ঢাকা,বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪

রামু থানার এসআই ফারুক বেপরোয়া, আতংকে সাধারণ জনগন

0001-300x150ডেস্ক  রিপোর্ট :::
রামু থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফারুকের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে হাজারো সাধারণ মানুষ। প্রতিনিয়ত নিরীহ লোকজনকে হয়রানি, সড়কে চলাচলত সিএনজি অটোরিক্সা, টমটম, মোটর সাইকেল থেকে নানা বাহানায় চাঁদা আদায়সহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। যোগদানের পর অল্প সময়ের মধ্যেই তার বিভিন্ন অপকর্ম ও বেপরোয়া আচরণে কারণে অনেক ক্ষেত্রে পুলিশের ভাবমুর্তি প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।
ইতোপূর্বে তার হাতে হয়রানির শিকার লোকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করে জানান, এসআই ফারুকের হাতে রামু থানা এবং থানার বাইরে প্রতিনিয়ত কোন না কোন মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছে। মামলার তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেন টাকার বিনিময়ে। তিনি কোন অভিযোগের তদন্তে গেলে বাদি পক্ষকে পুলিশের ‘তেল খরচ ও নাস্তা খরচ’ হিসেবে মোটা অংকের টাকা দিতে হয়। আবার টাকা পেলে বিবাদীর পক্ষে তদন্ত প্রতিবেদন তৈরী করেন মনের মাধুরী মিশিয়ে। তিনি বিভিন্ন মাদক স্পট থেকে নিয়মিত মাসোহারা নেন। সড়কে কোন সিএনজি অটোরিক্সা, ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা (টমটম), মোটার সাইকেল দেখলেই হামলে পড়েন। অবৈধভাবে উৎকোচ আদায় করতে না পারা পর্যন্ত চালককের সাথে দুর্ব্যবহার ও হেনস্তা করেন। গাড়ির প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের ছায়াকপি থাকলেও কোন ব্যাপার নয়। মূল কাগজপত্র কিংবা হেলমেট না পরার অজুহাতে চালকদের দাঁড় করিয়ে রাখেন ঘন্টার পর ঘন্টা। টাকা না দিলে প্রয়োজনে কাজপত্রের ছায়াকপি ছিঁড়ে গাড়ি থানায় নেওয়া হয়।
গতকাল রোববার দুপুর ১ টা ১৫ মিনিট। মোটর সাইকেলযোগে এসএসসি পরীক্ষার্থী ভাইকে রামু বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে আনতে যান সংবাদকর্মী মমতাজ আহমদ। পরীক্ষা কেন্দ্রের কাছাকাছি পৌঁছলে সেখানে হঠাৎ হাজির হন এসআই ফারুক। তিনি জানতে চান গাড়ির কাগজপত্র আছে কিনা। এসময় মমতাজ তার গাড়ির কাগজপত্রের ছায়াকপি দেখান। কিন্তু এসআই ফারুক ছায়াকপিগুলো প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলেন। বলেন, ‘মূল কপি লাগবে অথবা কিছু দেন।’
এসময় মমতাজ বিষয়টির মৌখিক প্রতিবাদ জানান এবং নিজেকে সংবাদকর্মী হিসেবে পরিচয় দেন। পরিচয় পেয়ে তেলে-বেগুনে চটে যান এসআই ফারুক। তিনি দম্ভোক্তি করে বলেন, ‘পুলিশের ক্ষমতা কি জানিস না, ডান্ডা মেরে বুঝিয়ে দেবো।’ তিনি পরে থানায় ফোন করে আরো কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে ডেকে এনে মোটর সাইকেলটি থানায় নিয়ে যান। প্রায় তিন ঘন্টা ধরে হয়রানির পর একপর্যায়ে চাপের মুখে মোটর সাইকেলটি ছেড়ে দেন এসআই ফারুক। এসময় তিনি মমতাজকে হুমকির সুরে বলেন, ‘আমি তোমাকে দেখে নেবো। কয়েকটি মামলায় ঢুকিয়ে দিলে তারপর বুঝবি পুলিশের ঠেলা।’
এছাড়া পরবর্তীতে মোটর সাইকেলটি ছেড়ে দেওয়ার সময় জোরপূর্বক মমতাজের কাছ থেকে একটি অঙ্গীকার নামা নেয় ওই এসআই ফারুক। মমতাজের উক্ত মোটর সাইকেলটির কাগজপত্রের ফটোকপি থাকার কথা তিনি জানা স্বত্বেও উক্ত অঙ্গীকার নামায় কাগজপত্র না থাকার কথা উল্লেখ করেন।
ফতেখাঁরকুল ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা গিয়াস উদ্দিন টিটুকে দিয়ে উক্ত অঙ্গীকার নামার বিপরীতে একটি জিম্মা নামায় দস্তখত নেন এসআই ফারুক।
জিম্মানামায় দস্তখতকারী গিয়াস উদ্দিন টিটু বলেন, আসলে এসআই ফারুক যেভাবে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছে তা একজন পুলিশের মুখে বেমানান।
এ ব্যাপারে এসআই ফারুকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বার বার মোবাইল ফোন কেটে দেওয়ায় তার বক্তব্য নেয়া যায় নি।
এ ব্যাপারে রামু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রভাষ চন্দ্র সাহা জানান, আমি ঘটনাটি শুনেছি। কিন্তু আমি প্রধানমন্ত্রীর সফর নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে সেদিকে খুব বেশি খেয়াল করতে পারি নি। কিন্তু আমি এসআই ফারুককে মোটর সাইকেলটি ছেড়ে দিতে বলেছিলাম।

পাঠকের মতামত: