ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪

লামায় অসহায় পরিবারের উপর ভূমিদস্যুর হামলা

11মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি ঃ

বান্দরবানের লামা উপজেলার ৭নং ফাইতং ইউনিয়নের নোয়াপাড়ায় রাতের আঁধারে হামলা চালিয়ে বসবাড়ি ভাংচুর করেছে চকরিয়ার প্রভাবশালী মাহবুবুল হক সহ একটি সংঘবদ্ধ চক্র। এমনটাই অভিযোগ করেছে মৃত আমির হোসেন সিকদারের স্ত্রী, ছেলে ও স্থানীয়রা।

গত ২০ শে জুলাই রাতে মৃত আমির হোসেন সিকদারের নামীয় জায়গায় এ ঘটনা ঘটে। অভিযোগ উঠেছে গত কয়েক বছর যাবৎ কক্সবাজারের চকরিয়া থানার বাসিন্দা মাহবুবুল হক মৃত আমির হোসেন সিকদারের মৃত্যুর পর বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে জায়গাটি দখলে ব্যর্থ হওয়ায় একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে তার অসহায় পরিবারের উপর। কোন ভাবেই তাদের উচ্ছেদ করতে না পেরে রাতের আধারে পরিবারের উপর হামলা চালিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে রক্তাক্ত জখম করে ও তাদের বসবাসের দুটি ঘর ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়। এ সময় তারা বসভিটায় লাগানো শতাধিক গাছও কেটে দেয়।

স্থানীয়রা জানায়, মৃত আমির হোসেন সিকদারের পরিবারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল চকরিয়ার প্রভাবশালী মাহবুবুল হক এর সাথে। বিভিন্ন সময় মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেও জমি দখল করতে না পারায় রাতের আঁধারে একটি দল বসতবাড়ি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয় ও বাগানের গাছ কেটে দেয় ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে জখম করে পরিবারের অসহায় লোকজনকে। এ সময় তারা ফাঁকা গুলির শব্দও আমরা শুনতে পেয়েছি। তারা জানান, জমি দখল করতে না পেরে মাহবুবুল হকই করেছে এসকল সন্ত্রাসী কর্মকান্ড।

এ ব্যাপারে আমির হোসেনের স্ত্রী বলেন, আমার জায়গার কাগজপত্র সব ঠিক থাকার পরও জোর করে দখল করে নিতে চায় মাহবুবুল হক। সে আমার ছেলের নামে মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। নারী নির্যাতন মামলা দিচ্ছে। ঘরবাড়ি ভাংচুর করছে। আমরা অসহায় হওয়ায় কোন কিছু করতে পারছিনা। আমি প্রশাসনের কাছে এর বিচার চাই।

আমির হোসেন সিকদারের বড় ছেলে বলেন, আমাদের জায়গা নিয়ে বহিরাগত কিছু লোক জোর জবর দখল করে নিতে মারিয়া হয়ে উঠেছে। আমরা এখন কোন উপায় খুঁেজ পাচ্ছিনা। রাতের ১টার দিকে হঠাৎই ৩০/৪০জন সন্ত্রাসী এসে ঘরবাড়ি সব ভাংচুর করে ফেলেছে। এখানে লুটপাত ও ভাংচুর করে আমাদের তিন লক্ষ টাকার মত ক্ষতি করেছে। আমার ছোট ভাইকেও রক্তাক্ত জখম করেছে। তাকে আমরা চকরিয়া হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি।

৭নং ফাইতং ইউপির ৬নং ওয়ার্ড মেম্বার শহিদুল্লাহ মিল্টন বলেন, দীর্ঘ ১০-১৫ বছর ধরে সমস্যা চললেও আমরা জানি এটি মৃত আমির হোসেন সিকদারের নামীয় জায়গা। কিন্তু পাশেই চকরিয়ার মাহবুবুল হক এর জায়গা থাকায় তিনি এটিও দখল করে নিতে চায়। জমির লোভে পড়ে জায়গাটি জোর করে দখলের চেষ্ঠা চালাচ্ছেন তারা।

লামা উপজেলার ৭নং ফাইতং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শামসুল আলম বলেন, জায়গাটি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধের কারনে এর আগেও ভাংচুর হয়েছে। বিভিন্ন মামলাও রুজু হয়েছে। মাহবুবুল হক লোক তেমন সুবিধার না। আমরা অনেকবার চেষ্ঠা করেছি সমাধােেনর কিন্তু মাহবুবুল হক আমাদের কথা তোয়াক্কা করছেন না। কিছুদিন আগে তার ছোট ছেলের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন মামলা দিয়ে জেলে পাঠিয়েছে। আমরা জানি এগুলো সব মিথ্যা মামলা। তারপরও প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ তাদের সাথে পারছেনা। তবে এবারের ঘর ভাংচুরের কথা ও গাছ কাটার কথা আমি শুনেছি। না জেনে বলা ঠিক না যে কাজটি কে করেছে।

তবে এ ব্যাপারে অভিযুক্ত কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বাসিন্দা মাহবুবুল হক এর সাথে মুঠোফোনে (০১৮২২৪৯৪২৯৫) যোগাযোগের চেষ্ঠা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

পাঠকের মতামত: