বিষয়ে তিনি মোটেও কিছু জানেন না
পাঠকের মতামত: