মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা :: লামায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার সদর ইউনিয়নের বৈল্ল্যারচর এলাকায় গত ১৩ জানুয়ারী শনিবার সকালে এই ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, উপজেলার সদর ইউনিয়নের বৈল্ল্যারচর এলাকার জনৈক জয়নাল আবেদীনের স্ত্রী রোকেয়া বেগম ও মো. শহিদুল ইসলামের স্ত্রী ফাতেমা বেগম ২৯৫নং লামা মৌজার ৪৯নং খতিয়ানের ২১৪৩ ও ২১৪৫ দাগের আন্দর ৯৯ শতক জায়গার মালিক। রোকেয়া ও ফাতেমা নিজ নামীয় জায়গা আবাদ করতে গেলে উক্ত ৪৯নং খতিয়ানের একাংশের মালিক মংলুইচিং মার্মা (মংনুচিং) তাদের জমিতে প্রবেশে বাধা দেয় এবং উপরে উল্লেখিত ২টি দাগের উপর লামা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের ৫জনকে (রোকেয়া বেগম, ফাতেমা বেগম, জয়নাল আবেদীন, মো. জসিম উদ্দিন ও মংএছা মার্মা) বিবাদী করে পিটিশন মামলা ৪৪/১৭, তারিখ ১৯.১২.১৭ইং দায়ের করে ১৪৪ ধারা জারি করেন। আদালত বিরোধীয় নালিশী ভূমিতে বর্ণিত মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত উভয় পক্ষকে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য উক্ত জায়গায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন।
এদিকে মংলুইচিং মার্মা আদালতে নিজে বাদী হয়ে ১৪৪ ধারা জারির মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে নিজেই গত ১৩ জানুয়ারী ২০১৭ইং শনিবার সকালে দলবল, দেশীয় অস্ত্র, লাঠিসোটা ও হালের মেশিন নিয়ে বিরোধীয় জমি চাষাবাদ করতে যায়। এই সময় জায়গার মালিক রোকেয়া ও ফাতেমা বেগম বিষয়টি লামা থানাকে অবহিত করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী মংলুইচিং মার্মা ও তার সঙ্গী আবু বক মার্মা, মংহ্লাচাই মার্মা, মংচাচা মার্মা, সুইহ্লামং মার্মা, মাইছু মার্মানী ও মাইক্যানু মার্মানীকে উঠিয়ে দেয়।
জায়গার মালিক রোকেয়া বেগম ও ফাতেমা বেগম বলেন, এই ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে মংলুইচিং মার্মা আমাদের দেখে নেবে ও পাহাড়ি সন্ত্রাসী দিয়ে হয়রাণী করবে বলে হুমকি প্রদান করেন। আমরা দূর্গম এলাকায় বসবাস করি। তারা যে কোন সময় আমাদের উপর হামলা ও নির্যাতন করতে পারে বলে আশংকা করছি। বিশেষ করে মংলুইচিং মার্মার সাথে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। ১৪৪ ধারা ভঙ্গ, হুমকি প্রদানের বিষয়টি আমরা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত ও লামা থানাকে অবহিত করেছি।
পিটিশন মামলা ৪৪/১৭ এর তদন্ত অফিসার লামা থানা পুলিশের এ.এস.আই মীর সিরাজুল ইসলাম বলেন, আদালতের নির্দেশে আমি সঙ্গীয় পুলিশ নিয়ে বিরোধীয় জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি করি। উভয় পক্ষকে জমিতে প্রবেশে নিষেধ করে আসি। গত ১৩ জানুয়ারী মংলুইচিং মার্মা দলবল নিয়ে আদেশ অমান্য করে জমিতে প্রবেশ করেছে। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের তুলে দেয়।
এবিষয়ে মংলুইচিং মার্মা বলেন, আমি আমার জায়গায় চাষাবাদ করতে গিয়েছি। কারো বাধা কেন শুনব। এই জায়গা আমার। আমরা মৃত ঞম্ব মার্মার ওয়ারিশ। আমাদের কাউকে না জানিয়ে তারা গোপনে চুরি করে উক্ত জায়গা ক্রয় করেছে।
নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সায়েদ ইকবাল বলেন, মামলার বিবাদীরা অবৈধ অনুপ্রবেশের বিষয়টি আমাকে জানায়। আমি তাদের উপজেলা নির্বাহী অফিসার ছুটি থেকে আসলে ঊনাকে অবহিত করতে পরামর্শ প্রদান করি। আপাতত পুলিশ শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কাজ করবে।
পাঠকের মতামত: